পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপিকে দুর্বল করতেই দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে গুম ও খুন করেছে সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম-খুনের সঙ্গে র্যাব-পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা জড়িত দাবি করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, গুম-খুনে জড়িতদের কোনো দিন ক্ষমা করা হবে না। একদিন না একদিন তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে গুম-খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের স্বজনদের নিয়ে এক ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিগত দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের স্বজনদের ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
খালেদা জিয়া বলেন, তারা (সরকার) ভেবেছিল যে, বিএনপিকে শেষ করতে গেলে এসব ভালো ছেলেদেরকে শেষ করে ফেলতে হবে। তাহলে বিএনপি দূর্বল হবে। তারা আজীবন ধরে ক্ষমতায় থেকে এসব কর্মকান্ড চালিয়ে যাবেন। সেজন্য তারা এসব কাজগুলো করেছিলো ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। এর আগেও তারা (আওয়ামী লীগ) এসব করেছিলো, কিন্তু এরকম হয়নি। এবার ক্ষমতায় এসে যা করেছে তা অবর্ণনীয় ও অকল্পনীয়। আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় হলে নিখোঁজ হওয়া নেতা-কর্মীদের সন্ধান পাওয়া যাবে- এই আশাবাদ ব্যক্ত করে খালেদা জিয়া বলেন, আমরা এখনো আশা করি যে, তারা আছে এবং একদিন ফিরে আসবে। আপনারা দেখেছেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলেকেও ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কয়েক মাস পর তাকে তার বাড়ির কাছে ফেলে দিয়ে গেছে। এরকম আরেকজন হলো খোকন। আমি আশা করছি, জালেম অত্যাচারি সরকার বিদায় হলে তখন তাদের খোঁজ পাবো, তখন তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে। আমরা সেই আশায় আছি।
বিএনপি চেয়ারপারসন অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে বিএনপির আন্দোলন দমন করার জন্য সরকার গুম-খুন শুরু করেছিল। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে এলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ করার চেষ্টা করা হবে। যেসব র্যাব ও পুলিশের সদস্য এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো দিন ক্ষমা করা হবে না। তাদের বিচার বাংলার মাটিতে একদিন না একদিন হবে। গুম হওয়া ব্যক্তিরা ফেরত না এলেও, বিচার পেলে পরিবারের স্বজনেরা শান্তি পাবেন। তিনি আওয়ামী লীগকে ‘জালেম’, ‘খুনি’ ও ‘গুপ্তহত্যাকারী’ বলে অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়া বলেন,‘শিগগিরই দুনিয়াতেই যেন আওয়ামী লীগের বিচার হয়, মানুষ যেন তা দেখতে পায়।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘স্বজন হারানোর ব্যথা আমি বুঝি। আপনারা দেখেছেন আমার সন্তান হারিয়েছি। নিখোঁজ নেতা-কর্মীদের পরিবারের বেদনার সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, যারা হারিয়ে গেছে, তারা শুধু আপনাদের ছেলে নয়, আমাদেরও ছেলে। তাদের স্নেহ করতাম, ওরা দলের জন্য অনেক কষ্ট করেছে।
ইফতার পূর্ব আলোচনায় গুম-খুনের শিকার নেতা-কর্মীদের স্মরণ এবং তাদের জন্য দোয়া করা হয়। পরে দলের নিখোঁজ নেতা-কর্মীদের পরিবারের পরিবারের সদস্যদের হাতে শুভেচ্ছা উপহার হাতে তুলে দেন বিএনপি প্রধান।
অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্র দলের সদ্য নিহত নুরুল আলম নুরুর শিশু কন্যা উম্মে হাবিবা মীম, সেলিম রেজা পিন্টুর বোন রেহানা পারভীন মুন্নী, সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আখিঁ, নুরুজ্জামান জনির স্ত্রী মুনিয়া পারভীন, ৩ মাস ১৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর সন্ধান পাওয়া ছাত্র দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনও বক্তব্য রাখেন।
পরে মূল মঞ্চে দলের মহাসচিবসহ নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন, মাহবুব হাসান সুজনের মা রাশিদা বেগম, মো. জহিরের মা হোসনে আরা, এসএম আদনান চৌধুরীর বাবা রুহুল আমিন চৌধুরী, নাজমুলের স্ত্রী সাবিরা নাজমুল, সদ্য নিহত চট্টগ্রাম ছাত্রদল নেতা নুর আলম নুরুর স্ত্রী সুমী আখতারসহ নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।
ইফতারে নিখোঁজ ও হত্যাকান্ডে নিহত নেতা-কর্মী পরিবারের মধ্যে ছিলেন, বিএনপির চৌধুরী আলম, জাহিদুর করিম তানভীর, আলম হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মো. মাসুম, মো. শামীম, মাসুদ হোসেন, মারুফ শেখ, যুব দলের নুরে আলম, আফজাল হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনির, সেলিম শাহিন, মেহেদি আলম মাহাবি, স্বেচ্ছাসেবক দলের এম আদনান চৌধুরী, মো. কাউসার, শ্রমিক দলের ওয়াদুদ ব্যাপারী, ছাত্র দলের আসাদুজ্জামান রানা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল, মো. আল আমীন, মাহবুব হোসেন সুজন, সেলিম রেজা পিন্টু, স¤্রাট মোল্লা, কাজী ফরহাদ হোসেন, খালেদ হোসেন সোহেল, মো. সোহেল, মো. জহির, মো. পারভেজ হোসেন, মো. চঞ্চল, তরিকুল ইসলাম ঝন্টু, নিজামউদ্দিন মুন্না, তরিকুল ইসলাম তারা, মফিজুল ইসলাম রাশেদ, আবদুল কাদের ভুঁইয়া মাসুম, নুরুজ্জামান জনি, মাহবুবুর রহমান বাপ্পী, আমিনুল ইসলাম জাকির, মাসুদ রানা, মো. জিহাদুর রহমান, মো. রাহাত, মো. জসিম উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন, মেহেদি হাসান রাজু, এহসানুল হক খোকন, মিজানুর রহমান টিটু, আরিফুল ইসলাম মুকুল, সাইফুর রহমান সজীব, মো. হাসান, ইফতেখার আহমেদ দিনারের পরিবারের সদস্যগণ।
এছাড়া বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শরীফুল আলম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাইফুল আলম নিবর, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, কাজী আবুল বাশার, শায়রুল কবির খান প্রমূখ। রমজানে ইতোমধ্যে এতিম-উলামা-মাশায়েখ, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, বিএনপির নেতা-কর্মী, কুটনীতিকদের সম্মানে ৫টি ইফতার অনুষ্ঠান করেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে
পবিত্র ঈদুল ফিতরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এদিন দুপুর ১২টায় কূটনৈতিক, বিশিষ্ট নাগরিক, দলীয় নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে তিনি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। গতকাল চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন খালেদা জিয়া। পরে বনানীতে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করে নিজ বাসভবনে ফিরে যাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।