পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ. কে. এম, ফজলুর রহমান মুন্শী : ইতিকাফ আরবী শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলোঃ কোন বস্তুকে অপরিহার্যরূপে ধরে রাখা, কোন জিনিসের উপর নিজেকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখা, শুধু অবস্থান করা। আর ইতিকাফ শব্দের মূল ভাবধারা হলো কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য বিন্দুতে মন-মগজ দৃঢ়ভাবে নিবদ্ধ রেখে অবস্থান করা এমন ভাবে যে সেই দিক হতে দৃষ্টি যেন অন্য দিকে ফিরে না যায়।
আর শরীয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ বলা হয়, কোন বিশেষ ব্যক্তির কোন বিশেষ মসজিদে অবস্থান করা, অবস্থিতি গ্রহণ করা। যিনি অবস্থান গ্রহণ করেন, তাকে মুতাকিফ বা আকিফ বলা হয়। বস্তুত: আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান গ্রহণ করা ও থাকাকে ইতিকাফ নামে অবিহিত করা হয়।
কুরআনুল কারীমের দুইটি আয়াতে ইতিকাফ শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। এক: তোমরা হলে মসজিদে অবস্থানকারী। দুই: তোমরা দুই জনে (ইব্রাহিম ও ইসমাইল) আমার ঘরকে তাওয়াফকারী ও অবস্থানকারীদের জন্য পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করে রাখবে। (সূরা বাকারাহ: আয়াত ১২৫)। এতে বুঝা যায় যে, ইতিকাফের ফজিলত ও মর্যাদা খুবই বেশী।
হাদীস শরীফে ইতিকাফের গুরুত্ব ও সাহায্য বিস্তৃতভাবে বর্ণিত আছে। হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন: রসূলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন এবং তা চলতে ছিল যতক্ষণ না আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত তাঁর জান কবজ করলেন। (জামে তিরমিজী)।
উপরোক্ত হাদীস হতে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) নিয়মিতভাবে রমজান মাসের শেষ দশদিন মসজিদে অবস্থান করতেন। তার এই আমল তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফে উদ্ধৃত হাদীস হতে জানা যায় যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) ইতিকাফ করতেন যতক্ষণ না আল্লাহ পাক তাঁর ওফাত করেছেন। তাঁর স্ত্রীগণও ইতিকাফ করতেন।
এই হাদীসের আলোকে ইমাম ইবনুল হুম্মাম (রহঃ) বলেছেন, ক্রমাগত ও নিরবচ্ছিন্নভাবে রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর এই কাজ করা, তা বিনা কারণে পরিত্যাগ না করা আর সাহাবীদের মধ্যে যারা এ কাজ করেননি তাদেরকে তা না করার জন্য অভিযুক্ত না করা হতে প্রমাণিত হয় যে, ইহা ‘সুন্নাত’। যদি অন্যথা হত তাহলে ইহা ওয়াজিব বলে নির্ধারিত হত।
রসূলুল্লাহ (সাঃ) এক সময় রমজান মাসের শেস দশদিন ইতিকাফ করতে পারেননি। পরবর্তী মাসে তিনি তা আদায় করেছেন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম শরীফে উদ্ধৃত হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রমজান মাসের ইতিকাফ পরিহার করেন এবং শাওয়াল মাসের দশ দিন ইতিকাফ পালন করেন। মোটকথা ইতিকাফ মাহে রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমল। এই আমল আদায়ে সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।