পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক ঃ ঈদের বাজারে বৃষ্টির হানা। বৃষ্টি আর যানজটে নগরজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। গত রোববার রাত থেকে শুরু হয়ে মাঝে বিরতি দিয়ে আবার বুধবার দুপুর থেকে শুরু হয়। কখনও হালকা আবার কখনও বর্ষণে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোসহ পাড়ামহল্লার অলিগলির রাস্তাঘাটে পানি জমে গেছে। রাজধানী জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ঈদ কেনা কাটা করতে বের হওয়া নগরবাসী। গাড়িতে উঠলে যানজট, পায়ে হাটতে গেলে কাদা পানি ও খানাখন্দকেভরা রাস্তায় জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ অফিস আদালতগামী মানুষ বৃষ্টি ও যানজট উপেক্ষা করেই নিজ নিজ লক্ষ্যে যেতে হয়েছে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের লম্বা লাই দেখা গেছে। যানজটের কারণে সময়মত পাওয়া যায়নি গাড়ি। মাঝে মধ্যে দু’য়েকটি পাওয়া গেলেও দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। মাত্র দেড়-দুই কিলোমিটার পথ যেতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে রাস্তায়।
বুধবার দুপুরের ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তায় পানি জমে থাকায় গাড়ির ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অচল হয়ে পড়ে আছে। রাজধানীর কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, টাউন হল, আসাদ গেট, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, গুলশান, বনানী, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, নয়াপল্টন, কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে পানিবদ্ধতা।
গতকালের ভারি বর্ষণে বিশেষ করে ঢাকা শহরের ফুটপাতের ক্রেতা বিক্রেতারা পড়ে মাহ দুর্ভোগে। আর কয়েকদিন পরেই ঈদ। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বড় বড় মার্কেট, বিপণিবিতান, ফ্যাশন হাউস ও শপিংমলগুলোতে ক্রেতার ভিড় থাকলেও ফুটপাত তেমন একটা জমেনি। বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন ফুটপাতে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষ অন্যান্য দিনের তুলনায় কম ছিল। বিকেলের বৃষ্টিতে ফুটপাথের বিকিকিনিও তলানিতে গিয়ে ঠেকছে বলে জানান বিক্রেতারা। গতকাল বুধবার সরজমিন রাজধানীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে মার্কেটে লোক আসছে, তবে তা গত কয়েকদিনের তুলনায় কম। এসঙ্গে যোগ হয়েছে যানজট। ফলে দিনের বেলায় ক্রেতারা কম আসছেন বলে জানান দোকানিরা। এদিকে বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে আছে ফুটপাতের মার্কেটগুলো। এমন মৌসুমে বিকিকিনির এ অবস্থায় বিক্রেতাদের মাথায় হাত। অবিরাম বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক, ঢাকা কলেজ সংলগ্ন এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে তেমন একটা ক্রেতা দেখা যায়নি। বৃষ্টি ও যানজটের কারণে ক্রেতা কম।
গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম, নিউ বঙ্গবাজার, গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাতের অধিকাংশ দোকান গতকাল বৃষ্টির কারণে খুলতে পারেনি দোকানিরা। কথা হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মেরাজ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। এই সময়ে দোকান বন্ধ থাকা মানে অনেক ক্ষতি। এলিফ্যান্ট রোডের বাটা জুতার শোরুমের শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, গত কয়েকদিন বিক্রি ভালোই হচ্ছিল। কিন্তু আজ (বুধবার) ক্রেতাদের দেখা খুব কম মিলছে। বৃষ্টির কারণে মানুষ বাসা বা কর্মস্থল থেকে বের হতে পারছে না। কথা হয় বায়তুল মোকাররাম এলাকার ফূটপাতে কেনাকাটা করতে আসা রুকনুæজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আর কয়েকদিন পরেই ঈদ। তাই বৃষ্টির মধ্যেই কেনাকাটা করতে আসলাম। কিন্তু বিক্রেতা কম। তারপরেও চেষ্টা করছি কিছু কেনার।
বুধবার দুপুরের পরে বৃষ্টির মধ্যেই রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে ওঠে। এসব মার্কেটে এখন ক্রেতার উপচেপড়া ভিড়। এলিফ্যান্ট রোডে মাল্টিপ্ল্যান সেন্টার, সুবাস্তু আর্কেড, ইস্টার্ন মল্লিকা, হাতিরপুলে ইস্টার্ন প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতারা ভিড় করছেন পছন্দের জিনিসটি কিনতে।
বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রাণ কেন্দ্র মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ চলায় এ এলাকার বেশ কয়েকটি রাস্তার অবস্থা বেহাল। তাই এ এলাকার রাস্তাগুলোতে যানজট সকাল-দুপুর, রাত-দিন সবসময় লেগেই থাকে। এ থেকেই সারা শহর জুড়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণেই রাজধানীর যানজট এখন সাপ্তাহের সাত দিনই থাকে। বিশেষ করে কর্মদিবসের শুরুর দিন রোববার, প্রথানমন্ত্রী সচিবালয়ে অফিস করেন সোমবার আর কর্মদিবসের শেষ দিন বৃহস্পতিবার এ তিনদিন রাজধানীর রাস্তায় ভয়াবহ যানজটে সৃষ্টি হয়। এ সময় নগরবাসীকে রাস্তায় নেমেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
রমজান শুরু হওয়ার পর যানজটের মাত্রা আরও বেড়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকতে হচ্ছে মানুষকে। ভোগান্তির যেন শেষ নেই। হাঁফিয়ে উঠছে নগারবাসী। নারী, শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তিই সবচেয়ে বেশি। নির্ধারিত সময়ে অফিসে পৌঁছতে পারছেন না কর্মজীবীরা। শিক্ষার্থীরা হিমশিম খাচ্ছেন ক্লাসে পৌঁছতে। মানুষের এ দুর্ভোগ যেন সমাধানের নয়। যানজট নিরসনে কয়েকটি ফ্লাইওভার হয়েছে। আরও হচ্ছে। কিন্তু খুব বেশি এর সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। ফ্লাইওভারের গোড়ায় বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানোর কারণেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফুটপাথ দখলমুক্ত করা হলেও রমজানে আবার দখল হয়ে গেছে। যে কারণে যানজট বেড়েগেছে আবার।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে যানজটের পরিমাণ বাড়ছে। সকাল সাড়ে ৯টা অফিস টাইম, বিকেল ৩টার পর আবার সবাই একসঙ্গে বের হন। তাই সকাল ও বিকেল উভয় সময়েই যানজট দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ইফতারের পর মানুষজন কেনাকাটায় শপিং করতে রাস্তায় বের হওয়ায় রাতেও যানজট হচ্ছে। এ ছাড়া রাজধানীর মগবাজারসহ কিছু এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ চলছে। এ কারণেও গাড়ি চলাচলে বিঘœ ঘটছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।