পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু , বগুড়া ব্যুরো : বোরো মওশুম শেষে ও আমন মওশুমের আগে বাড়তি আয়ের আশায় আউশ ধান চাষে মনোযোগী হচ্ছে বগুড়ার চাষিরা। এ জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় আউশ চাষের প্রবণতা বেশি।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাশাপাশি এখন গাবতলী, কাহালু উপজেলাতেও কিছু এলাকায় আউশ চাষ হচ্ছে। বোরো কাটা মাড়াইয়ের পর আমন চাষের আগের সময়ে প্রায় সাড়ে তিনমাস জমি পড়ে থাকে। অনেকেই তাই জমি ফেলে না রেখে ৩ মাস শ্রম দিয়ে বাড়তি ফসল হিসেবে আউশ চাষ করে ঘরে ফসল তোলে। এ ধান চাষে কৃষকের খরচও কম হয়। সবচেয়ে বেশি আউশ চাষ হয়ে থাকে সারিকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম ও শেরপুর উপজেলায়। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট এলাকায় এই ধানকে বলা হয় বর্ষালী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রের তথ্য মতে গত বছর জেলায় আউশ চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর। খোলা বাজারে চাল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে ২.৮ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে জেলায় আউশ চাল উৎপাদন সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪শ’ ৮০ মেট্রিক টন। মাঠ পর্যায়ে গত ১৫ মে’র আগে থেকে চাষিরা জমি তৈরী করে আউশ চাষ শুরু করেছে। কোথাও চারা লাগানো শেষ হয়েছে আবার কোথাও চারা লাগানোর কাজ করছে। চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে সাধারণ আউশ ও নেরিকা জাতের আউশ চাষি ৭ হাজার ৭০০ জনকে প্রণোদনা প্রদান করা হয়েছে। সরকারিভাবে আউশ চাষিদের মধ্যে বিঘা প্রতি বীজ ৫ কেজি, সার ৪০ কেজি, সেচের জন্য ৪শ’ এবং নেরিকা জাতের আউশ চাষিদের জন্য বাড়তি আগাছা পরিস্কারের জন্য ৪শ’ টাকা করে প্রণোদোনা প্রদান করা হয়েছে।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর, মহেশপাড়া, ভিকনেরপাড়া, খাবুলিয়া, সরলিয়া, মহব্বতের পাড়া, মিলনেরপাড়া, পাকুল্লা, চারালকান্দি, শ্যামপুর, সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন, শিহিপুর, জাহানেরপাড়া, বাঁশহাটা, দিঘলকান্দী, লোহাগাড়া, মূলবাড়ী, ভেলুরপাড়া, কর্পূর, বালুয়াহাট, আগুনিয়াতাইড়, মধুপুর, চরমধুপুর, হরিখালী, হাঁসরাজ, কুশাহাটা, কোড়াডাঙ্গা, চরপাড়া, সোনাকানিয়া, গোসাইবাড়ী, ঠাকুরপাড়া ও হাটকরমজা এলাকায় কৃষকদের ধান রোপনে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে দেখা গেছে। এছাড়া বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি, কান্তনগর, সরুগ্রাম, জোড়শিমুল, গজারিয়া, শিমুলবাড়ি, বৈশাখী, রাধানগরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে রোপা আউশ ধান চাষ হয়েছে। বোরো ধান ঘরে তোলার পরই রোপা-আউশ মৌসুমের ধান চাষে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। সারিয়কান্দিতেও কৃষকরা জমি তৈরি করে চাষ শুরু করেছে। প্রতিবিঘা জমি চুক্তিতে ধান রোপন করছে কৃষক। প্রতি বিঘা জমি ১৮শ’ থেকে দুই হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে ধান রোপন করছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় সাড়ে তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকায় দিন মজুরিতে শ্রমিক সংগ্রহ করে ধান রোপন করছে।
সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাহ উদ্দিন সরদার জানান, চলতি বছর বগুড়ার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে এবার ধান রোপনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহাদুজ্জামান জানান, বোরো ও রোপা আমন মৌসুমের মাঝের ফাঁকা তিন মাসে এখানকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি ফসল হিসেবে এই ধান চাষ করে আসছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। উপজেলায় এবার ২ হাজার হেক্টর জমিতে প্রাথমিক ভাবে আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষের জমি বাড়তে পারে উপজেলায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।