Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসের সমালোচনায় এমপিরা

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায়

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার ঃ দশম জাতীয় সংসদে বিএনপি না থাকলেও সরকারি দলের সমালোচনায় এখনো সবল বিএনপি। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তীব্র সমালোচনায় ছিলেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।
একইসঙ্গে তারা ব্যাংকে আমানতসহ কয়েকটি সেক্টরে শুল্ক আরোপের বিরোধীতা করেন। গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এরআগে অধিবেশনে দিনের কার্যসূচীতে নির্ধারিত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, সঞ্চয় এবং ফিক্সড ডিপোজিটের ওপর কর আরোপ করা ঠিক হবে না। সাধারণ মানুষ, স্বল্প বেতন পাওয়া মানুষ ব্যাংকে টাকা জমা রাখে। এখানে শুল্ক আরোপ করা ঠিক হবে না। নিম্ন আয়ের মানুষকে অব্যাহতি দিয়ে ধনাঢ্যদের ওপরে কর আরোপ করা হোক। তিনি আরো বলেন, আমি কেবিনেটের সদস্য। কেবিনেটে এই বাজেট পাস হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কথা বলা নৈতিকতা বিরোধী। তবে আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। তাদের কথা বলতে হবে। সঞ্চয়পত্রের সুদ না কমানোরও দাবি জানান তিনি।
মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, খালেদা জিয়া আর তার পুত্র যে কাজে পারদর্শী, সেই কথাই উনি বলবেন। কিন্তু কিভাবে চুরি হল সেটা বলতে পারেন নি। উনার মাথা খারাপ, উনাদের সময় ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট হত। আর এখন ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট হয়। দেশের উন্নয়নের খবর রাখে না বলেই খালেদা জিয়া ইচ্ছামতো কথা বলছেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যত বধ্যভূমি আছে, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ হয়েছে সব জায়গায় একই ধরনের স্মৃতিস্তম্ভ করা হবে। সব মুক্তিযোদ্ধার কবর একই ডিজাইনে করার প্রকল্প পাস হয়েছে। যাতে একশো বছর পরেও নতুন প্রজন্ম বুঝতে পারে এটা একজন মুক্তিযোদ্ধার কবর। পাকিস্তানি ও রাজাকারদের ঘৃণ্য কাজ স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য ঘৃণাস্তম্ভ করার পরিকল্পনাও রয়েছে, যাতে মানুষ ঘৃণা জানাতে পারে। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করার জন্য প্রতি জেলা-উপজেলায় স্মৃতিস্তম্ভ করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক আলী আশরাফ এমপি তার বক্তব্যে বলেন, ব্যাংকে জমানো টাকার ওপর শুল্ক বাড়িয়ে অর্থমন্ত্রী জনগণের মধ্যে আতংক তৈরি করেছেন। এতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আরও যাবে। ব্যাংকে রাখা টাকা থেকে আপনি কয়টাকা পাবেন? অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এবার অনেক বড় বাজেট দিয়েছেন। কিন্তু বাজেট যদি বাস্তবায়ন না হয তাহলে সফলতা কোথায়। বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যেই তো রয়েছে আসল সফলতা।  সরকারি দলের সদস্য ডা. দীপু মনি এমপি বাজেট আলোচনায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলকে ভ্যাটের আওতার বাইরে রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে অনেক মধ্যবিত্ত সন্তান পড়ে। এই প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাটের আওতায় আনলে একটা বৈষম্যের বিষয় এসে যেতে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রাখা যেতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সেক্রেটারি অব স্টেট হিলারি ক্লিনটনের যোগসাজস তদন্তে দেশটির উদ্যোগ নিয়েও কথা বাংলাদেশের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ড. ইউনূসের বিষয়ে হিলারি ক্লিনটন কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল সে বিষয়ে তাদের সিনেট কমিটি তদন্ত করছে। পশ্চিমা বিশ্ব কিছু কিছু দেশে তাদের ডমিনেশন প্রতিষ্ঠার জন্য লোক খুঁজে বেড়ায়। আমাদের দেশে কিছু মানুষ বসে থাকে, তারা সেই তল্পিবাহক হবেন এবং দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেবেন। পশ্চিমা প্রভুদের তল্পিবাহকরা আর কেউ নয়, এরা নব্য মীরজাফর। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ব্যাংক আমানতের উপর শুল্ক আরোপে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, ব্যাংকে মানুষ টাকা রাখবে। এক লাখ টাকা রাখলে ৮০০ টাকা দিতে হবে। আগে ৫০০ টাকা দিতে হতো। এটা নিয়ে তুঘলকি কান্ড চলছে। সারাদেশে আলোচনা চলছে। এটা আগে যা ছিল তাই রাখলে ভালো হয়। তা না হলে মানুষের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়বে। তিনি আরো বলেন, ভ্যাট নিয়ে অনেকে কথা বলছে। ভ্যাট আমরা দিচ্ছি। এই ভ্যাটটি কোষাগারে জমা হয় কম। যেভাবেই হোক এনবিআরকে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আমার ভ্যাট যাতে কোষাগারে জমা হয় সেটি নিশ্চিত করতে অ্যাপ করা যেতে পারে। তিনি প্রস্তাব করেন, এই ভ্যাটের টাকা ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করতে হবে। সিনিয়র সিটিজেন হলে ওই টাকা পেনশন হিসেবে দিতে হবে। এতে ভ্যাট প্রদানে সবাই উৎসাহী হবে। ভ্যাট কমানোর আহŸান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সদস্য টিপু মুনশি এমপি বলেন, ভ্যাটের কথা এসেছে। অনেকে মনে করছেন এটা সহনীয় নয়। আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী এটা বিবেচনা করবেন। সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ না করে খাত ভিত্তিক করা যেতে পারে। তিনি আরো বলেন, পোশাক খাতে উৎসে কর বাড়লে ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ বাড়বে। যা তৈরি পোশাক খাতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে তিনি দাবি করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ