দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
এ.কে.এম. ফজলুর রহমান মুন্্শী : কুরআনুল কারীমে রমজান মাসের রোজার হুকুম এভাবে পেশ করা হয়েছে : অর্থাৎ তোমাদের মাঝে যে ব্যক্তি এই মাস পাবে, তা হলে সে মাসভর রোজা রাখবে। (সূরা বাকারাহ : রুকু-২৩) আরবী শাহিদা শব্দটির আভিধানিক অর্থ কোনও স্থানে অথবা কোনও কালে উপস্থিত হওয়া, হাজির হওয়া। এই শব্দ হতেই আরবী শাহাদাত এবং শাহেদ শব্দগুলোর উদ্ভব ঘটেছে। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, এই রোজা ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজেব যে রমজান মাসে উপস্থিত এবং হাজির আছে। রমজান মাসে না থাকা এবং অনুপস্থিত থাকার দুটো দিক আছে’। প্রথমত : মাহে রমজান উপস্থিত হল কিন্তু লোকটি উপস্থিত নেই। অর্থাৎ সে মৃত্যুবরণ করেছে। এ ক্ষেত্রে রমজান মাস আগমন করলেও মৃতের উপর রোজা ফরজ হয় না। দ্বিতীয়ত : লোকটি তার নিজ স্থানে উপস্থিত আছে, কিন্তু রমজান মাস সেখানে উপস্থিত নেই। এই অবস্থাটি পৃথিবীর ঐ স্থানটির সহিত সংশ্লিষ্ট যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মত দিন রাত ও রাতের পরিক্রমণ হয় না। যেমন ঐ সকল স্থানে কয়েক মাস যাবত দিন এবং কয়েক মাস রাত বলবৎ থাকে। সে সকল স্থানে রমজান আগমনের কোন প্রশ্নই আসে না। তবে হাঁ সেখানকার মুসলমান যদি রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ করে তাহলে অন্যান্য সভ্য দেশের দিন পঞ্জীকে অবলম্বন করে রোজা রাখবে এবং রোজা খুলবে, যেমন সিহাহ সিত্তার দাজ্জাল সংক্রান্ত আহাদীসে নির্দেশ পাওয়া যায়।
এমনিভাবে যে সকল দেশে ২০ কিংবা ২২ ঘণ্টা রাত বা দিন হয় এবং মানুষ রোজা রাখতে অসমর্থ হয়ে পড়ে তাহলে তারা এই আয়াতের নির্দেশ মোতাবেক আমল করতে পারে। আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “এবং যে সকল লোক অতিকষ্টে রোজা রাখতে পারে তারা (রোজার পরিবর্তে) এক মিসকীনের খাদ্য দান করবে এবং এটা হবে তার জন্য ফেদিয়া।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-২৩) এই আয়াতে ‘এতাকাতুন’ শব্দটির অর্থ অনুধাবনে কোন কোন লোক সন্দেহে নিপতিত হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে শক্তি-সামর্থ্য এবং উপযোগীতা। এখানে কষ্টসহকারে শক্তি বা সামথ্যের অর্থে নয়, কিন্তু তাদের এ অভিমতটি সঠিক নয়। ‘এতাকাতুন’ শব্দটির মূল হচ্ছে ‘তাকাতুন’। আর ‘এতাকাতুন’ শব্দটি বাবে এফআলের মাসদার। ছুলাছি মাসদার হিসেবে এর ব্যবহার খুব কম হয়। আর তাকাতুন শব্দের অর্থ আরবী অভিধান লিসানুল আরব এবং তাজুল উরুস ইত্যাদি গ্রন্থে এভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আরবী তাকাতুন এবং এতাকাতুন শব্দের মূলধাতু হচ্ছে তাওকুন। এর অর্থ হল শক্তি-সামর্থ্য। শক্তিও সামর্থ্যরে সর্বশেষ ঐ পরিমাণকে তাউক শব্দের দ্বারা নির্দেশ করা হয় যা কোন মানুষ অতি কষ্টে অর্জন করতে পারে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) সম্ভবত : এই অর্থকেই ‘সামনে রেখে গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারী মহিলা এবং বৃদ্ধা মহিলাদেরকে রোজার ফরজিয়ত থেকে রেহাই দেয়ার অভিমত পেশ করেছিলেন! (আবু দাউদ : কিতাবুস সাওম)
সমস্যা সমাধান : আমরা পবিত্র কুরআনে সূরা বাক্কারাহ ১৮৪ নং আয়াতাংশ-“ওয়াল্লাজিনা ইউত্বিকুনাহু ফিদইয়াতুন ত্বায়ামু মিছকীন” আয়াতের ব্যাখ্যা সুহৃদয় পাঠক ফোরামের সমীপে পেশ করতে প্রয়াস পাব। আল্লাহ পাকই আমাদের একমাত্র ভরসা স্থল।
আমাদের বিশ্লেষণকে সহজতর করার লক্ষ্যে পবিত্র কুরআনের সূরা বাক্কারাহ ১৮৩ এবং ১৮৪ নং আয়াত দু’টির তরজমা ও তফসীরের সার-সংক্ষেপ প্রথমে তুলে ধরা হচ্ছে।
তরজমা : (১৮৩) “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে করে তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে সক্ষম হও। (১৮৪) সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দিনের জন্য, তারপর তোমাদের মাঝে যে রোগাক্রান্ত থাকবে কিংবা সফরে থাকবে তার জন্য অন্য সময়ে সে রোজা আদায় করে নিতে হবে এবং এটি যাদের জন্য অত্যান্ত কষ্টদায়ক হবে তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে ফেদিয়া (খাদ্য) দান করবে। যে ব্যক্তি সানন্দে পুণ্য কর্ম করে তা তার জন্য মঙ্গলকর এবং যদি রোজা রাখে তবে তা হবে তোমাদের জন্য সবিশেষ মঙ্গলকর যদি তা তোমরা বুঝতে পার।”
সার-সংক্ষেপ : পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মত উম্মতে মোহাম্মদীর উপরও সার্বিক পরহেজগারী অর্জনের নিমিত্ত রোজার অপরিহার্যতা আরোপ করা হয়েছে। কেননা রোজা রাখার মাধ্যমে নফসকে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ বিভিন্নমুখী প্রবণতার ছোবল হতে রক্ষা করার যে দৃঢ় প্রত্যয়ী মনোবৃত্তি অভ্যাস গড়ে উঠে তা পরহেজগারীর পথকে সুগম করে তোলে। এই অনুশীলনের জন্য মহান রাব্বুল আলামীন সারা বছরের মাঝে মাত্র একটি মাসকে সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যার ফলশ্রæতিতে গোটা বছরই প্রত্যেক ঈমানদার বান্দাহ পরহেজগারীর অমিয় পরশে ধন্য হতে সক্ষম হয়। তবে তাদের মাঝে কেউ যদি অসুস্থ হয় কিংবা রোজা রাখা কঠিন ও ক্ষতিকর হয় অথবা শরীয়ত অনুমোদিত ভ্রমণে থাকে, তাহলে তার জন্য রমজান মাসে রোজা না রাখার অনুমতি আছে। সফরের অবস্থায় যে কয়দিন সে রোজা রাখেনি, তদনুরূপ দিনের রোজা সে রমজান মাস ছাড়া অন্যান্য সময়ে আদায় করতে পারবে।
আর রমজান মাসে রোজা যাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন ও কষ্টকর মনে হয় তারা রোজার পরিবর্তে ফেদিয়া বা বদলা হিসেবে একজন গরীব মিসকীনকে আহার করাবে বা খাদ্য প্রদান করবে। এমতাবস্থায় কেউ যদি সানন্দচিত্তে আরও বেশী ফেদিয়া দেয় তবে তার জন্য অধিক কল্যাণ বয়ে আনবে। তবে যাদের জন্য রোজা রাখা অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয় তারা যদি কষ্ট করে, রোজা রাখে তা হলে তা হবে অধিক কল্যাণকর। (তফসীরে ইবনে জারীর, ইবনে কাসীর, কুরতুবী, কবীর, বাহরুল মুহীত ও দুররুল মানসুর)
শানে নুযুল : হযরত সালামা ইবনুল আকওয়া (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে যখন “ওয়া আলাল্লাজিনা ইউত্বিকুনাহু” আয়াতটি নাযিল হয়, তখন আমাদেরকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছিল যে, যার ইচ্ছা সে রোজা রাখবে এবং যার ইচ্ছা সে রোজার পরিবর্তে ফেদিয়া দিয়ে দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন “মান শাহিদা মিনকুমুশ শাহরা ফালইয়াছুমহু” শীর্ষক আয়াত নাযিল হয়, তখন রোজা কিংবা ফেদিয়া দেয়ার এখতিয়ার রহিত হয়ে যায় এবং সুস্থ সবল ও সমর্থ লোকদের উপর শুধু কেবল রোজা রাখাই অপরিহার্য হয়। (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, জামে তিরমিজী, সুনানে নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদ)
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা:) হতে বর্ণিত আছে যে, ইসলামের প্রথম অবস্থায় সালাতের নির্দেশ সম্বলিত তিনটি স্তর যেমন অতিক্রান্ত হয়েছে তেমনি রোজার ব্যাপারেও অনুরূপ তিনটি স্তর পর পর বিন্যস্ত হয়েছে। যথা- (১) রাসূলুল্লাহ (সা:) যখন মদীনায় তশরীফ আনেন তখন প্রতি মাসে তিনটি এবং আশুরার দিন একটি রোজা রাখতেন, (২) এরপর “কুতিবা আলাইকুমুছ ছিয়াম” আয়াত নাজিল হয়। তখন সবারই এখতিয়ার ছিল, যে কেউ রোজাও পালন করতে পারত কিংবা এর পরিবর্তে ফেদিয়াও প্রদান করতে পারতো। কিন্তু তখনো রোজা রাখাই উত্তম বলে বিবেচিত হতো। তারপর আল্লাহপাক “ফামান শাহিদা মিনকুমুশ্্ শাহরা” আয়াত নাজিল করলেন। এতে সুস্থ-সবল ও সমর্থ লোকদের এখতিয়ার রহিত করে রোজা রাখাই অপরিহার্য করা হয়। তবে অতিবৃদ্ধ লোকদের জন্য সে এখতিয়ার বহাল রাখা হয়। তাই এখনো তারা রোজা না রেখে ফেদিয়া আদায় করতে পারেন, (৩) প্রথমাবস্থায় ইফতার গ্রহণের পর হতে শয্যা গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রী সম্ভোগের অনুমতি ছিল। কিন্তু শয্যা গ্রহণ করে নিদ্রাচ্ছন্ন হওয়ার সাথে সাথে পর দিনের রোজা আরম্ভ হয়ে যেত। ফলে ঘুম ভাংলে রাত থাকা সত্তে¡ও পানাহার এবং স্ত্রী সম্ভোগের এযাজত ছিল না। তারপর আল্লাহপাক “উহিল্লালকুম লাইলাতাছ ছিয়ামির রাফাছু” নির্দেশ সূচক আয়াত নাজিল করলেন। এতে ইফতারের পর হতে সুবহে সাদেক উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগের অনুমতি প্রদান করেছেন। (সুনানে আহমদ, ইবনে কাছির, সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম ও সুনানে আবু দাউদেও অনুরূপ অনুমতি সম্বলিত বর্ণনা আছে)
ইউত্বিকুনাহু-এর অর্থ : স্বাভাবিকভাবে “ওয়া আলাল্লাজিনা ইউত্বিকুনাহু” শীর্ষক আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় এই যে, যারা পূর্ণ সমর্থ্য থাকা সত্তে¡ও রোজা রাখতে পারে না, তারা রোজার বদলে ফেদিয়া দিতে পারবে। কিন্তুু সাথে সাথেই বলে দেয়া হয়েছে যে, “ওয়া আন তাছুমু খাইরুল্লাকুম” অর্থাৎ রোজা রাখাই হবে তাদের জন্য মঙ্গলকর।
প্রকৃতপক্ষে উপরোক্ত আয়াতের স্বাভাবিক যে অর্থ ধরা হয়, তা সঠিক নয়, সঠিক অর্থ হচ্ছে, “রোজা রাখা যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হবে তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকীনকে ফেদিয়া দান করবে।” এই উভয় অর্থের প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, স্বাভাবিক অর্থে কষ্ট হওয়া বা না হওয়ার কোনই শর্ত নেই। কিন্তু সঠিক অর্থের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কষ্টদায়ক হওয়ার শর্ত রয়েছে।
সন্দেহের অবসান : উপরোক্ত আয়াতে কুরআনের “ইউত্বিকুনাহু” ক্রিয়াটির মূল মাছদার ‘ইতাক্কাতুন’ তাই কোন কোন লোক ভুলবশত: অর্থ করেছেন সমর্থ হওয়া, সংগতি সম্পন্ন হওয়া এবং শক্তিমান হওয়া। কিন্তু তাদের এই অর্থ গ্রহণ নিতান্তই ভুল। মূলত : ‘ইত্বাক্কাতুন’ হলো আরবী ‘ত্বাক্কাতুন’ শব্দের ‘বাবে ইফআল’-এর মাছদার। এর ছুলাছী মাছদার খুব কম ব্যবহৃত হয়। এমনকি এর ‘ছুলাছী মাছদার’ হতে ক্রিয়া নিষ্পন্ন হয় না। ক্রিয়া গঠন করতে হলে ‘বাবে ইফআলকে’মূল ধরে নিতে হবে এবং ‘ইত্বাক্কাতুন’-এর উৎস হবে ‘ত্বাক্কাতুন’। এর মূল ধাতু হচ্ছে ‘ত্বাওকুন’। আর ‘ত্বাওকুন’ শব্দের অর্থ আরবী অভিধান লিসানুল আরব ও তাজুল উরুসে এভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে” ত্বাওকুন-এর অর্থ হচ্ছে তাক্কাত বা শক্তি। অর্থাৎ শক্তির সর্ব শেষ সীমা ও পরিমাণ যা কোনও ব্যক্তি অত্যন্ত কষ্টসহকারে অর্জন করতে পারে। ‘ইত্বাক্কাতুন’ শব্দটির অর্থ যে অত্যন্ত কষ্টসহকারে শক্তি অর্জন করা তার সমর্থন আল-কুরআনে নিম্নোক্ত আয়াতগুলো হতেও পাওয়া যায়।
(ক) আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উপর ঐ বোজা চাপিয়ে দেবেন না, যার শক্তি আমাদের নেই (সূরা বাকারাহ : রুকু-৪০) এই আয়াতে যার শক্তি আমাদের নেই এর অর্থ হচ্ছে যার সামর্থ্য আমাদের নেই, যা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, অর্থাৎ যা আমরা করতেই পারি না। বস্তুুত : আল-কুরআনের নির্দেশ মোতাবেক এ কথাও সুস্পষ্ট যে, আল্লাহ পাক বান্দাহদেরকে এমন কোনও হুকুম প্রদান করেন না, যা সে পালন করতে অক্ষম। যেমন আল-কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, “আল্লাহ পাক কোনও প্রাণীকে হুকুম প্রদান করেন না, কিন্তু ইহার যা তার সাধ্যের আওতাভুক্ত।” (সূরা বাকারাহ ” রুকু-৪০)।
সুতরাং এ কথা স্স্পুষ্ট যে, এই দোয়ার অর্থ এভাবে করা, “হে আল্লাহ! আমাদের উপর ঐ বোঝা চাপিয়ে দিবেন না, যা আমরা বহনই করতে পারবে না” শুদ্ধ হবে না; বরং এই দোয়াতে শক্তিনা থাকার অর্থ হবে, “যা আমরা অতিকষ্টে বহন করতে পারি।”
(খ) অনুরূপভাবে তালুতের সেনাবাহিনীর এই দোয়া, “আজ আমাদের মাঝে জালুত এবং তার সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করার শক্তি নেই।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-৩৩) এর অর্থ এই নয় যে, আমরা মোকাবেলাই করতে পারব না বরং এর অর্থ হলো, “আমরা কষ্টসহকারে মোকাবেলা করতে সক্ষম।”
(গ) অনুরূপ মর্মার্থ্যরে সন্ধান আমরা হাদীস হতেও লাভ করতে পারি। ইবনে যুবায়ের (রা:) হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) হতে বর্ণনা করেন, “ঐ সকল লোক যারা কষ্টসহকারে রোজা রাখতে পারে না তারা একজন মিসকীনের খাদ্য ফেদিয়া দিবে, এই অনুমতি বৃদ্ধ পুরুষ এবং বৃদ্ধা মহিলার জন্য। যারা অতিকষ্ট করে রোজা রাখতে পারে। তারা যেন রোজা না রাখে এবং প্রত্যেক রোজার বদলে প্রত্যহ একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করে। (আবু দাউদ) এই হাদীস হতে সুস্পষ্টভাবে জানা যায় যে, ‘ইউত্বিকানিছ ছিয়াম” শব্দের অর্থ এই হতে পারে না যে, যারা রোজা রাখতে সম্পূর্ণ সক্ষম। কারণ যেখানে সক্ষমতা বিদ্যমান সেখানে ফেদিয়া দেয়ার অনুমতি আরোপিত হওয়ার কোনই প্রশ্ন উঠে না। বরং “ইউত্বিক্বানিছ্্ ছিয়াম:-এর অর্থ হবে যারা কষ্টসহকারে রোজা রাখতে পারে।
(ঘ) ‘আউনুল মা’বুদ শরহে আবি দাউদ গ্রন্থে’ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, “যারা খুবই কষ্ট, বেদনা, কঠোরতা ও মুশকিলের সাথে রোজা রাখতে পারে।”
(চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।