Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীতাকুন্ডে দেবে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাইন বন্ধ করে সংস্কার কাজ যান চলাচল ব্যাহত

| প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুন্ড থেকে ঃ সীতাকুন্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ত্রæটি বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। সড়কটির কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু হয়ে দেবে যাচ্ছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হবার পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশংকাও সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য এ অবস্থার প্রেক্ষিতে ত্রুটিযুক্ত অংশে সংস্কারের উদ্দ্যোগ নিয়ে ঠিকাদাররা ঢাকা-মুখী লাইনটি বন্ধ রেখেছে। কিন্তু তাতে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। দু’লাইনের গাড়ি এক লাইনে একই লাইনে চলতে চলতে হটাৎ লাইন পরিবর্তনের সময় বিভিন্ন গাড়ির মুখোমুখি হয়ে পড়ছে। যা বড় ধরণের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা প্রকট করে তুলেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুন্ড উপজেলাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাড়বকুন্ড শুকলালহাট এলাকা থেকে উত্তরে প্রায় দেড় কি.মি. মহাসড়ক উঁচু-নিচু হয়ে দেবে গেছে। গত কিছুদিন ধরে সড়কটি ঐ অবস্থায় পড়ে রযেছে। সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে রুপান্তরের জন্য চায়না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনো হাইড্রো, দেশীয় রেজা কনষ্ট্রাকশন ও তাহের ব্রাদার্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। শুকলালহাটের এ অংশ নির্মাণের দায়িত্বে ছিলো চীনো হাইড্রো। তারা গত বছরের শেষ দিকে তাদের অংশের কাজ সম্পন্ন করে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে হস্তান্তর করে। এদিকে কাজ হস্তান্তর করলেও একটি বছর না যেতেই সড়কে নানা ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা দেওয়ায় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গতকাল (সোমবার) দুপুরে শুকলালহাট প্রগতি ইন্ড্রাষ্ট্রিজ গেইট থেকে উত্তরে ক্ষতিগ্রস্থ মহাসড়ক পরিদর্শনকালে দেখা যায়, এ অংশে মহাসড়কের কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু হয়ে হয়ে এবরো থেবরো আকার ধারণ করেছে। অবশ্য সেসব অংশে সংস্কারেরও উদ্দ্যোগ নিয়েছে চারলেনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনো হাইড্রো। এ লক্ষে শুকলালহাটে মহাসড়কের মাঝামাঝি ড্রাম ও লাল পতাকা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এস.কে. এম জুট মিলস সংলগ্ন এলাকায় মেশিন দিয়ে সড়কে এবরো থেবরো অংশ কেটে সমান করা হচ্ছে। দেখা গেছে, শুকলালহাটে সংস্কারের জন্য ঢাকা মুখী লেনটি বন্ধ করে দেওয়ায় এখন এ রুটের গাড়িগুলোও রং সাইডে গিয়ে চট্টগ্রাম মুখী লাইনে যাতায়াত করছে। এতে নানারকম সৃষ্টি হচ্ছে। একদিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা মুখী লেনে চলতে থাকা দ্রæতগতির বাস-ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান শুকলালহাট এলাকায় সংস্কারের কাজের সামনে এসে থমকে গিয়ে গতি কমাচ্ছে। পরে প্রগতি ইন্ড্রাষ্ট্রিজের সামনের ইউটার্ন হয়ে তারা চট্টগ্রাম মুখী লাইনে উঠে ঢাকার দিকে যাচ্ছে। এদিকে চট্টগ্রাম মুখী লাইনে আসা দ্রæতগামী গাড়ির চালকরা ওভারটেকিং করতে গিয়ে রং সাইডে ঢাকা মুখী গাড়ি থেকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে শুকলালহাট ও উপজেলা গেটের ইউটার্নে। এক নিত্য যাত্রী কুমিরা কাজী পাড়ার বাসিন্দা মাষ্টার মোঃ জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবেদককে বলেন, শুকলালহাটে ঢাকা মুখী লাইন বন্ধ থাকায় সেখান থেকে গাড়িগুলি রং সাইডে আসতে শুরু করে এবং উপজেলা গেটের ইউটার্ন হয়ে সেগুলো পুনরায় ঢাকামুখী লেনে উঠে। এতে এ দু’জায়গায় বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িগুলিকে লক্ষ না করে মুখোমুখি হয়ে পড়ছে। গতকাল দুপুরে সীতাকুন্ড উপজেলা গেইটের ইউটার্ন একটি প্রাইভেট কার পৌরসভার দিকে প্রবেশ করার সময় শুকলালহাট হয়ে রং সাইডে আসা কাভার্ড ভ্যানের সামনে পড়ে যায়। পরে চালকদের দক্ষতায় এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও যেকোন সময় এভাবেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস.কে.এম গেইট এলাকায় মহাসড়ক সংস্কারে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনো হাইড্রোর ফোরম্যান নুর সোবাহার বলেন, মহাসড়ক উঁচু নিচু হয়ে যাওয়ায় আমরা মেশিন দিয়ে কেটে সমান করছি। গত শনিবার থেকে এ কাজ চলছে। আরো কয়েকদিন কাজ করলে সড়ক সংস্কার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান চীনো হাইড্রো কাজ শেষ করে সওজকে বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু চুক্তিতে আছে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার এক বছরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ হলে তা ঠিকাদাররাই মেরামত করবে।
যেহেতু এখনো এক বছর পার হয়নি তাই আমরাই ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক সংস্কার করে দিচ্ছি। এখনই সংস্কার না করলে ক্ষতি আরো বাড়তে পারে। আর সংস্কারের প্রয়োজনেই এক লাইনে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, মিরসরাইয়েও একইভাবে চীনো হাইড্রো তাদের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ সংস্কার করছে। এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, প্রচন্ড গরমে সড়কের কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু হয়ে গেছে। তবুও ঠিকাদাররা সেটা মেরামত করে দিচ্ছে। ৫/৭ দিনের মধ্যেই সড়ক পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। একবছরেরও কম সময়ে সড়কে ত্রুটি বিচ্যুতি কোন অনিয়মের কারণে হচ্ছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এটা বড় ধরণের কোন সমস্যা নয়। তাই অনিয়ম বলা যাবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা-চট্টগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ