Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সুবিচার প্রতিষ্ঠা ও আইন প্রতিপালনে রমযানের ভূমিকা

| প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিচারপতি মোহা. আব্দুস সালাম
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার। (সুরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)
রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোযা রাাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে, সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৫)
(১) আলিফ লাম মীম। (২) এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই; পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য, (৩) যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে। (৪) এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে। (৫) তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথ প্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। (সূরা বাকারা, আয়াত-১, ২, ৩, ৪, ৫)
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেন, রোযা আমার জন্য, আর আমিই ইহার প্রতিদান দিব।
তোমরা যখন মানুষের মধ্যে বিচার কার্য পরিচালনা করিবে/ফায়সালা করিবে, তখন ন্যায় পরায়নতার সহিত বিচার ফয়সালা করিবে। (সূরা নিসা, আয়াত- ৫৮)
হে মুমিন-ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং আনুগত্য কর আল্লাহর রাসূল (সা.) এর এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী/বিচার ফয়সালাকারী। (সূরা নিসা, আয়াত-৫৯)
ইসলামের স্তম্ভ ৫টি। রমযান তার মধ্যে অন্যতম। রমযানের বুনিয়াদ ও আইনগত অস্তিত্ব ৩টির উপর (১) না খাওয়া, (২) পান না করা এবং (৩) স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকা।
সুবহে সাদেক হইতে সূর্য্যাস্ত পর্যন্ত ৩টি না সূচক আদেশ পালন।
রমযানের বৈশিষ্ট্য- দু’টি। ১. সকল কামনা-বাসনা বর্জন রোযার আসল তাৎপর্য। ২. রমযান শয়তানের সৈন্যকে ধ্বংস করে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘শয়তান মানব দেহে প্রবাহিত রক্তের ন্যায়, সুতরাং ক্ষুধা দ্বারা ইহার রাস্তা সংকীর্ণ করিয়া দাও।’
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘রোযা ঢাল স্বরূপ, যতক্ষণ এটা বিদীর্ণ করা না হয়।’
রোযার জন্য ছটি বিষয় অতি গুরুত্বপূর্ণ। ১. না জায়েজ দর্শন থেকে চক্ষুকে বাঁচান। যা দেখিলে আল্লাহর দিক থেকে মন সরে যায়। ২. রসনা/জিহŸার হেফাজত করা। যেমন মিথ্যা বলা, গীবত, কুটনামি, অন্যের বদনাম করা, বকাবকি, গালি-গালাজ ইত্যাদি থেকে বাঁচা। ৩. কর্ণের হেফাজত করা, যা বলা না জায়েজ, শুনাও না জায়েজ। যেমন গান-বাজনা। ৪. অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে না জায়েজ কাজ থেকে বাঁচান। ৫. ইফতারের সময় একেভারে পেট ভরে ভোজন না করা। ৬. রোযা আল্লাহর দরবারে গৃহীত হওয়ার উপযোগী হইয়াছে কিনা এই আশংকা অন্তরে পোষণ করা।
হযরত সালমান ফার্সী বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী (১) রমযান মাসের ১ম অংশে আল্লাহর খাস রহমত নাযিল হয় ও বিতরণ হয়, ২য় অংশে/মধ্যম অংশে আল্লাহ ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং ৩য় অংশে তথা শেষ ১০ দিনে জাহান্নামের অগ্নি হতে মুক্তি প্রদান করা হয়। অর্থাৎ রমযান মাসের আমল দ্বারা এক মাস দিনের বেলা মুত্তাকীন ধর্মভীরু বান্দা হালাল রিযিক খাওয়া থেকে বিরত থেকে যে আত্ম সংযমের পরিচয় প্রদান করে, তার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা বাকি ১১ মাস হারাম রিযিক খাওয়া থেকে বিরত থাকার ক্ষমতা ও তাওফিক দান করেন এবং রমযানের আমলের দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা একজন মানুষকে খাঁটি মুত্তাকীন অর্থাৎ নিষ্পাপ ও মাসুম বানিয়ে দেয়। প্রকৃত মুত্তাকীন হওয়া ছাড়া একজন বিচারকের পক্ষে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিগণের জন্য যে ঈড়ফব ড়ভ পড়হফঁপঃ ভড়ৎসঁষধঃবফ রয়েছে তাতেও বলা হয়েছে যে, ঞযব ঔঁফমবং গঁংঃ নব এড়ফভবধৎরহম অর্থাৎ বিচারপতিগণে মধ্যেও ধর্মভীরুতার ও আত্ম সংযমীয় গুণাবলী অবশ্যই থাকতে হবে। শরিয়ত সংগত কারণ ছাড়া কোন বিচারক বা বিচারপতি রোজা বর্জন করিলে তার পক্ষে মুত্তাকী হওয়া সম্ভবপর নয়। ন্যায়বিচারক মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। কেবলমাত্র ইসলাম ধর্ম ন্যায়বিচারের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছে।
যে সব লোক আল্লাহ তা‘আলা যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই কাফের। (সূরা আল মায়িদা, আয়াত- ৪৪)
যে সব লোক আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই জালেম। (সূরা আল মায়িদা, আয়াত- ৪৫)
যারা আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই পাপাচারী। (সূরা আল মায়িদা, আয়াত- ৪৭)
হযরত মহানবী (সা.)-এর বিচার কাজের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বিচার করার সময় বাদি-বিবাদী উভয় পক্ষের শুনানীর পর পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান-গ্রহণের পর ফায়সালা প্রদান করা। অর্থাৎ রাসূল (সা.)-এর বিচার ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও সংশয়মুক্ত। বস্তুতঃ নবী করিম (সা.)-এর এবং ইসলামের বিচার কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল আইনের ভিত্তি ছিল আল্-কুরআন। ইসলামে মান-সম্মান বা ইজ্জত মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। পরস্পরের জান-মাল ও ইজ্জত সম্ভ্রমের উপর হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নাই। রাষ্টের নাগরিক হিসাবে প্রত্যেক নিরন্ন বাস্তুহারা বঞ্চিতদেরও অধিকার ইসলামী মানবাধিকারে সংরক্ষিত। তাই ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের হক ও অধিকার যার যার কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিধান কেবল ইসলামী রাষ্ট্রেই রয়েছে।
আইন প্রতিপালনে রমযানের ভূমিকা : যদি এমনটি দেখা যায়, রাষ্ট্রের আইন বনাম শরীয়তের বিধান, তাহলে মানুষ কোনটি মানবে? হতাশা, বিষণœতা ও সহিংসহার তুষের আগুনের মত নীরবে জ্বলছে পশ্চিমা বিশ্ব, আমেরিকাও বাদ নেই। সমকামিতায় অভ্যস্ত নারী-পুরুষকে তাদের অবাধ যৌন সংস্কৃতি নির্বিঘœ করার কাজে ৩০ লাখ ডলার তহবিল গঠনের কথা গৎং. ঐরষষধৎু ঈষরহঃড়হ ঘোষণা করেন। ২০১২ সালের ২৭ মে সমকামীদের বিয়ের পক্ষে মত দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। আমেরিকার অধিকাংশ নাগরিক সমকামীদের বিয়ের পক্ষে বলেই তিনি তাদের সমর্থন লাভের জন্য এমত প্রকাশ করেন। এজন্য ‘নিউজ উইক’ তার ছবি দিয়ে প্রচ্ছদ করেছে। সে তুলনায় প্রাচ্যে আমরা বাংলাদেশীরা অনেকাংশে ভালো আছি। অঞ্চল হিসেবে আমরা ধর্মপ্রাণ-ধর্মপ্রবণ। এখানকার সংস্কৃতি মানবিক ও পরিচ্ছন্ন। পবিত্রতা ও নীতি- নৈতিকতা বাংলাদেশে স্বীকৃত। শতকরা ৯০% এর বেশি মুসলমান। দেশ হিসেবে বাংলাদেশ চমৎকার। শিশুদের মধ্যে যৌনতা, বিবাহবহির্ভূত যৌন জীবন, কুমারী মাতা, পিতৃ পরিচয়হীন সন্তান প্রভৃতি প্রচলনের জন্য পশ্চিমারা আমাদের সমাজকে ঞধৎমবঃ করে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু সফল হয়নি। গত ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম গ্রহণকারী সব শিশুর ৪১% ভাগ কুমারী মায়ের সন্তান। আইন প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃবর্গকে সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। আইন রচয়িতাদের প্রজ্ঞা ও যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। জনগণের জীবনধারা, রীতি-নীতি, ঐতিহ্য, ধর্ম, সংস্কৃতি ও আত্ম মর্যাদা বোধের আলোকে আইন, বিধান, নীতিমালা এবং বিধি বিধান করতে হবে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক আইন, বৈশ্বিক নীতিমালা ও পশ্চিমাদের নির্দেশনা বিনা বাক্য ব্যায়ে কিছুতেই মেনে নেওয়া যাবে না। কারণ পশ্চিমাদের জীবনবোধ সংস্কৃতি ও অভিজ্ঞতা ভিন্ন, ধর্ম ও নৈতিকতা নগণ্য এবং তাদের মূল্যবোধ বাস্তবেই বিপন্ন।
রমযানুল মোবারকের আলোকে ও আমলের পবিত্রতায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও আইন প্রণেতাদের ‘লায়াল্লাকুম তাত্তাকুন’-এর গবেষণামূলক ব্যাখ্যার আলোকে মুত্তাকীনের গুণাবলী অর্জনে প্রয়াসী ও আন্তরিক হতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশ যেসব আইন দিয়ে চলবে ও শাসিত হবে এর প্রত্যেকটি আইন যেন দেশটির প্রায় শত ভাগ মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস, জীবনবোধ ও প্রতিষ্ঠিত সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ হয়। সেদিকে গভীর দৃষ্টি রাখতে হবে। শরীয়তসম্মত সময় মোতাবেক সেহেরী ও ইফতার না করলে রোজা প্রাণহীন উপবাসে পরিণত হবে। মুত্তাকীন-পরহেজগার লোক কোন দিন অন্যায় কাজ করতে পারে না, হারাম খানা খেতে পারে না, গুনাহ্ ও পাপের কাজ করতে পারে না। আইন অমান্যকারী হতে পারে না। কাজেই এটা প্রমাণিত যে, আইন প্রতিপালনে রমযানুল মোবারকের ভূমিকা অপরিসীম ও অধিক কার্যকর।
৬১১৩ বছর রমযান ছিল, কিন্তু এতেকাফ ছিল না। রমযান মাসে এতেকাফ সুন্নাতে মোয়াক্কাদা কেফায়া। গুনাহ থেকে মাফ এর জন্য গুনাহ থেকে জালিয়ে পুড়িয়ে ফেলার জন্য রমযান ও সিয়াম ফরয করা হয়েছে।
সত্যানুরাগী খোদাভীরু মুত্তাকী আলেম ও মাশায়েখই জাতির আসল প্রাণ কেন্দ্র। তাদের অস্তিত্বের মধ্যেই সমগ্র জাতির জীবন নিহিত। (তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন পৃষ্ঠা-৩৫১)
আমি কারুন, ফেরাউন ও হামানকে ধ্বংস করেছি। মুসা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করেছিল অতঃপর তারা দেশে দম্ভ করেছিল। কিন্তু তারা জিতে যায়নি। (সুরা-আনকাবুত, আয়াত-৩৯)
আমি নূহকে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক হাজার বছর অবস্থান করেছিলেন (হযরত নূহ আ. এর বয়স ৯৫০ বছর)। (সূরা আনকাতুত, আয়াত-১৪)
(৩৭) যারা বড় গোনাহ ও অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধান্বিত হয়েও ক্ষমা করে, (৩৮) যারা তাদের পালনকর্তার আদেশ মান্য করে, নামায কায়েম করে, পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করে। (সূরা আশ-শুরা, আয়াত-৩৭ ও ৩৮)
যে ক্ষমা করে ও আপস করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে। (সূরা আশ্-শুরা, আয়াত-৪০)
অবশ্যই যে সবর করে ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ। (সূরা আশ্ শুরা, আয়াত-৪৩)
আল্লাহ্ তা‘আলা মুত্তাকীনদের বন্ধু। (সূরা জাছিয়াহ্, আয়াত-১৯)
(৪৯) তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। (৫০) অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ,ক্ষমতাশীল। (সূরা-আশ্ শুরা, আয়াত-৪৯, ৫০)
নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্, অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং চিন্তিত হবে না। (১৪) তারাই জান্নাতের অধিকারী। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। তারা যে কর্ম করত, এটা তারই প্রতিফল। (১৫) আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভ ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে সময় লেগেছে ত্রিশ মাস। (সূরা আহকাফ, আয়াত-১৩, ১৪ ও ১৫)
আল্লাহ্ তা‘আলা কাফেরদের জন্য নূহ-পতœী ও লূত পতœীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তারা ছিল আমার দুই ধর্মপরায়ন বান্দার গৃহে। (সূরা আত্ তাহরীম, আয়াত-১০)
আল্লাহ্ তা‘আলা মুমিনদের জন্য ফেরাউন-পতœীর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। সে বলল, হে আমার পালনকর্তা! আপনার সন্নিকটে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করুন, আমাকে ফেরাউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে জালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন। (সূরা আত্ তাহরীম, আয়াত-১১) যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয় এবং রাসূলুল্লাহ্ এর তরীকার উপর আমল করে এবং নামাযে এখলাস থাকে তার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে।
হযরত হোযাইফা রাযি. একজন লোককে দেখলেন তাড়াতাড়ি নামায পড়ছে, রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ায় না। জিজ্ঞাসা করে জানলো ৪০ বছর যাবৎ এইভাবে নামায পড়ে। হযরত হোযাইফা রাযি. বলেন এই অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে তুমি রাসূল (সা.)-এর মিল্লাতে দাখেল থাকবে না। নামাযের সাথে আল্লাহর ওয়াদা ও কুদরত জড়িত।
নিজের কাজের জন্য ও খেদমতের জন্য খাদেম নিয়োগ করা, যদিও দাসি নিয়োগ করা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছেদ করার শামিল। নিজের সব রকম সমস্যা ও সংকটের সমাধানের জন্য মসজিদ সর্বোত্তম জায়গা। মসজিদে ২ রাকাত নামায পড়া ও আল্লাহর কাছে এখলাসের সাথে দোওয়া করা ও কান্না কাটি করলে আল্লাহ সংকট থেকে উদ্ধার করবেন।
যার দিকে তাকালে মনে হয় তিনি কুরআন ও সুন্নাহর অনুসারী এবং মাথা থেকে পা পর্যন্ত তাঁর মধ্যে নবী করীম (সা.)-এর প্রতিটি সুন্নাহর আমল রয়েছে তিনিই মুত্তাকী ও পরহেযগার।
তোমরা জেনে রাখ, যিনি মুত্তাকী আল্লাহ তাদের সাথেই আছে। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৯৪)
আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদের রোজা-সিয়াম পালন করা, যথা সময়ে নামায আদায় করা, তারাবীর নামায আদায় করা, আল্ কোরআনের বিধান জানা ও মানা এবং রাসূল (সা.)-এর তরীকা মতে চলে সুবিচার প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার তাউফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।
লেখক : সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন