পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : এবার থামেন, ১০ বছর তো অনেক দুর্নীতি, লুটপাট করেছেন, গুম করেছেন। দেশ বাঁচাতে এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন-বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি প্রধান বলেন, মুসলমানদেন জন্য ঈদ অত্যন্ত আনন্দের।
ঈদে আমাদের কারো মধ্যে আনন্দ নেই, সারা বাংলাদেশের মানুষের মনে কোনো আনন্দ নেই। কোনো উৎসবমুখর পরিবেশ এবার ছিলো না। কারণ সারাদেশে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে এই বছরে। সকলেই শোক-দুঃখ-ব্যথা-বেদনা নিয়ে ভারাক্রান্ত মনে এই ঈদ উদযাপন করছে। তিনি আরো বলেন, রমজান মাসে চালের দাম সর্বকালে সবচেয়ে বেশি রেকর্ড পরিমান। এই বছর এতো বেশি চালের দাম, নিন্ম মানের চালের দাম যে সাধারণ গরীব মানুষ দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারেনি। প্রতিটি জিনিসের দাম অতিরিক্ত বেশি। তারপরে আছে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এই অবস্থার ঈদ কতটুকু কাকে আনন্দ দিতে পেরেছে? পারেনি।
গত সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। ঈদের দিন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে কূটনীতিক, বিশিষ্ট নাগরিক-পেশাজীবী এবং দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এর আগে ১২টা ২৬ মিনিটে এই মিলনায়তনে আসেন খালেদা জিয়া। এই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হয় বিভিন্ন দেশের কুটনীতিক ও সর্বস্তরের নাগরিকরা আসেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাসির্য়া স্টিফেন্স বুম বানির্কাট, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালিসন বেক, ভ্যাটিকেন সিটির রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদনসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা বেগম জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে খালেদার পাশে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। কুটনীতিকদের সেমাই-জর্দা-মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
খালেদা জিয়া হালকা নীলরঙের ওপর বিভিন্ন কাজ করা একটি শাড়ি পরে মিলনায়তনে আসেন। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে আসা নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে খালেদা জিয়া চেয়ারে বসলেও দলের সিনিয়র নেতারা তার পাশে দাঁড়িয়ে থেকেই নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেন, গত ১০ বছরে অনেক করেছেন। গুম, খুন করেছেন। আল্লাহর কাছে বিচার হবে। এবার থামেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। দেশের অর্থনেতিক বৈষম্যের কথা উচ্চারণ করে খালেদা জিয়া বলেন, একশ্রেণির বিত্তশালীরা বিদেশে গিয়ে মার্কেট করছে। আরেক শ্রেণি দুর্যোগের মধ্যে পড়ে আছে। দেশের মানুষ তো এখন ব্যাংকে টাকা রাখে না। কিন্তু যারা টাকা লুটপাট করেছে তাদের টাকা তো বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।
দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে এমন অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, হাওরে এই ঈদের সময় দুর্ভিক্ষ চলছে। তারা একবেলাও খেতে পারছে না। বিশেষ করে হাওড়ের আগাম বন্যায় সেখানে বিপর্যয় এসেছে। খালেদা জিয়া বলেন, তারা হাওরের খোঁজ নিচ্ছে না। পাহাড় ধস হলেও সেখানে হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ দেয়া যেতে পারতো, কিন্তু তারা তা করেনি। খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় নিয়েও কথা বলেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
এসময় ঢাবি‘র সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক মাহবুবউলাহ, অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক সদরুল আমিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, ড্যাব মহাসচিব ডা. এ জেট এম জাহিদ হোসেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খানসহ বিভিন্ন পেশার নেতৃবৃন্দ ছিলেন। অনুষ্ঠানে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে জেবেল রহমান গাণি, শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। লাইনে দাঁড়িয়েও অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। লাইন মিলনায়তনের বাইরেও চলে যায়।
বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন শাহজাহান ওমর, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উলাহ আমান, আবদুল মান্নান, আবদুল কাইয়ুম, তৈমুর আলম খন্দকার, ইসমাইল জবিউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, হারুনুর রশীদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সানাউলাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আমিনুল হক, ফাওয়াজ হোসেন শুভ, নাজিমউদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, আনোয়ার হোস্ইান, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, মহানগর দক্ষিনের কাজী আবুল বাশার, উত্তরের আহসানউলাহ হাসান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ব্যক্তিগত সচিব আবদুস সাত্তার, প্রেস উইংয়ের শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদারসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খালেদা জিয়াকে ঈদ শুভেচ্ছা জানান।
জিয়া ও কোকোর কবর জিয়ারত : ঈদের শুভেচ্ছা বিনিয়ম শেষে খালেদা জিয়া প্রথমে শেরে বাংলা নগরে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও পরে বনানীতে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।