পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ ঈদের আমেজ ভাটা পড়েছে দর্জিপাড়ায়। সারাদেশের ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন রমরমা অবস্থা। অথচ দর্জিপাড়ার চাকা সে অনুপাতে ঘুরছে না। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, দর্জিপাড়ায় চলছে ক্রান্তিকাল। প্রতিবছর রমজানে কোয়ালিটি টেইলার্সগুলো সাধারণত পাঁচ থেকে দশ রোজার মধ্যে অর্ডার নেয়া বন্ধ করলেও এ বছর খরিদ্দারের অভাবে তারা চাঁদ রাত পর্যন্ত অর্ডার নেয়ার কথা বলছেন। এ ব্যাপারে টেইলার্স মালিকরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষ ব্যয় কমাতে ঝুঁকে পড়েছে রেডিমেড পোশাকে। দর্জিপাড়ায় পোশাক তৈরিতে উচ্চ মজুরিও এর অন্যতম কারণ। এ কারণে দর্জিপাড়া থেকে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। একই সঙ্গে দর্জি শিল্পের ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ নিয়েও বিপাকে ব্যবসায়ীরা। কারণ এই ভ্যাট কাস্টমার দিতে চায়না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ ড্রেস মেকার এ্যাসোসিয়েশনের সূত্র মতে, বাংলাদেশে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০হাজারেরও বেশি টেইলার্স আছে। এই পেশায় আড়াই লাখ শ্রমিক প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ১২লাখ পোষাক তৈরি হচ্ছে। এগুলো দেশে তৈরি না করলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। অথচ সরকার তাদেরকে কোন ধরণের সাহায্য করছেনা। তাদের মতে, লাভ না হওয়ায় অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। আবার অনেককে অচিরেই বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও দর্জি শিল্পের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ নিয়েও বিপাকে ব্যবসায়ীরা বলে জানা যায়।
রাজধানীর গুলিস্তান এলাকার রমনা ভবন, এ্যালিফ্যান্ট রোড, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া-চাঁদনিচকসহ আশপাশ এলাকার নামকরা টেইলার্সগুলো সরেজমিন ঘুরে এবং কারিগর ও তত্ত¡াবধায়কদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দর্জিপাড়ায় একটি শার্ট তৈরিতে মজুরি নেয়া হয় কমপক্ষে ৩৫০ টাকা। এভাবে একটি প্যান্টের মজুরি ৪৫০ টাকা এবং স্যুটের মজুরি ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। তবে, দোকানভেদে এই মজুরি কিছুটা বাড়তে পারে।
রমনা ভবনের প্যারাডাইজ টেইলার্সের এমডি ও বাংলাদেশ ড্রেস মেকার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সাইফুল ইসলাম শাহীন জানান, প্রতিবছর ১০ রমজান পর্যন্ত অর্ডার নেয়া হয়। কিন্তু এ বছর তো মনে হয় চাঁদ রাত পর্যন্ত অর্ডার নিতে হবে। তিনি অর্থনৈতিক মন্দা ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটকে এ ব্যবসার মন্দার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। সাইফুল ইসলাম শাহীন বলেন, রমনা ভবন ছাড়াও মিরপুরে তার ২টি শো-রুম আছে। প্রতিটিরই একই অবস্থা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দর্জি শিল্পে ক্রান্তিকাল চলছে। প্রতিবারের ন্যায় এ বছর দর্জিপাড়ায় ঈদের আমেজের ছিটেফোঁটাও নেই বললেই চলে। এছাড়া শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কারণে পোশাক তৈরিতে উচ্চ মজুরিও প্রভাব পড়েছে এ খাতে। এই বর্ধিত দামে খরিদ্দাররা দর্জিপাড়ায় এসে পোশাক বানানোর উৎসাহ হারিয়ে রেডিমেড পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন।
রমনা ভবনের এম আকবর টেইলার্সে গিয়ে দেখা গেছে, একজন খদ্দেরও নেই। প্রতিষ্ঠানের মালিক আকবর হোসেন জানান, আগের বছরের চেয়ে ব্যবসা খারাপ। অর্ডার নেই, তাই বসে আছি।
একই ভবনের সানলাইট, বøু মুন, মিডল্যান্ড, আইডিয়াল, সেঞ্চুরি, ফাইভমাস্টার, ম্যানচেস্টার, ড্রেস কিং এসব নামকরা টেইলার্সেও ঘণ্টাব্যাপী ক্রেতার আনাগোনা ছিল না। সবারই একই কথা অর্ডার ভালো না। এদিকে রাজধানীর এ্যালিফ্যান্ট রোডের ঝিল টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স, রেমন্ড, মকবুলস, ফপ্স, গোল্ড স্টার, সেঞ্চুরি, টপটেনসহ অধিকাংশ দোকানে একই অবস্থা বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে দর্জি পাড়ার ভাটা অবস্থা প্রভাব পড়েছে রমনা ভবনের থান কাপড়ের দোকানেও। অধিকাংশ দোকানে কাপড়ের ব্যবসাও কমে গেছে। নিউ ফেন্সী কর্ণার, চয়নিকা, সিকদার, শূভ বিতান, সুরমা, অপূর্ব ফেব্্িরক্্রসহ অধিকাংশ দোকান ক্রেতা শূণ্য দেখা গেছে। নিউ ফেন্সী কর্ণারের স্বত্তাধিকারী সরদার পলাশ জানান, দোকানে কাষ্টমার নেই। এই অবস্থায় বজায় থাকলে তাদের ব্যবসা করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তিনি জানান, গত বছর হরতাল থাকলেও বেচা-বিক্রি ভালোই ছিল। এবার তার অর্ধেকও বিক্রি নেই। মানুষের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। যার প্রভাব পড়েছে এই বাজারেও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।