Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুবারক হো মাহে রমজান

| প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুনশী
সিয়াম সাধনার মর্মকথা
মাহে রমজানে মুমিন মুসলমানদের উপর সিয়াম সাধনা করা ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য। আল-কুরআনের ২নং সূরা আল্ বাক্বারাহ-এর ১৮৩নং আয়াতে ইরশাদ হয়েছে : ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম সাধনা ফরজ করা হলো যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জন করতে পার।’ এই আয়াতে কারিমায় স্পষ্টত: তিনটি বিষয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে। (এক) উম্মতে মুহাম্মাদীয়ার উপর মাহে রমজানের সিয়ার সাধনা ফরজ। এই ফরজ এবাদত রোজ কেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এর কোনো পরিবর্তন হবে না। (দুই) সিয়াম সাধনা শুধু কেবল উম্মতে মোহাম্মাদীয়ার উপরই ফরজ করা হয়নি, বরং শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর পূববর্তী নবী ও রাসূল এবং তাদের উম্মতগণের উপর ও সিয়াম সাধনা ফরজ ছিল। তবে তারা কত দিন সিয়াম সাধনা করতেন এ ব্যাপারে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। (তিন) সিয়াম সাধনার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জন করা, নিজেকে মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তোলা এবং সকল প্রকার পাপাচার কামাচার ও পানাহার বর্জন করে দেহ, মন, প্রাণকে পবিত্র, কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ ও সুন্দররূপে পরিপাটি করা।
এবার সিয়াম সাধনা কী এবং কেমন তা অনুধাবন করা একান্ত দরকার। আরবি সিয়াম শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হলো ‘সাওম’। এর শাব্দিক অর্থ হলো বিরত হওয়া, নিজেকে সম্বরণ করা, বেঁচে থাকা। শরীয়তের পরিভাষায় সিয়াম হলো কতিপয় বিশেষ শর্তসাপেক্ষে বিশেষ বিশেষ বিষয় হতে নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষভাবে বিরত থাকা।
(কাতহুল বারী: ৪র্থ খন্ড, ১০২ পৃষ্ঠা।)
আরবি সিয়াম শব্দের যথার্থ ভাব প্রকাশক কোনো শব্দ বাংলা, প্রাকৃত, হিন্দী ও উর্দু ভাষায় নেই। তবে সিয়ামের প্রতিশব্দ হিসেবে ফারসি ভাষাতে রোজা শব্দটি ব্যবহৃত হয়, যদিও তা সিয়ামের সঠিক ভাব প্রকাশক শব্দ নয়, তবুও বাংলার মুসলিমগণ রোজা শব্দটি দ্বারা সিয়ামকেই বুঝে থাকে।
গভীর মনোযোগের সাথে কুরআনুল কারিম অধ্যয়ন করলে দেখা যায় যে, মহান বাব্বুল আলামীন ‘সাওম’ ও ‘সিয়াম’ শব্দটি একবচনে, বহুবচনে এবং মূল ক্রিয়ারূপে আল-কুরআনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছেন।
সাওম ক্রিয়ামূল থেকে সম্পন্ন নির্দেশ সূচক ক্রিয়া ‘ফালইয়াছুমহু’ শব্দটি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আল-কুরআনের ২নং সূরা আল বাক্বারাহ-এর ১৮৫নং আয়াতে ব্যবহার করেছেন। এই আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে যে, “তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস (রমজান) পাবে, তাদের এই মাসে সিয়াম পালন করা অবশ্য কর্তব্য। এই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা-উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার উপর অপরিহার্য হয়ে গেছে। এর অন্যথা হবার কোনোই উপায় নেই। যো নেই। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে ঈমান ও ইহতিসাবসহ মাহে রমজানের সিয়াম সাধনাকে পরিপূর্ণতা সাধনের তওফিক এনায়েত করুন, এটাই আজকের একান্ত প্রত্যাশা।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ