পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ.কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী : কুরআনুল কারীমের ৯৭তম সূরা হচ্ছে সূরা কাদর। এই সূরায় মোট ৫টি আয়াত আছে। এতে একটি রুকু আছে এবং এই সূরাটি নাযিল হয়েছে মক্কায়। এই সূরায় ৩১টি শব্দ রয়েছে এবং এর অক্ষর সংখ্যা ১১৬। সূরাটির বাংলা অনুবাদ এই : দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ‘(১) আমি ইহা (আলকুরআন) এক মহিমান্বিত রজনীতে অবতীর্ণ করেছি। (অর্থাৎ কাদর-এর রাত্রিতে আল কুরআনকে লাওহে মাহফুজ হতে প্রথম আকাশের বাইতুল ইজ্জতে নাযিল করা হয়)। (২) আর (হে মোহাম্মাদ (সা:) তুমি কি জান মহিমান্বিত রজনী কি? (৩) মহিমান্বিত রজনী হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। (৪) সে রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও জিব্রাঈল ফিরিশতা প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতি পালকের অনুমতিক্রমে অবতীর্ণ হয়। (৫) সেই রজনী শান্তিই শান্তি, উহার আবির্ভাব পর্যন্ত।”
মহান রাব্বুল আলামীন কুরআনুল মাজীদ অবতীর্ণ হওয়া সম্পর্কে আল কুরআনে দুইটি শব্দ ব্যবহার করেছেন। এক : আন্্যালনা’ এবং দুই : নায্যালনা। আনযালনা বলতে ষোল আনা কুরআন শরীফ একসঙ্গে নাযিল হওয়া বুঝায়। এক সঙ্গে ষোল আনা কুরআনুল কারীম দুইবার নাযিল হয়েছে। প্রথমবার লাইলাতুল মুবারাকা অর্থাৎ শবে বরাতের রাতে আল্লাহ পাকের এলেমের ভান্ডার হতে লাওহে মাহফুজে। দ্বিতীয়বার কাদরের রাতে লাওহে মাহফুজ হতে প্রথম আকাশের বাইতুল ইজ্জতে।
আরনাযযালনা’ বলতে বারে বারে নাযিল হওয়া বুঝায়। এক সঙ্গে ষোলআনা কুরআন শরীফ নাযিল হওয়া নয়। নায্যালনা অর্থাৎ বারে বারে নাযিল কর্মটি শুরু হয় বাইতুল ইজ্জত হতে। কেননা, সেখান হতে প্রয়োজন অনুসারে অল্প অল্প করে দীর্ঘ ২৩ বছরে রাসূলুল্রাহ (সা:) এর নিকট কুরআন নাযিল করেছেন হযরত জিব্রাঈল (আ:) মক্কা এবং মদীনায়। ক্রমাগতভাবে অল্প অল্প করে কুরআনের আয়াত সমূহ মক্কা মুয়াজ্জমায় হাবীবে কিবরিয়া মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর নিকট নাযিল হয়েছে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে। তারপর তিনি মদীনায় হিজরত করেন। সেখানে অল্প অল্প করে তাঁর উপর কুরআন নাযিল হয়েছে দীর্ঘ ১০ বছর। মোটকথা, নায্যালনা কর্মটি পরিসমাপ্ত হয়েছে দীর্ঘ ২৩ বছরে। সুুতরাং কুরআনুল কারীমের নাযিল হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ আন্্যালনা এবং নায্্যালনা শব্দ দ্বয়ের অর্থ ও মর্ম অনুধাবন না করে ঢালাওভাবে মন্তব্য করা মোটেই সমীচীন নয়।
বস্তুুত : মুসনাদে আহমাদ ও তিবরানী গ্রন্থে সংকলিত হাদীস হতে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন : (১) হযরত ইব্রাহীম (আ:)-এর উপর সহীফা সমূহ রমজান মাসের প্রথম রাত্রিতে নাযিল হয়েছে। (২) তাওরাত কিতাব হযরত মূসা (আ:)-এর উপর নাযিল হয়েছে রমজান মাসের ছয় তারিখ দিবাগত রাতে। (৩) ইনঞ্জিল কিতাব হয়রত ঈসা (আ:)-এর উপর নাযিল হয়েছে রমজান মাসের তের তারিখে। (৪) আর কুরআনুল কারীমের নায্্যালনা অর্থাৎ বারে বারে নাযিল হওয়া কর্মটি শুরু হয়েছে মাহে রমজানের চব্বিশ তারিখ দিবাগত রাতে। যা মাহে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতের অন্তর্ভুক্ত। আর মাহে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর কোন একটিতেই নাইলাতুল কাদর হয়ে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।