Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধ্যবিত্তদের ওপর করের চাপ বাড়বে

সিপিডির বাজেট পর্যালোচনা

| প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে যেসব পদ্ধতির কথা বাজেটে এসেছে, তাতে উৎপাদন ব্যয় ও ভোক্তা ব্যয় বাড়বে। সেই সঙ্গে আগামী বছর মূল্যস্ফীতিও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ওপর চাপ বাড়বে
রাজধানীর হোটেল লেকহোরে শুক্রবার ‘জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮ সিপিডি’র পর্যালোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান প্রমুখ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যেসব খাত থেকে দ্রæত রাজস্ব তোলা যায়, এমন খাত বেছে নিয়ে সেগুলোর কর বাড়ানো হয়েছে। যেমন ব্যাংকে টাকা রাখায় বা বিমানের টিকিট কেনায় কর বাড়ানো হয়েছে। যারা কর না দিয়ে বিদেশে টাকা নিয়ে যায়, তাঁদের ব্যাপারে নীতিগত কোনো কার্যকর অবস্থান না নিয়ে সৎ করদাতাদের ওপর আরও করের বোঝা চাপানো নৈতিকভাবে ঠিক না। করের চাপটা মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর বেশি আসবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, একটা বাজেট সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে তার জন্য অনুকূল প্রাতিষ্ঠানিক নীতি পরিবেশ লাগে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা সামগ্রিক বাজেট বাস্তবায়নের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাজেটে দেখা যায়নি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন মন্তব্য আছে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। রাজস্ব ব্যয় যে দেড় গুণ বাড়বে, রাজস্ব আয় ৪০ শতাংশ বাড়বেএগুলো করতে হলে একটা কর্মপরিকল্পনা ও ভিত্তি লাগবে। সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
বাজেটের কর ও আর্থিক কাঠামোর নীতির ফলে আগামী মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, চালের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি তেলের দাম না কমানো সবকিছু মিলিয়ে আগামী বছর মূল্যস্ফীতি বাড়ার আশঙ্কা রয়ে গেল। মূল্যস্ফীতি বাড়লে এটার প্রভাব প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ সব ক্ষেত্রে পড়বে।
বাজেটে কর্মসংস্থানের কোনো দিকনির্দেশনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজেটে বলা হয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, সেটা কীভাবে তা বলা দরকার ছিল। রাজস্ব আয়ের বড় অংশ ধরা হয়েছে করদাতার থেকে প্রাপ্ত। সেই করদাতার সংস্থান কীভাবে হবে সেটাও উল্লেখ করা দরকার ছিল বাজেটে।
তিনি বলেন, শুধু প্রসাশনিক কাঠামো দিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বাজেট বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সহায়তা দরকার। জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কিন্তু আমরা তা দেখছি না। এ ছাড়াও বাজেটে এডিপি বাস্তবায়নে সুর্নিদিষ্টি কোনো দিক নির্দেশনা নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় বলেন, বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ৭৬ হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আমাদের আশ্চার্য করেছে। কারণ আমাদের ২০১৬ সালে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক ঋণের সহায়তা আসে যার পরিমাণ মাত্র ২৭ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও বৈদেশিক ঋণ ব্যয় করতে পারছে না। তারপরও সরকার কীভাবে প্রায় তিনগুণ বাড়ালো তা জানি না। তাই ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস হতে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে তিনি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষায় বরাদ্দ কিছু বাড়লেও স্বাস্থ্যখাত বঞ্চিত দশায় আছে। প্রতিরক্ষায় বরাদ্দ আগের মত থাকলেও কৃষিতে কমে গেছে। বাজেট প্রস্তাবের কয়েকটি জায়গায় পরিসংখ্যাগত বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দেবপ্রিয়। বাজেটে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা না রাখা এবং ব্যাংক খাতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য বাজেটে দুই হাজার কোটি টাকা রাখার সমালোচনা করেন তিনি।



 

Show all comments
  • kamal ৩ জুন, ২০১৭, ২:০৮ এএম says : 0
    i agree with them
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ৩ জুন, ২০১৭, ১:০১ পিএম says : 0
    মিঃ দেব প্রিয় আপনার মূল্যবান বক্ত্যবের জন্য ধন্যবাদ। এই বাজেটে মধ্যবিত্ত সহ সকলের উপড়েই করের চাপ বাড়বে। এটা সত্য। কিন্তু জনগণের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হলে কর বাড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নাই। তাই জনগণ কর দিতে চায়। তবে এর একটা সচ্ছলতা চায়। কর বিভাগের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী জনগণকে বেশ হয়রানি করে। জনগণ এটার একটি বিহিত চায়। জনগণের কষ্টার্জিত টাকা দেশ ও জাতীয় র জন্য ব্যায় হলে, কর দিতে আপত্তি নাই। কিন্তু টাকা হ্যাকিং হয়ে চুরি হয়, কাউয়া ও খেলাপিদের পেটে চলে যায় তখনই জনগণের অনিহা দেখা দেয়। মিঃ দেবপ্রিয় সহ সকল বিশেষজ্ঞদের নিকট অনুরোধ, করের টাকা চুরির পথ বন্ধ করার পরামশ দিন। জনগণকে কর প্রদানে উৎসাহিত করুন। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ৫ জুন, ২০১৭, ১২:০৭ এএম says : 0
    @ Nur- Muhammad, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি সঠিক কথা বলেছেন আমি আপনার সাথে একমত। এই বিষয়ে আমার আর কোন কিছুই বলার নেই। আপনি যা বলেছেন সেটাই মহা সত্য এখন আপনার কথা গুলো যদি এরা শুনে তাহলেই দেশের মঙ্গল। কিন্তু এসব লোক ধর্মের কথা শুনে না এদের কানে উপদেশ যাতে না ঢুকে সেজন্য ছাকনি দেয়া আছে তাই এরা এসব শুনে না। আল্লাহ্‌ই এখন আমাদের মানে বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল করবেন নয়ত আমরা যেখানে আছি সেখানেই থেকে আরো নীচে তলিয়ে যাব এটাই সত্য। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ