Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংসদে তথ্যমন্ত্রী দেশে সুশাসন দরকার

| প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : দেশে সুশাসন দরকার বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগুতে হলে দরকার হবে সুশাসন। সুশাসন থাকলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বেড়ে যাবে। আর ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়লে দেশের অর্থনীতি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশে সুশাসন নিশ্চিত করবেন। এটা দুর্নীতি কমাবে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।  
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় গণমাধ্যমের বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রস্তাবিত বাজেটে সংবাদপত্র শিল্পের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের আহবান জানান ইনু। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি। এখন দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকের টাকা ও এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে বেগম খালেদা জিয়ার মতো অপরাধীরা জামিন পেয়ে আদালত থেকে বিজয়ের চিহ্ন দেখিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসে।
এটা জাতির জন্য লজ্জার বিষয়। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অর্থমন্ত্রী সফল দাবি করে জাসদের এই নেতা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার সুদুর প্রসারী প্রভাব পড়বে। জ্বালানি শক্তি বৃদ্ধির জন্য যথার্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। এর আগের সামরিক সরকারগুলো দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে মনোযোগ দেয়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সেই অন্ধকার থেকে জাতিকে আলোতে নিয়ে এসেছেন। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বাজেটের দুর্বলতার বিষয়গুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি রাজস্ব কম হচ্ছে, সমবায় অবহেলিত, হাওরের গুরুত্ব দিলেও চরাঞ্চল, বিল ও পাহাড়ের গুরুত্ব একটু কম দেয়া হচ্ছে, ব্যাংকের লুটপাট অব্যাহত রয়েছে, দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তিনি আবগারি শুল্কের ক্ষেত্রে পূর্বের অবস্থা বহাল না করে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানত আবগারি শুল্কমুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন এবং সঞ্চয়পত্রের সুদের হার পুনর্বিবেচনারও আহŸান জানান।  
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে জঙ্গি ও জঙ্গির সঙ্গীকে ক্ষমতার বাইরে রাখা। অর্থনৈতিক যুদ্ধ হচ্ছে সমৃদ্ধি অর্জনের যুদ্ধ। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করার যুদ্ধ। এই দুই যুদ্ধের মধ্যেই অর্থমন্ত্রী বাজেট দিয়েছেন। এই বাজেটকে যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেখে বিশ্লেষণ করা উচিত। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাজেটে দারিদ্র্য কমেছে, মধ্যবিত্তের সংখ্যা বেড়েছে, লাখপতি ও কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে, মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৬০২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
৭ বছরে ৭ শতাধিক পত্রিকার নিবন্ধন
এদিকে গতকার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এমপিদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী। সরকারি দলের সদস্য বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত ৭ বছরে ৭ শতাধিক পত্রিকার নিবন্ধন প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৩১টি স্যাটেলাইট চ্যানেল, ২৪টি এফ, এম বেতার এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিও’র অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সরকারি ৩টি টেলিভিশন চ্যানেল, ২১টি এফ, এম বেতার এবং ১৭টি কমিউনিটি রেডিও স¤প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকার ‘জাতীয় স¤প্রচার নীতিমালা, ২০১৪’ প্রণয়ন করেছে। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা ও উৎকর্ষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট গত ৭ বছরে ১৬ হাজার ১ জন সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট একই সময়ে ২ হাজার ২৫৫ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এসময় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য একটি দায়বদ্ধ ‘স¤প্রচার কমিশন’ গঠনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ‘স¤প্রচার আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার চূড়ান্ত পরিমার্জন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
একই প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে দুস্থ ও অসুস্থ সাংবাদিকদের অনুকূলে বিগত পাঁচ বছরে ৮১৯ জনকে  ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘সাংবাদিক সহায়তা ভাতা বা অনুদান নীতিমালা-২০১২’ এর আওতায় ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬১ জন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৮৫ জন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৯৬ জন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৮১ জন দুস্থ, অস্বচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে যথাক্রমে ৫০ লাখ, ১ কোটি, ১ কোটি ১০ লাখ, ১ কোটি ২০ লাখ টাকার আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করেছে। এছাড়া সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় প্রথমবারের মতো ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৯৬ জন দুস্থ, অস্বচ্ছল, দুর্ঘটনায় আহত ও মৃত সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে। আর ট্রাস্টের নিজস্ব তহবিল সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ৫ কোটি টাকার ‘সীডমানি’ প্রদান করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংসদ

১৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ