Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হেফাজত নেতৃবৃন্দ ও শীর্ষ আলেমগণ-রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করলে প্রতিরোধ

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখগণ গতকাল (রোববার) এক যৌথ বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করা হলে প্রতিরোধের দাবানল জ্বলে উঠবে। তারা বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলছি সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেবার আবেদন করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিট অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। একটি চক্র আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করতে চায়। মহামান্য আদালতের প্রতি আমাদের আবেদন, জনস্বার্থ, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় চেতনা, সর্বোপরি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বার্থে এ ধরনের বিতর্কিত বিষয়ে দায়েরকৃত রিট খারিজ করে দেয়া হোক। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এটি আদৌ কোনো রাজনীতির বিষয় নয়। সংবিধানের এ অংশটি বাদ দেয়ার অদূরদর্শী পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশ, জাতি, রাষ্ট্রের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সংখ্যারিষ্ঠ জনগণের চেতনা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সামাজিক স্থিতিশীলতা ও বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ব্যাপারে দায়িত্বজ্ঞানহীন, গণবিচ্ছিন্ন, বিদেশী শক্তির পদলেহী একটি অশুভ চক্র সবসময় কায়েমী স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে এদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি ও অশান্তির বীজ বপন করতে চায়। তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে ইসলাম ও মুসলমানদের বুকে ছোবল মারার চেষ্টা করেছে। সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার জন্য এই অশুভ চক্রটি দীর্ঘদিন থেকে সক্রিয়। অনুকূল পরিবেশ পেলেই এরা ফনা তোলে। বিষধর সাপতুল্য এই চক্রটি ঝোপ বুঝে কোপ মারার জন্য মাঝে মাঝে মাঝে সরকার ও বিচার বিভাগের ঘাড়েও সওয়ার হতে চায়।
এতে আরও বলা হয়, ৯২ শতাংশেরও বেশি মুসলমান অধ্যুষিত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ মুসলিম দেশের সংবিধান থেকে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে দিয়ে এরা একঢিলে দুই পাখি মারার পাঁয়তারা করছে। তারা একদিকে সা¤্রাজ্যবাদী মোড়ল প্রভুদের খুশি করতে চায়। এ সুযোগে দেশে ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি করে জঙ্গি তৎপরতার অজুহাত তুলে বিদেশি আগ্রাসন তরান্বিত করতে চায়।
দেশের শীর্ষ আলেম ও হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘রাষ্ট্রের কোন ধর্ম থাকতে নেই’ বলে যারা অসার যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার পক্ষে গলাবাজি করেন তারা কি রাষ্ট্রভাষাকেও সংবিধান থেকে বাদ দেবার ওকালতি করবেন? আর যারা ‘রাষ্ট্র যার যার ধর্ম সবার’, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ ইত্যাদি অবাস্তব ¯েœাগান তুলে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়, আমরা আশা করি, সরকার তাদের ফাঁদে পা দিয়ে দেশে ব্যাপক অশান্তি সৃষ্টির সুযোগ করে দেবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আহত করে এমন সিদ্ধান্ত আদালতকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কাজেই এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিদাতা শীর্ষ ওলামা-মাশায়েখ ও হেফাজত নেতৃবৃন্দ হলেন, হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমীর মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জ, মাওলানা শামসুল আলম, মাওলানা আবদুল মালেক হালিম, মুফতি মোজাফফর আহমদ পটিয়া, আল্লামা মুফতি আহমদুল্লাহ, মাওলানা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুরপুর, মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, বেফাক মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার, মাওলানা মুফতি মাহফুজুল হক, মাওলানা সালাহুদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মুহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা সাজেদুর রহমান বি.বাড়িয়া, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী ময়মনসিংহ, মাওলানা মোস্তাফা আল হোসাইনী নোয়াখালী, মাওলানা আনোয়ারুল করিম যশোর, মাওলানা মাওলানা মুহিবুল হক গাছবাড়ি সিলেট, মাওলানা নুরুল হক কুমিল্লা, মাওলানা লোকমান হাকীম চট্টগ্রাম, মাওলানা মোস্তাক আহমদ খুলনা, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ ইয়াকুব বগুড়া, মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব বরিশাল প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হেফাজত নেতৃবৃন্দ ও শীর্ষ আলেমগণ-রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করলে প্রতিরোধ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ