পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত প্রতিহত করতে দেশের ৯৫% ইসলামী জনতাকে রাজপথে-ময়দানে গর্জে উঠতে হবে। ইসলামী মূল্যবোধ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে বহাল রাখা কোনো গোষ্ঠীর অনুগ্রহ নয়, এটা দেশের ৯৫ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অধিকার। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ গতকাল প্রদত্ত পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন। তারা বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার একটি রিট ইতোপূর্বে খারিজ করা হয়েছিল কিন্তু এখন কেন সে মামলা সচল হলো তা দেশবাসী বুঝে।
খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির হাফেজ মাওলানা শাহ্ আতাউল্লাহ বলেছেন সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাতিল করা হলে দেশের ধর্মপ্রাণ জনতা চুপ করে বসে থাকবে না। তাদের ধর্মীয় চিন্তা-চেতনা তথা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নামতে বাধ্য হবে। এদেশের ৯৫ ভাগ মুসলমান এদেশের নাগরিক। অতএব, ইসলামী মূল্যবোধ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সংবিধানে বহাল রাখা কোনো গোষ্ঠীর অনুগ্রহ নয়। এটা সংখ্যাগরিষ্ট নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার।
তারা বলেন, পরিপূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ করেন আবারও নাস্তিক্যবাদী মহল অত্যন্ত চতুরতার সাথে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাংলাদেশ সংবিধানের ২(ক) ধারা থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ইসলামবিদ্বেষীদের অভিলাষ পূরণে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়া হলে এদেশের মুসলিম জনতা গর্জে উঠবে এবং ঈমানি আন্দোলনের দাবানল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, ২৮ বছরের পূর্বের মামলা হঠাৎ কেন টেনে আনা হলো তা দেশবাসীর বুঝতে বাকি নেই।
ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট
সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত প্রতিহত করতে মুসলমানদের রাজপথে-ময়দানে গর্জে উঠতে হবে। ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্টের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আ. হান্নান আলহাদী। হিন্দ-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ এবং গরু জবাই নিষিদ্ধের দাবির তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম একটি মীমাংসিত বিষয়। তিনি বলেন, ৯৫% মুসলমানের দেশে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত এদেশের মুসলমানরা কিছুতেই মেনে নিবে না। তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম গরু জবাই ইত্যাদি নিয়ে রাজনীতি না করার জন্য বিচার বিভাগ সরকারসহ সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এও বলেন, বিগত ২০০১ সালে থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অন্যতম ইশতেহার ছিল ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস করা হবে না। তাই সরকারের উচিত ইসতেহারের এ অংশটুকু জাতীয় সংসদে পাস করে সংবিধানে সন্নিবেশিত করা।
ইসলামী ঐক্যজোট
জোটভুক্ত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি এডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব বলেন, সম্প্রতি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। দেশে নিয়মতান্ত্রিক-গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যাঘাত সৃষ্টি ও রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার অসৎ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে দেশের মানুষের বিশ্বাস, অনুভূতি এবং ঈমান-আক্বিদা সম্পর্কে সরকার সজাগ না থাকলে সৃষ্ট পরিস্থিতির জন্য ক্ষমতাসীনদের জাতির কাছে জবাবদিহী করতে হবে। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান সাইখুল হাদিস মাও. জহিরুল ইসলাম, মহাসচিব অধ্যাপক মাও. আবদুল করিম খান, যুগ্ম মহাসচিব মাও. আবদুল মাজেদ আতহারি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাও. শওকত আমিন পীর সাহেব বি’বাড়িয়া ও মোসাব্বির রহমান মোল্লা, এলএলবি কেন্দ্রীয় নেতা মুফতি কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া, সৈয়দ মো. আহসান ও মুফতি কামালউদ্দীন প্রমুখ।
ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটি
ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস বলেছেন, নাস্তিক্যবাদী অশুভ চক্র সংবিধান থেকে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার পাঁয়তারা করছে। ‘রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম নেই’ এমন অসার যুক্তি দেখিয়ে যারা সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে আদাজল খেয়ে গলাবাজি করছেন, তারা সা¤্রাজ্যবাদের এজেন্ট, দেশ, জাতি ও ইসলামের শত্রু। তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না। তাহলে এদেশের ইসলাম ও মুসলমানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
গতকাল সোমবার বাদ জোহর লালবাগস্থ কার্যালয়ে ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির এক জরুরি সভায় সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস এসব কথা বলেন। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা আবুল কাসেম, মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা রেজাউল করীম, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা আবুল খায়ের বিক্রমপুরী, মাওলানা আনছারুল হক ইমরান, মাওলানা তোফায়েল গাজ্জালী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সভায় ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির মহাসচিব মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার পাঁয়তারা ইসলাম ও মুসলমানদের উপর চরম আঘাত।
খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশ
খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশের মহাসচিব ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান এক বিবৃতিতে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দিতে সুপ্রিম কোর্টে যে রিট দায়ের করা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নব্বই ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে যারা এ ধরনের দুঃসাহস দেখায় তাদেরকে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে ইন্শাল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।