পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইমিগ্রেশনে অবৈধ অভিবাসীদের উপচে পড়া ভিড়
শামসুল ইসলাম : মালয়েশিয়ায় অবৈধ কর্মীদের ই-কার্ড নিবন্ধনের (অস্থায়ী পাস) সময়সীমা আজ শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি বন্ধ থাকায় দেশটিতে নানাভাবে অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ক’বছর আগে জিটুজি প্রক্রিয়ায় স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে প্লানটেশন খাতে কর্মী যাওয়া শুরু হলেও তা’ মাত্র দশ হাজারে গিয়ে ঠেকে। বহু দেন-দরবারের পর গত ১১ মার্চ থেকে জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় দশ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চড়া অভিবাসন ব্যয়ে গত ২১ জুন পর্যন্ত ৮ হাজার ৩শ’ ১৮জন কর্মী মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থান লাভ করেছে। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, দেশটিতে অবস্থানরত পাঁচ থেকে ছয় লাখ অবৈধ কর্মীদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫৪১ জন নিয়োগকারীর মাধ্যমে ২ লাখ ৪০ হাজার ৮৯১ জন নিবন্ধন করেছে । নিবন্ধিত অবৈধ কর্মীদের মধ্যে বেশির ভাগই কনস্ট্রাকশন এবং সার্ভিস সেক্টরে ই-কার্ড নিবন্ধন করেছে। অবৈধ বিদেশী কর্মীদের বৈধতা লাভের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে মালয়েশিয়া সরকার চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ই-কার্ড নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করে এবং ৩০ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দেয়। এটি চলমান রি-হায়ারিং প্রোগ্রামেরই একটি অংশ। যাদের কোনো প্রকার কাগজপত্র নেই তাদেরকে ডকুমেন্ট প্রদানের লক্ষ্যে টেম্পোরারি পাস দেয়া হচ্ছে। ১ জুলাই থেকে যেসব অবৈধ কর্মী ই-কার্ড নিবন্ধনের বাইরে থাকবে তারা ধরা পড়লে জরিমানা দিয়ে দেশে ফিরে আসতে হবে। নিবন্ধন ঘোষণার পর অনেক অবৈধ কর্মী এবং নিয়োগকর্তারা ই-কার্ড প্রোগ্রামে নিবন্ধন করতে দেরি করেছে। ১ জুলাইয়ের পর কোনো কোম্পানিতে অবৈধ কর্মী ধরা পড়লে জন প্রতি ১০ হাজার রিংগিত জরিমানা করা হবে যদি কোনো দোষ পাওয়া যায় তাহলে তাদের আদালতে উঠানো হবে এবং অবৈধ কর্মীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। মালয়েশিয়ায় ই-কার্ড নিবন্ধনের শেষ সময়ে অবৈধ কর্মীদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পুত্রাযায়া ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে সকাল থেকে হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসীদের সমাগম দেখা গেছে। মালয়েশিয়া থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতু শ্রী হাজী মুস্তাফার আলী বলেছেন, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ই-কার্ড নিবন্ধন শেষ হচ্ছে শুক্রবার। অবৈধ কর্মী এবং নিয়োগকর্তারা ই-কার্ড প্রোগ্রামে নিবন্ধন করতে দেরি করেছেন। ১ জুলাইয়ের পর কোনো কোম্পানিতে অবৈধ কর্মী ধরা পড়লে জন প্রতি ১০ হাজার রিংগিত জরিমানা করা হবে এবং যদি কোনো দোষ পাওয়া যায় তাহলে তাদের আদালতে উঠানো হবে এবং অবৈধ কর্মীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, শেষ সময়ে অবৈধ কর্মীদের সুবিধার্থে সারাদেশে ইমিগ্রেশন বিভাগ ২৮ জুন থেকে ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত ই-কার্ড নিবন্ধনের কাজ করবে। এদিকে দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশিরা বৈধ হওয়ার জন্য মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বারবার আহŸান জানিয়ে আসছে। সেখানে কর্মরত অবৈধ বাংলাদেশিদের অবিলম্বে ই-কার্ড (টেম্পোরারি পাস) গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে আসছে দূতাবাসের কর্মকর্তারা। রি-হিয়ারিং এবং ই-কার্ড নিবন্ধনের আওতায় বৈধ হওয়ার লক্ষ্যে দূতাবাস মালয়েশিয়ার প্রত্যেকটি প্রদেশে মোবাইল ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে কন্স্যুলার সেবা দিয়ে আসছে।
সম্প্রতি পুত্রাজায়াস্থ মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক দাতু শ্রী হাজী মুস্তাফার আলীর সঙ্গে ই-র্কাড বিষয়ে এক সভা শেষে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হাই কমিশনার মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুরোধে মালয়েশিয়ান সরকার এই সুযোগটি দেন দেশটিতে বসবাসকারী কাগজপত্রহীন কর্মীদের বৈধ হওয়ার জন্য।
তিনি জানান, বৈধ কাগজপত্র পেতে মাইইজি’র অধীনে চলমান রি-হায়ারিং প্রকল্পে ১ লাখ ৮৮ হাজার বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশন করেছেন। আর অন্য সকল দেশ মিলিয়ে করেছে মাত্র ১০ হাজার। ‘যারা মেডিক্যাল আনফিট, যাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বা চলমান রয়েছে এবং যে সকল কর্মী বৈধভাবে কোন কর্মক্ষেত্রে কর্মরত ছিলেন কিন্তু তারা মালিকপক্ষকে অবহিত না করে পালিয়ে গেছেন। অফিস তার বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশনে অভিযোগ দাখিল করেছে’ এই তিন শ্রেণির কর্মীরা ই-র্কাড করতে পারবে না। ই-র্কাডর আওতায় আসতে বাংলাদেশিদের জোরালো আহŸান জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, আমরা সকলকে সচেতন করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন এলাকায় দূতাবাসের কন্সুলার টিম পাঠিয়েছি। ই-র্কাডধারীরা দ্রæত পাসপোর্ট করাতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাই কমিশনার বলেছিলেন, আগে স্বাভাবিকভাবে পাসপোর্ট আসলেও এখন থেকে আমরা ডিএইচএল’র মাধ্যমে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দ্রæত পাসপোর্ট নিয়ে আসবো। এবং তা দ্রæত গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেবো। হাইকমিশনের বাইরে দালালের উৎপাত কমাতে করণীয় সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা একটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলছি হাইকমিশনের অভ্যন্তরে কিংবা আশপাশে একটি বুথ করার ব্যাপারে। আশা করি আগামী কয়েকমাসের মধ্যে এ সকল সমস্যার সমাধান হবে। বিএনপি মালয়েশিয়া শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সালাহ উদ্দিন কুয়ালালামপুর থেকে ইনকিলাবকে বলেন, মালয়েমিয়া সরকার প্রবাসী অবৈধ কর্মীদের বৈধতা লাভে বার বার সুযোগ দিচ্ছে। কিন্ত প্রবাসী অবৈধ বাংঃলাদেশীরা দালালের উপর নির্ভরশীল। ই-কার্ড নিবন্ধন করতেও শত শত অবৈধ বাংলাদেশী প্রতারণার শিকার হচ্ছে। ই-কার্ড নিবন্ধন করে দেয়ার কথা বলে দালাল চক্র প্রত্যেক কর্মীর কাছ থেকে ৪/৫শ’ রিংগিট হাতিয়ে নিয়ে ই-কার্ড না করে প্রতারণা করছে। তিনি ই-কার্ড নিবন্ধন কার্যক্রমের সময় সূচি আরো ৬ মাস বর্ধিত করণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়া সরকারের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জাতীয় শ্রমিক লীগ মালয়েশিয়া শাখার সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাবুল ও সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ আলম হাওলাদারও মালয়েশিয়ায় ই-কার্ড নিবন্ধনের বাইরে থেকে যাওয়া হাজার হাজার অবৈধ বাংলাদেশীদের বৈধতা লাভের সুযোগ কাজে লাগাতে ই-র্কাডের নি বন্ধনের সময় বর্ধিতকরণে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।