পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভয়েস অব আমেরিকা : জাকার্তা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার রাজনীতিকে এক বড় ভূমিকা পালন করার পর কট্টর পন্থী উসলামী গ্রুপগুলো সম্ভবত এক অচলাবস্থাকে আঘাত করেছে। যদিও গত বছর ইন্দোনেশিয়া জুড়ে সাংগঠনিক কাজে ও বিক্ষোভ প্রদর্শনে তাদের ব্যাপক সুবিধা দেয়া হয়, কিন্তু জাকার্তার বাইরে তাদের সাফল্যের পুনরাবৃত্তির চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সরকার দু’টি প্রধান কট্টরপন্থী গ্রুপেেক বাধা দেয়ার ব্যবস্থা করে। এক নতুন জরিপে দেখা যায়, অধিকাংশ ইন্দোনেশীয়ই কিছু প্রধান ইসলামী গ্রুপ সম্পর্কে জানে না, আরো কম সংখ্যক লোক তাদের সমর্থন করে , তা সে দেশীয়ই হোক আর তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মত বৈশি^ক সংগঠনই হোক।
কেন্দ্রীয় দমন
ইন্দোনেশিয়া সরকার ইসলামিক ডিফেন্ডার্স ফ্রন্ট (এফপিআই)-এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এ কট্টরপন্থী গ্রুপটি গত বছরের আহোক বিরোধী সমাবেশ আয়োজন করে এবং সাম্প্রতিক পুরুষ সমকামী বিরোধী কর্মকান্ডে সাহায্যের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার আনঅফিসিয়াল নৈতিক পুলিশ হিসেবে কাজ করছে। জাকার্তা পুলিশ এফপিআই নেতা হাবিব রিজিক শিহাবের গ্রেফতারের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করেছে। তিনি এখন সউদি আরবে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এক মহিলা সমাজ কর্মীর সাথে যৌন কেলেংকারি সংক্রান্ত পর্নোগ্রাফির অভিযোগ আনা হয়েছে।
এফপিআই-র বাইরে, ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রী উইরান্তো ঘোষণা করেন যে রাষ্ট্র উগ্রপন্থী ইসলামী গ্রুপ হিজবুত তাহরির ইন্দোনেশিয়া (এইচটিআই)কে নিষিদ্ধ করবে , কারণ তাদের লক্ষ্য পঞ্চশিলা নামে পরিচিত বহুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় মতাদর্শের বিরোধিতা। উইরান্তোর ঘোষণার পর ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো “জোকোউই” উইডোডো পঞ্চশিলার প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী উগ্রপন্থী গ্রুপকে পরাজিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওহাইও রাজ্য বিশ^বিদ্যালয়ের এক ইন্দোনেশীয় রাজনৈতিক পন্ডিত উইলিয়াম লিডল বলেন, রিজিক শিহাব ও হিজবুত তাহরিরের উপর দমন আমার কাছে আহোক বিরোধী সমাবেশের প্রতি সরকারের জবাব বলে মনে হচ্ছে। আহোক হচ্ছেন জাকার্তার চীনা খ্রিস্টান গভর্নর যিনি গত বছর ইসলামপন্থীদের প্রতিবাদের লক্ষ্য ছিলেন। এ প্রতিবাদ গত মাসে তার পুনর্নির্বাচনে তার মারাত্মক পরাজয়ে ভূমিকা রাখে।
জাকার্তার পরবর্তী গভর্নর আনিস বাসেদান তার নির্বাচনী প্রচারণায় খোলাখুলি ভাবে এফপিআই-র সাথে জোট করেন যা গ্রুপটিকে সদ্যলব্ধ বৈধতা দেয় বলে মনে হয়। তবে এফপিআই-র প্রতি সমর্থন কমে আসতে পােের। এফপিআই যখন পশ্চিম কালিমান্তানের খ্রিস্টান গভর্নর কর্নেলিসের বিরুদ্ধে অনুরূপ বিক্ষোভ সংগঠনের চেষ্টা করে তার ফল হয় হতাশাজনক। মাত্র কয়েক হাজার লোক সমাবেশে উপস্থিত হয়। কর্নেলিস তার প্রদেশে উগ্রপন্থীদের নিষিদ্ধ করার শপথ করেছেন।
এর একটি কারণ হয়ত এই যে এফপিআই অধিকতর শক্তিশালী শত্রু চীনা ইন্দোনেশীয়দের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল যারা দীর্ঘদিনের নিপীড়িত সংখ্যালঘু ; কর্নেলিস হচ্ছেন একজন দেশী ডায়াক ব্যক্তি। ইন্দোনেশিয়ার গোষ্ঠি সংঘাতে এ গ্রুপের মারাত্মক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে।
সুতরাং এফপিআই-র মত কট্টরপন্থী গ্রুপগুলো কোনোভাবেই সার্বিক শক্তিশালী নয় অথবা সুনির্দিষ্ট জাকার্তা নির্বাচনী প্রতিযোগিতার বাইরে তারা ব্যাপকভাবে কার্যকরও নয়।
লোয়ি ইনস্টিটিউটের এক রিসার্চ ফেলো আরন কনেলি বলেন, আহোকের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করতে ধর্মনিরপেক্ষ এলিটদের অনিচ্ছাকৃত সমর্থন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ সমর্থন ছাড়া এফপিআইকে সংগ্রাম করতে হত।
ইসলামী গ্রুপগুলোর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি
জাকার্তা ভিত্তিক সাইফুল মুজানি রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিং উগ্রপন্থী গ্রুপগুলো বিষয়ে এক জরিপ পরিচালনা করে। এ জরিপে অংশ নেয়া মাত্র ২৮ শতাংশ লোক জানে এইচটিআই কী। ৯১.৩ শতাংশ মানুষ দেশ থেকে আইএসকে নিষিদ্ধ করা সমর্থন করেছে।
৯.২ শতাংশ লোক বলেছে, তারা দেশ শাসনের বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বদলে ইসলামী খিলাফতকে সমর্থন করে। ২৬ কোটি জনসংখ্যার দেশে তারা ক্ষুদ্র অংশ।
কট্টরপন্থ’ী গ্রুপগুলো ছাড়া ইন্দোনেশীয়রা প্রকৃতপক্ষে কোথায় আছে তা দেখার বিষয়। ইন্দোনেশিয়ার জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ মুসলমান। তারা ইসলামী রাজনীতি ও মুসলিম নেতৃত্ব নির্ভর।
গত বছর গবেষক এলিজাবেথ পিসানি ও মাইকেল বুয়েহলার ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় ৪৪০টি শারিয়া-অনুপ্রাণিত উপবিধি বিশ্লেষণ করেন এবং দেখতে পান যে ইসলামী আইন সেসব রাজনীতিকদের পুনর্র্নির্বাচনে সহায়ক হয়নি যারা সেগুলোর পক্ষে কথা বলেন।
উগ্রবাদের হুমকি এখনো ছোট
উগ্রবাদের ধারণার বাইরে ইন্দোনেশিয়ায় সহিংস উগ্রবাদের হুমকি আসলে কম। গত মাসে পূর্ব জাকার্তার এক ট্রেন স্টেশনে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩ পুলিশ অফিসার নিহত হন।
ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসীদের বর্তমান প্রজন্ম না সংখ্যায় বেশী না কার্যকর। ২০১৬ সালে ইকনোমিস্টে ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের রিপোর্ট মতে, তিনটি আত্মঘাতী বোমা হামলার ফল দাঁড়ায় এক হামলাকারীর মৃত্যু। ইন্দোনেশিয়ার সন্ত্রাসবাদ বিরোধী বিখ্যাত একটি বিখ্যাত কর্মসূচি আছে , বিশেষ করে এলিট ডিটাচমেন্ট ৮৮ স্কোয়াড যা ২০০২ সালে বালি বোমা হামলার পর গঠিত হয়।
ইনস্টিটিউট ফর পলিসি এনালিসিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট-এর নাভা নূরানিয়া বলেন, ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গিরা আজ ক্ষতি করার মত ক্ষমতাও হারিয়েছে। আল কায়েদার অঙ্গ সংগঠন জামা ইসলামিয়া প্রজন্মের মত তারা বাইরে কখনো প্রশিক্ষণ নেয়নি। ইন্টারনেট থেকে বোমা তৈরি শেখা তাদের এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।