Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

গভীর সমুদ্র থেকে সংকেত পাঠাবে কচ্ছপের পিঠের ট্রান্সমিটার

প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কক্সবাজার অফিস : প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ডিম পারতে এসে মারা পড়ে সামুদ্রিক কাছিম। উপকূলে হিংস্র প্রাণীদের কাছ থেকে কাছিমকে রক্ষা করতে সংরক্ষণাগারে নিয়ে তাদের পরিচর্যা করছে মেরিন লাইফ এলায়েন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা। এরপর সামুদ্রিক এসব কাছিমের জীবনপ্রণালি, বিচরণসহ নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে তাদের গায়ে স্যাটেলাইট যন্ত্র স্থাপনের কাজ করছে মেরিন লাইফ এলায়েন্স নামের ওই বেসরকারী সংস্থাটি।
সামুদ্রিক কাছিমের (বড় কচ্ছপ) জীবনপ্রণালি, বিচরণসহ নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে তাদের গায়ে বসানো হচ্ছে স্যাটেলাইট যন্ত্র। সম্প্রতি উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকতে ৫৬ কেজি ওজনের একটি জলপাই রঙের ‘অলিভ রিডলে’ প্রজাতির মা কাছিমের গায়ে স্যাটেলাইট যন্ত্র স্থাপন করা হয়। কাছিমটি গভীর সাগর থেকে ডিম পারতে উপকূলে এসেছিল। গভীর রাত পর্যন্ত নিজে নিজে একটি গর্ত খুঁড়ে তাতে ১১০টি ডিমও দেয় ওই কাছিমটি।
ডিমগুলো হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানোর জন্য পরিবেশকর্মীরা সংরক্ষণ করেন। পরে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের গবেষণা ও সংরক্ষণ সংস্থা ‘মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের’ কর্মকর্তারা কচ্ছপটিকে ধরে স্যাটেলাইট যন্ত্রটি স্থাপন করে সাগরে ছেড়ে দেন।
মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক ও গবেষক জহিরুল ইসলামের মতে, বাংলাদেশে সামুদ্রিক কচ্ছপের গতিবিধি লক্ষ করার জন্য কচ্ছপের পিঠে আধুনিক প্রযুক্তির এই স্যাটেলাইট যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়। স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং হলো এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। যা দিয়ে সারা বিশ্বে পোকামাকড় থেকে শুরু করে বৃহৎ জলচর ও স্থলচর প্রাণীদের গতিবিধি লক্ষ করা হয়। মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্স চলতি বছর আরও চারটি কচ্ছপের পিঠে এ ধরনের ট্রান্সমিটার বসাবে বলেও জানান তিনি।
গবেষক জহিরুল ইসলাম আরো জানান, ট্রান্সমিটার বহনকারী কচ্ছপটি এরই মধ্যে তার ভ্রমণপথ জানাতে শুরু করেছে। স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারটি সচল করার পর থেকেই এটি উচ্চ তরঙ্গের সংকেত পাঠানো শুরু করে। কচ্ছপটি সমুদ্রের পানিতে ভেসে ওঠামাত্রই ট্রান্সমিটারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এর অবস্থান সম্পর্কিত সংকেত পাঠাচ্ছে। পৃথিবীর যে প্রান্তেই কাছিমটি ভ্রমণ করবে, তা ধরা পড়বে স্যাটেলাইটে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে তা মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্সের গবেষকদের জানিয়ে দেবে। মেরিন লাইফ অ্যালায়েন্স এসব তথ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে প্রদান করাসহ সার্বিক সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলেও জানা গেছে। এ কারণে কচ্ছপটিকে রক্ষা করা খুবই জরুরি। তাই সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য মেরিন লাইফের পক্ষ থেকে অনুরোধ করেন জহিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ২০১০ সাল থেকে সমুদ্র উপকূলে পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কিছু কাছিমের গায়ে স্যাটেলাইট স্থাপন করে এ সংস্থাটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গভীর সমুদ্র থেকে সংকেত পাঠাবে কচ্ছপের পিঠের ট্রান্সমিটার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ