Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতেই হবে - ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী

পাঠ্যসূচি শিক্ষানীতি নিয়ে চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে

| প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম



স্টাফ রিপোর্টার ঃ তাহরীকে খাতমে নবুওয়্যাতের আমির আল্লামা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, দ্বীন হল ইসলাম, দ্বীনের দাওয়াতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যুগে যুগে নবী ও রসূলগণ পৃথিবীতে এসেছেন। সবার পরে এসেছেন আখেরী নাবী ও নাবীকূল সম্রাট মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আল্লাহ তায়ালা আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বৎসর পূর্বে তাঁকে সর্বশ্রেষ্ঠ নাবী ও রাসূল হিসেবে প্রেরণ করে নবুওয়্যাত ও রিসালাতের দরজা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে অবশ্যই কোন নাবী কিংবা রাসূল আসেননি, কিয়ামত পর্যন্ত আসবেন না। এ আকীদা বা বিশ্বাসকেই বলা হয় আকীদায়ে খাতমে নবুওয়্যাত। এ আকীদায় যার বিশ্বাস থাকবে না নিঃসন্দেহে সে কাফেরে পরিণত হয়ে যাবে এবং তার পরিচয় হবে অমুসলিম। তাকে যে কাফের মনে করবে না সেও কাফের হয়ে যাবে; কারণ ইসলামের মূল হল ঈমান আর আকীদা । এ বিশ্বাসে সামান্যতম কুফর বা শিরক থাকলে কারও মুসলমান হওয়ার পরিচয় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। খাতমে নবুওয়াতের আন্দোলন বা খাতমে নবুওয়্যাতের জিহাদ সবচেয়ে বড় আন্দোলন সবচেয়ে বড় জিহাদ। গতকাল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে তাহরীকে খাতমে নবুওয়্যাত আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও আলোচনা মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য মাওলানা ড. মুহাম্মাদ ঈসা, মাওলানা এহসানুল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আব্বাসী, মাওলানা এমদাদউল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, মাওলানা ড. হুজ্জাতুল্লাহ নকশবন্দী ও ডোবরা দরবারের পীর সাহেব ওবায়েদ বিন নাছের।
পীর সাহেব জৈনপুরী বলেন, ইসলামের ইতিহাসের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালী যুগ অর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার বৎসর আগে দ্বীনের পক্ষে কাফের ও মুশরেকদের পরিচালিত সম্মিলিত যুদ্ধে ১০ বছরে ইসলামের পক্ষে ও বিপক্ষে মোট মানুষ নিহিত হয়েছিল মাত্র ১০১৮ জন অথচ হযরত আবুবকর সিদ্দিক (রাঃ)-এর খেলাফতকালে মুসায়লামাতুল কাজ্জাবের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে এক দিনে ২৪শ’ সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছেন। যার মধ্যে ৭শ’ সাহাবী কুরআনের হাফেজ ছিলেন। ভন্ড মুসায়লামা ও তার অনুসারীদের ধ্বংসের মাধ্যমে হযরত আবূ বাকার (রাঃ) সে সময় উম্মতকে আকীদায়ে খাতমে নবুওয়্যাত বিরোধী চক্রান্ত থেকে উম্মতে মুসলিমাকে রক্ষা করেছিলেন। যখনই খাতমে নবুওয়্যাতের আকীদার বিপক্ষে চক্রান্তের জন্য মিথ্যা নবুওয়্যাতের দাবীদার ভন্ড মুসায়লামারা দেখা দিলে উম্মতের মুসলমানগণ তাদের ব্যাপারে এক মুহূর্তের জন্যেও আপোষ করেননি। সকল চক্রান্তসহ তাদেরকেও নির্মূল করেছেন। ইসলামের মূল ভিত্তি আকীদায়ে খাতমে নবুওয়্যাতের বিপক্ষে সবচেয়ে জঘন্য চক্রান্ত করেছে কুখ্যাত ইংরেজ বেনিয়ারা। কাদিয়ানের কুখ্যাত কাফের কাজ্জাব মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর বিরুদ্ধে সমসাময়িক আলেম-ওলামাদের মেহনত ও প্রচার-প্রচারণার কারণে ইংরেজদের মদদপুষ্ট হয়েও মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর সকল চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যায়। শয়তান কাদিয়ানী কুখ্যাত কাফের লানতপ্রাপ্ত হয়ে জাহান্নামের কুকুরে পরিণত হয়। তারই অনুসারী কুখ্যাত কাদিয়ানীরা মার্কিন ইসরাঈল ও ব্রিটেনের মদদে মুসলমানদের আকীদা খাতমে নবুওয়্যাতের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। সরকার ও বিরোধী দল মিডিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বসে কাদিয়ানীরা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা কাদিয়ানী কুফরি মতবাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আর.এফ.এল প্রাণ পাবলিক স্কুল নামে ফ্রি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করেছে। অথচ দেশের আলেম সমাজের এ বিষয়ে তেমন কোন দৃষ্টি নাই। তাহরিকে খাতমে নবুওয়্যাতের পক্ষ থেকে পীর সাহেব জৈনপুরীর ৩ দফা দাবি হচ্ছে, স্বাধীন বাংলায় শয়তান কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতেই হবে। সরকারীভাবে কাদিয়ানীদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রচার প্রচারণা বই পুস্তক ইত্যাদি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং জাতীয় শিক্ষানীতি ও পাঠ্য পুস্তকে যে সব স্থানে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয় রয়েছে তা অনতিবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে।
পীর সাহেব বলেন, ইসলামের দৃষ্টিতে মূর্তি হারাম। তাই বাংলাদেশের কোথাও গ্রীকদেবীর মূর্তি স্থাপন করা যাবে না। ভাস্কর্য, সৌকর্য বা ঐতিহ্যের জন্য মূর্তি নির্মাণ ক্রয় বিক্রয় বা স্থাপন অকাট্যভাবে হারাম ও শরীয়ত বিরোধী। সুতরাং মূর্তি মেনে নেওয়া যাবে না। সুলতান কামাল বলেছেন, মূর্তি না থাকলে মসজিদও থাকবে না। আমাদের কথা হল মসজিদ থাকবে এদেশে সুলতানা কামালরা থাকতে পারবে না।
জৈনপুরী পীরসাহেব বলেন, বাংলাদেশ ৯৫% মুসলিম প্রধান দেশ। এদেশের পাঠ্যসূচিতে শতকরা ৫ ভাগের বেশি হিন্দু লেখকের স্থান দেওয়া যাবে না। পাঠ্যসূচি থেকে হিন্দু এবং নাস্তিক লেখকদের লেখা বাদ দেওয়ার পর সেগুলো পুনঃস্থাপনের চক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, পূর্বের চেয়েও কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে। হেফাজতের ১৩ দফা দাবির মধ্যে প্রধান দাবী ছিল রাষ্ট্রীয় ভাবে কাদীয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা। আমরা হেফাজত নেতাদের অনুরোধ করব তাদেরকে ১৩ দফার প্রথম দাবি কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা আদায় করার জন্য ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ