Inqilab Logo

বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর -বেগম খালেদা জিয়া

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশ থেকে ২০১৮ সালে সব জুলুম অত্যাচার অবিচার বিদায় নেবে। বছরটি হবে জনগণের বছর। নতুন অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই বাজেটের মাধ্যমে সরকার মানুষের পকেটে হাত দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে বিশদলীয় জোটের অন্যতম শরীক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ইফতার মাহফিলে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, দেশে আইন-শৃঙ্খলা অবনতির পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে। এ আওয়ামী লীগ মানুষকে ভাওতা দেয়ার জন্য অনেক মিথ্যা কথা বলে কিন্তু কাজে কখনও পরিণত করে না। তারা মানুষকে আশা দিয়েছিলো ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে কিন্তু আজকে ১ কেজি চালের দাম ৫০/৬০ টাকা। গরিব মানুষের অবস্থা খারাপ। মাছ-মাংসের দামের কথা বাদই দিলাম। কোন সবজি ৪০-৫০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। তার উপর আবার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেই যাচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে প্রত্যেকটা জিনিসপত্রের দাম বেশি। তারপরে গ্যাসের দাম প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে চলেছে, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে, পানির দাম বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। এখন কি উন্নয়ন করছে তারা? এতো বিদ্যুৎ দিবে বাংলাদেশ নাকি ঝলমল করবে। কিন্তু এখন ঢাকা শহরেই  লোডশেডিং বেড়ে গেছে। সারাদেশ অন্ধকারে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সত্যিকার নমুনা। আর একেকটা উন্নয়ন করে, কিছু ওভার ব্রিজ-ট্রিজ যা করে তার ব্যয় কত যে বাড়ে, ৩/৪ গুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে তারা এক একটা প্রকল্প করছে।
খালেদা জিয়া বলেন, আজকে দেশে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। কারণ বিচারবিভাগ বিচারকরা নয় নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। এদের হাত এতো লম্বা যে কিছুইকেই পরোয়া করে না। তারা কাউকে সম্মান দিতে জানে না। পুলিশ-শিক্ষকের গায়েও তারা হাত তুলছে।
তিনি বলেন, ২০১৬ সাল ছিলো আওয়ামী লীগের ব্যাংক চুরির বছর। ব্যাংকের টাকা চুরি করতে করতে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকাও চুরি করে পাচার করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনায় তদন্ত কি হয়েছে কেউ জানে না। সেই তদন্ত রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে রাখা ছিলো।  সেখানেও আগুন লাগলো।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পত্রিকা খুললেই দেখা যায় গুম-খুন। প্রতিনিয়ত গুম-খুনের ঘটনা চলছে। নারী নির্যাতন এতো বেড়ে গেছে যে, ঘরে বাইরে কেউ নিরাপদ নয়। শিশুরাও নিরাপদ নয়। তিনি আরও বলেন, এদের কাছে ভালো কি আশা করবেন, নির্বাচন আসলে তারা এতো মিথ্যা কথা বলে, অনেক উন্নয়নের ফিরিস্তি দেবে কিন্তু হিসাব চাইলে সেটা তারা মেলাতে পারবে না।
খালেদা জিয়া বলেন, এই বারের বাজেটে সরকার মানুষের পকেটেও হাত দিয়েছে। এর ফলে ব্যাংকে টাকা রাখতে কেউ সাহস করবে না। এক লাখ টাকা রাখলে বছরে ৮০০ টাকা কেটে নেবে, তাহলে থাকবে কি? তারপরও অর্থমন্ত্রী বলেন, যার ১ লাখ টাকা থাকবে সে বড়লোক। তাহলে আপনাদের হাজার হাজার কোটি টাকার কি হবে?
একাদশ নির্বাচনের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপি ও বিশদলীয় জোট প্রধান খালেদা জিয়া আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর। তিনি বলেন, ইনশা আল্লাহ ২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর আমরা বিশ্বাস করি। ২০১৮ সাল দেশের মানুষের বছর হবে এবং দেশ থেকে সকল অত্যাচার ও অত্যাচারী বিদায় নেবে। আমরা পবিত্র রমজান মাসে এই দোয়া করি।
ইফতার মাহফিলে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান ড. কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ, জামায়াত ইসলামের অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গাণি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের এমএ রকিব, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের কমরেড সাঈদ আহমেদ, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবু তাহের, খেলাফত মজলিশের মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান,  ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) রেহানা প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, ডিএল‘র সাইফুদ্দিন মনি, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম প্রমুখ।
এছাড়াও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, ইসমাইল জবিউল্লাহ, সঞ্জীব চৌধুরী, উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ ইফতারে অংশ নেন।
মূল্য মঞ্চে এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ, মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিমসহ জোট নেতাদের পাশে নিয়ে ইফতার করেন খালেদা জিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ