Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এটা লুটপাটের বাজেট-বেগম খালেদা জিয়া

| প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটকে লুটপাটের বাজেট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। নতুন বাজেটকে আওয়ামী লীগের বাজেট অভিহিত করে তিনি বলেন, এ বাজেট লুটপাটের বাজেট। এই বাজেট অর্থমন্ত্রীর নয়, শেখ হাসিনার বাজেট। খালেদা জিয়া বলেন, নিজেদের পকেট ভারী করতে এই বাজেট। এই বাজেট অর্থমন্ত্রী  তৈরি করেননি, এটি শেখ হাসিনার কথামতো তৈরি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আইনজীবী ফোরাম এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক স্পীকার জমির উদ্দিন সরকারসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
খালেদা জিয়া বলেন, এটা লুটপাটের বাজেট। আওয়ামী লীগের চুরি করার সুযোগ দিয়েছে এ বাজেটে। এ বাজেট তো আর অর্থমন্ত্রীর না, এ বাজেটও তৈরি হয় হাসিনার কথামত। কাজেই হাসিনা যা চান বাজেট তাই। আর এই বাজেট কি আর বাজেট থাকবে নাকি। পরে দেখবেন বিভিন্ন প্রকল্প বাজেট বাড়িয়ে নেবে।
তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। চাউলের দাম এত বেড়েছে যে দেশের গরিব মানুষ খেতে পারে না। আমরা বলি গ্যাসের দাম বাড়ানো বন্ধ করুন। গ্যাসের টাকাও হবে লুটের টাকা। এগুলো বন্ধ করুন। দেশের মানুষের দিকে একটু তাকান। তিনি বলেন, এখনো কক্সবাজারে রিলিফ যায়নি। এখন পর্যন্ত সাহায্য দেয়ার জন্য কেউ সেখানে যায়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, আজকে আওয়ামীলীগ ষড়যন্ত্র করছে ৫ জানুয়ারির মত আরেকটি নির্বাচন করতে। কিন্তু সেই নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ অংশ গ্রহণ করবে না। কোন দল অংশ গ্রহণ করবে না। তারপরও যদি আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচন করে তাহলে তাদের সেই নির্বাচন থেকেই বিদায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ দুর্নীতিবাজ, খুনি, মিথ্যাবাদী, অত্যাচারী এটা পরিষ্কার। আওয়ামী লীগের হাতে দেশ, দেশের সম্পদ কোনকিছুই নিরাপদ নয়।
দেশের সাবেক প্র্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সবাই জানেন, দেশের বর্তমানে কি অবস্থা। আপনাদের যে বিচার বিভাগ, সে বিচার বিভাগেরও আজ কি দূরাবস্থা। সেটা আমরা প্রধান বিচারপতির বক্তব্য পড়লেই বুঝতে পারি।
তিনি বলেন, সরকারের থাবা এতো বেশি যে সব দিকে তারা হাত দিয়েছে। কোন জায়গা তারা বাদ রাখে নাই। সব তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। এটাই তাদের উদ্দেশ্য লক্ষ্য। সেজন্যই আপনারা দেখেছেন, এই সরকার কি শুরু করে দিয়েছে। বিচারকরা ন্যায় বিচার করতে চান। বিচারকরা সুবিচার দিতে চান।
খালেদা জিয়া বলেন, প্রধান বিচারপতির বক্তব্য থেকে আমরা বুঝেছি যে, আপনাদের নিম্ন আদালত পুরো সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সেখানে সরকার যে নির্দেশ দেয় বিচারকদের সেই নির্দেশ মেনে কাজ করতে হয়। এবং সে নির্দেশে রায় দিতে হয়। যদি বিচারক দেখে যে বিচার প্রার্থী নিরপরাধ। তার সঙ্গে এ রকম করা ঠিক হবে না। ওই বিচারক যদি তার বিবেকমত রায় দেন তাহলে তাকে হয় চাকুরিচ্যুত হতে হয় নয়ত দেশ ছাড়া হতে হয়। না হলে মামলা হামলা দিয়ে তার উপরে হয়রানি করা হয়।
আজকে সাধারণ মানুষ বড় অসহায় উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশটা আজকে বড় অসহায়ের মধ্যে আছে। আমরা যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের এই অবস্থা করার জন্য নয়। আজকে এই দেশটা ধ্বংস করেছে এই আওয়ামী লীগ। এখন দায়িত্ব হলো সব বিচারকসহ দেশের সর্বস্তরের জনগণের উচিত জেগে উঠা। ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। ন্যায় বিচার ও সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা। এখানে কোন ধর্মের মানুষ আজ নিরাপদ নয়। এখনই নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।
খালেদা জিয়া বলেন, আল্লাহর বিচার আছে। আওয়ামী লীগ আজকে ভয় পায়, বিএনপির মত একটি দলকে। কারণ বিএনপি জনগনের ভোটে বার বার নির্বাচত হয়। এখনোও বিএনপি জনগণের  ভোটে বিশ্বাস করে বলে আমরা বলেছি, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।  যেখানে সবাই অংশ গ্রহণ করবে জনগনের ভোটে নির্বাচিত হবে। আমরাও তাদের মেনে নেব।
তিনি বলেন, আমরা যে ২০৩০ ভিশন দিয়েছি সেখানে দেশের প্রতিটি মানুষের কথা বলা আছে। আমরা সেটা শুরু করবো। তাহলে দেশ অনেক উচু স্থানে চলে যাবে। সম্মানের সঙ্গে থাকবে দেশ।
দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে হবে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, এ জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। আর এই নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্ধিতামূলক। এই নির্বাচনে যে বিজয়ী হবে জনগণ এবং আমরা তাদেরকে মেনে নেবে।
আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারির মত আরেকটি নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে খালেদা জিয়া বলেন, ষড়যন্ত্রের নির্বাচন জনগণ ও কোন দল অংশ্রগ্রহণ করবে না। আর জোর করলে সেই নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে বিদায় নিতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ যে মিথ্যাবাদী, দুর্নীতিবাজ, অত্যাচারী, খুনী, গুম সরকার-এটা পরিষ্কার। তাদের হাতে দেশের মানুষের জীবন-সম্পদ এবং দেশ কোনটাই নিরাপদ নয়।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান প্রমুখ।
আইনজীবীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তৈমুর আলম খন্দকার, সানাউল্লাহ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, শাহ খসরুজ্জামান, রুহুল কুদ্দুস কাজল, এসএম কামালউদ্দিন, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, বোরহানউদ্দিন, খোরশেদ আলম, ইকবাল হোসেন, খোরশেদ মিয়া আলম, ওমর ফারুক, মুক্তার কবির খান, আজিজুল হক বাচ্চু, সাখাওয়াত হোসেন খান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শাহজাহান ওমর, মীর মো. নাসির, এ জে মোহাম্মদ আলী, আবদুস সালাম, আফজাল এইচ খান, ফজলুল হক মিলন, গরীবে নেওয়াজ প্রমুখ।
দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন ৮ জুন
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষের সমর্থনের জন্য ৮ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে এ দিন ধার্য করেন। এদিন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষের সমর্থনের দিন ধার্য ছিল। তবে খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে আদালতে উপস্থিত না হয়ে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জিয়া উদ্দিন জিয়ার মাধ্যমে সময়ের আবেদন দাখিল করেন।



 

Show all comments
  • Moon ২ জুন, ২০১৭, ২:২৫ এএম says : 0
    i agree with you
    Total Reply(0) Reply
  • Shajahan Ali ২ জুন, ২০১৭, ২:৪৭ পিএম says : 0
    আপনারও একসময় এরকম ছিলেন ।দেশের মানুষকে ক্ষমতায় থাকতে মুল্যয়ন করলে আজ দেশের অবস্থা এরকম হতোনা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alam ২ জুন, ২০১৭, ২:৪৭ পিএম says : 0
    yes.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ