পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে রক্ত সঞ্চালনের বাইপাস জরুরি বলে জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। আর এই টেকনোলজি বাংলাদেশে তো নেই বরং সিঙ্গাপুর, ব্যাংককেও নেই। কেবল আমেরিকা ও জার্মানির দুটি সেন্টারে এই চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন চিকিৎসকরা।
গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ (এফএম) সিদ্দিকী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা হচ্ছে- যদি জীবন বাঁচাতে চান তবে রক্ত সঞ্চালনের বাইপাস করতে হবে। যেটাকে টিপস বলা হয়। কিন্তু এই টেকনোলোজিটা বাংলাদেশে তো নেই বরং আশেপাশের সিঙ্গাপুর বা ব্যাংককেও নেই। এটা দুই একটা সেন্টারে হয়ে থাকে যেটা আমেরিকা বা জার্মানিতে আছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আপাতত স্থিতিশীল আছেন। গত ২৪ ঘন্টায় তার রক্তক্ষরণ হয়নি। তবে এ ধরনের রোগীর পুনরায় রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। তাকে চিকিৎসার যে ধরনের প্রযুক্তি দরকার সেসব আশেপাশের দেশ তো নেই এমনকি সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককেও নেই। সুতরাং তাকে দ্রুত অ্যাডভান্স সেন্টারে নেয়া জরুরি।
মেডিকেল বোর্ডের এই চিকিৎসক বলেন, বেগম জিয়া মারাত্মক ঝুঁকিতে আছেন। আমরা সর্বোচ্চটা করে যাচ্ছি। তিনি দৃঢ় মনোবল ধরে রাখেন। যে কারণেই আমরা ধৈর্য সহকারে কাজ করতে পেরেছি। এ কথা তো ঠিক যে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) কিছু হলে আমাদের খারাপ লাগবে।
ডা. এফ এম সিদ্দিকী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বহুদিন ধরে নানা রোগে আক্রান্ত। তিনি গত ১২ নভেম্বর দুর্বল অনুভব করলে তাকে পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে লিভারের সমস্যার কথা বিবেচনায় নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওইদিন রাত ৯টা ২০ মিনিটে খুবই রক্ত বমি হয়। বুঝতে পারি যে তার খাদ্যনালীতে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। তাকে জীবন রক্ষার উদ্দেশ্যে ফ্লুইড দেয়া শুরু হয়। দ্রুত রক্ত দেয়া হয়। প্লাজমা ও ফ্লুইড দেয়া হয়। একপর্যায়ে বিষয়টি খুবই দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দ্রুত এন্ডোসকপির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু হয়। তখন লিভারের সিরোসিসের পরীক্ষা হয়। দেখা গেছে যে, ৬টা ব্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে কোনোমতে তাৎক্ষণিক রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস ও হার্ট ফেইলিউরের রোগী। উনার হার্ট ফেইউলিয়র এমন পর্যায়ে থাকে যে কোনো ডিকম্পেসেশন হলে হার্ট ফেইলিউর হয়। তবুও রাত তিনটা পর্যন্ত চেষ্টা করে আমরা তার পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম হই। এরপর নতুন ঔষুধ দিয়ে তাকে তিনদিন পর্যবেক্ষণে রাখি। ১৪ নভেম্বর ইন্টারভেনশন করি। ১৭ নভেম্বরের পর আবারো তার রক্তক্ষরণ হয়। আমরা হিমোগ্লোবিন করি। তার হিমোগ্লোবিন করি। কারণ প্রথমবার ১৩ নভেম্বর হিমোগ্লোবিন ৫.৪ এ নেমে গিয়েছিলো। ৪ ব্যাগ রক্ত দিয়ে ৯ পর্যন্ত উঠেছিল। আবার সেটা ৭ এ নেমে আসে। এভাবে পরের হিমোগ্লোবিনও কমে যায়। এরপরই আমরা জীবন রক্ষার্থে অবিরত আইভি ইনফিউশন দিতে থাকি। ব্লাড দিতে হয়েছে অব্যাহতভাবে। এভাবে তাকে আমরা কিছুটা স্থিতিশীল করতে সক্ষম হই। তবে ৫ দিনের বেশি সেই ইঞ্জেকশনটা দেয়া যায় না। ২১ নভেম্বর আবারো তার শরীর খারাপ হয়।
প্রফেসর এফএম সিদ্দিকী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শরীর ২৩ নভেম্বর থেকে আবার অবনতি হয়। ব্লাড প্রেশার ও হিমোগ্লোবিন কমে যায়। টয়লেটের সাথে কালো স্টুল যায়। পুরো ক্লোন রক্ত জমাট বেঁধে কালো হয়ে গেছে। পুরো ক্লোন রক্তে জমাট হয়েছে। দুইদিন খুবই রক্তক্ষরণ হয়েছে। ২৪ নভেম্বর রাতে তাকে আবার জেনারেল ওটিতে নেয়া হয়। যাতে সিরিয়াস কিছু হলে তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা নেয়া যায়।
এক প্রশ্নোত্তরে এফএম সিদ্দিকী বলেন, রক্তক্ষরণে খালেদা জিয়ার মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। কারণ রক্তক্ষরণ বন্ধের প্রযুক্তি আমাদের দেশে নেই। উনার তিনবার ইতোমধ্যে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আবারো রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এরইমধ্যে তাকে অ্যাডভান্স সেন্টারে না পাঠালে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। যত দ্রুত সম্ভব তাকে বিদেশে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে শিফট করাও মুশকিল হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আজ থেকে ৪ মাস আগে যদি বিদেশে নেয়া হতো তাহলে এই রক্তক্ষরণ হতো না। কারণ তার শরীরে যেসব প্রযুক্তির ব্যবহার করে চিকিৎসা দিতে হবে সেসব প্রযুক্তি আশেপাশের কোনো দেশেই নেই।
মেডিকেল বোর্ডের ডা. মো. শামসুল আরেফিন বলেন, লিভারের ভেতরে প্রেশার কমানোর জন্য যে টেকনোলোজি দরকার সেটা নেই। রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য আমেরিকা, জার্মানিতে অ্যাডভান্স সেন্টার আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- খালেদা জিয়ার চিকিৎসক বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ডা. একিউএম মোহসীন, প্রফেসর ডা. মো: নূর উদ্দিন, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. আল মামুন প্রমুখ। খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়েই চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।