পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ থাকবে কী থাকবে না ২৮ বছরের একটি পুরনো মামলা সচল করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার যেকোনো উদ্যোগ মুসলমানরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিহত করবে। গতকাল (সোমবার) এক বিবৃতিতে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ইসলামী আক্বিদা-বিশ্বাস ও মুসলিম চেতনাবোধের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে এদেশের ওলামা-মাশায়েখের নেতৃত্বে কোটি কোটি মুসলমান চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করতে হলেও কখনো পিছপা হবে না।
তিনি বলেন, দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে এদেশের ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতা নান্তিক্যবাদীদের নানা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ধৈর্যের সাথে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। ষড়যন্ত্রকারীরা এটাকে দুর্বলতা বা নিষ্ক্রিয়তা ভাবলে চরম ভুল করবে। তাদের বোঝা উচিত, মুসলমান নিজের প্রাণের চেয়েও আল্লাহ-রাসূল (সা:) ও ঈমান-ইসলামের মর্যাদা রক্ষাকে অধিক মূল্য দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, সংবিধানের প্রথম পরিচ্ছেদের ২-ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন’। এরপরও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের প্রশ্ন তোলার মানেই হচ্ছে, সংবিধানিকভাবে এদেশে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠা ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে নাস্তিক্যবাদ প্রতিষ্ঠার যেকোনো উদ্যোগ মুসলমানরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও প্রতিহত করবে, ইনশাআল্লাহ।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর বলেন, ৯১ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে গত অর্ধযুগ থেকে একের পর এক ইসলাম ও মুসলিম চেতনা-বিশ্বাসকে যেভাবে কোণঠাসা করা হচ্ছে, তাতে এটা এখন আর কারো বুঝতে বাকি নেই যে, দেশবাসীর ঘাড়ে নাস্তিক্যবাদী অপশক্তি চেপে বসতে চাইছে। জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আদর্শবিরোধী ২৮ বছর আগের চরম বিতর্কিত ও পরিত্যক্ত একটি মামলাকে হঠাৎ সচল করায় দেশের ওলামা-মাশায়েখ ও কোটি কোটি তাওহিদী জনতা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। হেফাজত আমীর প্রশ্ন রেখে বলেন, যেখানে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী সোমেন্দ্রনাথ গোস্বামীর দায়ের করা রিট হাইকোর্ট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে, মাত্র ৫ মাসের মাথায় একই বিষয়ে ২৮ বছরের পুরনো একটি মামলা পুনরায় সচল করার মানে কি? এদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও আদর্শের বিরুদ্ধে এটা গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।
হেফাজত আমীর সরকারের প্রতি কোনো অদৃশ্য অপশক্তির চাপে নয়, বরং দেশের গণমানুষের প্রত্যাশা মতো রাষ্ট্র পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হুমকি-ধমকি ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মানুষকে চুপ রাখার নীতি পরিহার করে গণমানুষের মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন এবং দেশের বৃহৎ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় মতাদর্শ নিয়ে নাস্তিক্যবাদীদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করুন। হেফাজত আমীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সংবিধান থেকে মহান আল্লাহর ওপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাসের ধারা বাতিল করে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে কার্যত ধর্মহীনতার নীতি সংযোজন করলেন। সংবিধানে বিসমিল্লাহর ভুল অর্থ সংযোজন করলেন। এরপর সংবিধানের দোহাই দিয়ে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলামী শিক্ষা ও মুসলিম ভাবধারাকে উচ্ছেদ করে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীকে নাস্তিক্যবাদ ও বিজাতীয় তত্ত্বের বিষয়াদি পড়াচ্ছেন। স্কুল-কলেজে পাঠদান ও পাঠ্যপুস্তক রচনায় ব্যাপক হারে সংখ্যালঘুদের নিয়োগ দিলেন। সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে ইসলামিক রীতি-নিদর্শন বলে কিছুই অবশিষ্ট রাখলেন না।
হেফাজত আমীর বলেন, দেশের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার পেছনে অদৃশ্য কোনো শক্তি কাজ করছে, জনগণের মধ্যে এমন প্রশ্ন আরো গভীর হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ঈমান-আক্বিদা, জনগণ, দেশ ও শান্তির পক্ষে কথা বলি। ক্ষমতাসীন দলের আড়াই শ’রও অধিক সংসদ সদস্য এবং লাখ লাখ নেতাকর্মীর মধ্যে এমন একজন খোদাভীরু মুসলমানও কি নেই, যিনি প্রতিবাদ করে জোর আওয়াজে বলবেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! জনগণ আমাদেরকে দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা, উন্নয়ন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য ম্যান্ডেট দিয়েছে, দেশকে ধর্মহীন করার জন্য নয়; দয়া করে এসব বন্ধ করুন’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।