পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবহাওয়ার বিপরীতমুখী আচরণ : প্রাক-বর্ষায় রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক কম
শফিউল আলম : ‘মোরা’ প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ছিল না। তবে গত ৩০ মে ‘মোরা’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলভাগ অতিক্রমের পর থেকেই বাংলাদেশের আবহাওয়ামÐলে পড়েছে এর বিভিন্নমুখী প্রভাব-প্রতিক্রিয়া। ‘মোরা’র পিঠে ভর করে বর্ষার মৌসুমি বায়ুমালা দেশে এগিয়ে এসেছে। আর সেই সঙ্গে গত রোববার ও সোমবার পরপর দু’দিনে ভারতের অন্ধ্র-উড়িষ্যা উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা একটি মৌসুমি নি¤œচাপের সক্রিয় প্রভাবে প্রায় সমগ্র দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি, কোথাও কোথাও অতি ভারী বর্ষণ এবং প্রবল জোয়ার অব্যাহত রয়েছে। এভাবে প্রাক-বর্ষায় (গতকাল ৩০ জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত) অতিবৃষ্টি ও সামুদ্রিক জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ ভাগ ও মধ্যাঞ্চল। অথচ আরেকদিকে টানা খরতপ্ত আবহাওয়া, তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে বরেন্দ্র জনপদ খ্যাত রাজশাহী এবং সর্বউত্তরের রংপুর বিভাগ অর্থাৎ দেশের সমগ্র উত্তরাঞ্চল।
সর্বশেষ বৃষ্টিপাতের হার বা পরিমানও উত্তরাঞ্চলের সাথে মধ্য ও দক্ষিণভাগের বিশাল, অস্বাভাবিক তারতম্যকে নির্দেশ করে। গতকাল সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় দক্ষিণ-পূর্বের জনপদ পার্বত্য রাঙ্গামাটিতে ৩৪৩ মিলিমিটার, চট্টগ্রামে ২২২ মিমি, ঢাকায় ১৩৯ মিমি, মংলায় ৫৮ মিমি, বরিশালে ৩৯ মিমি। অথচ একই সময়ে রংপুরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ৪ মিমি এবং রাজশাহীতে ৫ মিমি।
আবহাওয়ার বিপরীতমুখী এ আচরণ ক্রমাগত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এবার প্রাক-বর্ষা মৌসুমে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এ যাবত বৃষ্টিপাত হয়েছে অস্বাভাবিক কম। গত মে মাসে সারাদেশের বৃষ্টিপাতের হিসাবে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ধরা হয় ১৯৬ মিমি। অথচ সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ১৬১ মিমি। স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
মৌসুমি বায়ুর আগমন ও সক্রিয়তার মধ্যদিয়ে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় ঘনঘোর মেঘ-বাদল সঞ্চারিত হয়েছে। জানান দিচ্ছে আজ (বুধবার) থেকে ভরা বর্ষা মৌসুমের। অথচ অনেকটা ‘অকাল’ খরায় পুড়ছে বিশাল উত্তরের জনপদ। স্বাভাবিক বৃষ্টিও সেখানে ঝরছে না। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগজুড়ে বিরাজ করছে খরতপ্ত চরম বৈরী ও রুদ্র-রুক্ষ আবহাওয়া। অনুভূত হচ্ছে অসহনীয় ভ্যাপসা গরম। কিন্তু বৃহত্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল গত দুই সপ্তাহ যাবত অতি বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল এবং প্রবল সামুদ্র্রিক জোয়ারে ঘন ঘন প্লাবিত হচ্ছে। অনেক এলাকায় লাখো মানুষ এখনও পানিবন্দী। অপরদিকে অনেকটা বৃষ্টিবিহীন আবহাওয়ার খেয়ালী আচরণে খাঁ খাঁ করছে দেশের উত্তরাঞ্চল।
এদিকে আবহাওয়া-জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তনের ধারায় দেশের উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়ায় অস্বাভাবিক ও বিপরীতমুখী চিত্র ফুটে উঠছে প্রকটভাবেই। মরণ ফাঁদ ফারাক্কা বাঁধের ধাক্কার সাথে আবহাওয়ার চরম বৈরিতা বিশেষ করে অনাবৃষ্টির কারণে বরেন্দ্র জনপদ রাজশাহী অঞ্চল ক্রমাগত এক মরুময় পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। রাজশাহী-রংপুর-দিনাজপুর উত্তরের জনপদে আবহাওয়া-জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে বিভিন্নভাবে এর নীরব শিকার হচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। এর অনিবার্য বিরূপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া গিয়ে পড়েছে জনজীবন, জনস্বাস্থ্য, কৃষি-খামারের উপর। কৃষি-প্রধান উত্তরের জনপদে স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত বর্ষণ না হওয়ায় এবং পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় ফল-ফসল রক্ষায় গভীর নলকূপ ও প্রচলিত দেশীয় বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিকল্প সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে কৃষি-ক্ষেত খামারের খরচ। সর্বস্বান্ত হচ্ছে কৃষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।