পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ষ ডিজাইন অনুমোদন দিয়েছে আপটাইম ইনস্টিটিউট
ষ সংরক্ষণ করা হবে বিপুল পরিমাণ ডিজিটাল ডাটা
ফারুক হোসাইন : এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম টিয়ার ফোর ডাটা সেন্টার স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হাইটেক পার্ক সংলগ্ন ২০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হচ্ছে ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারটি। ভবন তৈরিসহ নির্মাণ কাজের ৭০ শতাংশই সম্পন্ন হয়েছে। ডাটা সেন্টারের ডিজাইনও আপটাইম ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে বলে জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। ডাটা সেন্টারটি স্থাপন করা হলে বিপুল পরিমান ডিজিটাল ডাটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে আইসিটি বিভাগ এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। টিয়ার ফোর সার্টিফায়েড ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার নামে পরিচিত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে এক হাজার ৫১৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বিশালাকার এই ডাটা সেন্টারের র্যাকের সংখ্যা হবে ৬০৪টি। তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিভাগ জানায়, ডাটা সেন্টারের হোস্টিং ক্যাপাসিটি বাড়াতে, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডাটা/নথি সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত রাখতে এবং জাতীয় ই-সেবা সিস্টেমের মাধ্যমে নাগরিকসেবা দ্রæত ও নিশ্চিত করতে টিয়ার ফোর ডেটা সেন্টারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আপটাইম ইনস্টিটিউট ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টারের ডিজাইন অনুমোদন দেয়। এর ফলে এই সেন্টার স্থাপনে আরও এক ধাপ অগ্রগতি হলো, যা আপটাইম ইনস্টিটিউট থেকে টিয়ার ফোর গোল্ড ফল্ট টলারেন্ট সার্টিফিকেশন অর্জনের মাধ্যমে সমাপ্তি হবে। এছাড়া কালিয়াকৈরে আন্তর্জাতিক মানের দ্বিতল ভবনসহ অন্যান্য নির্মাণ কাজ ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সার্বিক তত্ত¡াবধানে দিনে দিনে ডিজিটাল বাংলাদেশের কলেবর বাড়ছে। আর সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেশি পরিমাণে ডেটা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাও। এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে আমরা কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে টিয়ার ফোর মানের ডেটা সেন্টার স্থাপন করছি। এই ডেটা সেন্টারে সরকারি ডেটার পাশাপাশি আমরা সীমিত আকারে বেসরকারি ডাটাও হোস্ট করব। আর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে আপটাইম ইনস্টিটিউট। টিয়ার ফোর মানের সার্টিফিকেশন দেয়ার আগে আপটাইম ইনস্টিটিউট সকল ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ডাটা সেন্টার টিয়ার ফোর গড়ে তোলা হলে বিপুল পরিমান ডিজিটাল ডাটা সংরক্ষণ করা যাবে। এই ডাটা সেন্টারটি ব্যাংক, গবেষণা কেন্দ্র, সরকার এবং অন্যান্য বাণিজ্য সংস্থার গোপনীয়, গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আইসিটি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, টিয়ার ফোর ডাটা সেন্টার কেবল একটি প্রকল্পই নয়, এটি হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প। যেখানে কেবল দেশের তথ্য সংরক্ষণই নয়, বিদেশী বাণিজ্য সংস্থা ও অন্যান্য দেশগুলোকেও তথ্য সংরক্ষণের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। যাতে তারা এখানে তথ্য সংরক্ষণ করাকে নিরাপদ মনে করে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার প্রকল্পের আওতায় দেশে একটি সমন্বিত ও বিশ্বমানের ডাটা সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে যার ডাউন টাইম শূন্যের কোঠায়। ফলে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার ডিজিটাল কন্টেন্ট সংরক্ষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, ডিজিটাল কন্টেন্ট সমূহের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে জনসেবা উন্নত হবে এবং ক্লাউড কম্পিউটিং ও জি-ক্লাউড প্রযুক্তিতে বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম স্থান হিসাবে অবদান রাখবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কার্যালয়ের আইসিটি কার্যক্রম সরাসরি যুক্ত থাকবে।
বিশালাকার এই ডাটা সেন্টারে থাকছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ৬০৪ টি র্যাক, ৯ এমভিএ লোডের রিডান্ডেন্ট লাইনসহ সমৃদ্ধ ২৪ ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যু সংযোগের ব্যবস্থা, উচ্চ গতিসম্পন্ন ৪০ জিবিপিএস রিডান্ডেন্ট ডেটা কানেকটিভিটি/ ইন্টারনেট সংযোগ।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) চাহিদার নিরিখে প্রথম ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার গড়ে তোলা হয়। টায়ার-থ্রি এর আওতায় এই ডাটা সেন্টারে র্যাক রয়েছে ৬৭টি। ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। এটির কাজ শেষ হবে ২০১৮ সালের জুন মাসে। বর্তমানে গোটা বিশ্বে মাত্র পাঁচটি টিয়ার ফোর ডাটা সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে স্পেনের মাদ্রিদে ও আলকালা ডি হেনারেস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস ও ওলাথে এবং কানাডার গুয়েল্ফে। বাংলাদেশ বর্তমানে টিয়ার থ্রি ডাটা সেন্টার রয়েছে। তবে এখানে খুব অল্প পরিমান তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।