Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাকিস্তানের প্রতি কঠোর হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাতে রয়টার্সের প্রতিবেদন

| প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার অভিযোগ এনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তাদের অভিযোগ, আফগানিস্তানে হামলা পরিচালনাকারী জঙ্গিদের জন্য সেইফ হ্যাভেন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে আছে- পাকিস্তানে মার্কিন ড্রোন হামলা বাড়িয়ে দেওয়া, পাকিস্তান থেকে কিছু মার্কিন সহায়তা প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং সর্বোপরি পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া মেজর নন ন্যাটো অ্যালির মর্যাদা ফিরিয়ে নেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। মেজর নন ন্যাটো অ্যালি হলো ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্রদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া স্বীকৃতি। যেসব রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কৌশলগতভাবে কাজ করে থাকে কিন্তু তারা ন্যাটোর সদস্য নয় সেসব রাষ্ট্রকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যেসব মার্কিন কর্মকর্তারা এসব তথ্য দিয়েছেন তারা তাদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা। অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের কোনও কোনও কর্মকর্তা এ ব্যাপারে সফল হওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান। এ ব্যাপারে তাদের যুক্তি হলো, জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রচেষ্টাগুলো যেভাবে ব্যর্থ হয়েছে এক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটবে। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত আফগান রাষ্ট্রদূত হামদুল্লাহ মোহিব অবশ্য আগের চেয়ে আরও কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অতীতের চেয়ে আরও কঠোর হবে। তবে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে তা উল্লেখ করেননি তিনি। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, আফগানিস্তানের ১৬ বছরের যুদ্ধ নিয়ে আঞ্চলিক পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে তারা বৃহত্তর সহযোগিতার সম্পর্ক চান। সম্পর্কের অবনতি তারা চান না। আঞ্চলিক পর্যালোচনা শেষ না হওয়ার আগে তা নিয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে হোয়াইট হাউস ও পেন্টাগন। ওয়াশিংটনে নিয়োজিত পাকিস্তান দূতাবাসও এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। আমেরিকার দীর্ঘদিনের যুদ্ধবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা দাবি করে আসছেন পাকিস্তান তালেবান সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলোকে জায়গা দেয় এবং তারা সেখান থেকে আফগানিস্তানে হামলা চালাতে সক্ষম হয়। এরইমধ্যে আফগানিস্তানে আরও কয়েক হাজার সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণতকারী পাকিস্তানি জঙ্গিদের ওপর চাপ প্রয়োগ না করা হলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে কোনও কাজ হবে না। দীর্ঘদিন ধরে কাবুল আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ভূমিকার সমালোচনা করে আসছে। তবে জঙ্গিদের জন্য সেইফ হ্যাভেন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্ক জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগও নাকচ করে আসছে পাকিস্তান। পাকিস্তানে হাক্কানি নেটওয়ার্কের উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক বছর ধরে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। ২০১২ সালে এ হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল এবং তখনকার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মাইক মুলেন কংগ্রেসে দাবি করেছিলেন, হাক্কানি নেটওয়ার্ক আইএসআই-এর’একনিষ্ঠ সহায়ক। ২০০৪ সালে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানকে মেজর নন ন্যাটো অ্যালি হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সেসময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের প্রশাসন। আল কায়েদা ও তালেবানবিরোধী মার্কিন যুদ্ধে পাকিস্তানকে ওই স্বীকৃতি দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়েছিল। সূত্র : রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ