পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদ- পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় হওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার করা বক্তব্যে মৃত্যুদ- বহাল নাও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। সঠিক রায় পেতে তিনি প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে মীর কাসেমের মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করারও দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হোসেন মীর কাসেমের বিচার নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া মিলনায়তনে ‘একাত্তরের গণহত্যাকারীদের বিচারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র : সরকার, বিচার বিভাগ ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় সরকারের এ দুই মন্ত্রী এ দাবি ও আহ্বান জানান। গোলটেবিলের আয়োজক একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, উনি (প্রধান বিচারপতি) বলেছেন, প্রসিকিউশন রাজনীতি করছে। এর অর্থ হলো, সরকার রাজনীতি করছে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো বিএনপি-জামায়াতের, তার সত্যতা দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার হচ্ছে। প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যে সবকিছু প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেল। জামায়াত-বিএনপির অভিযোগকে তিনি প্রমাণ করে দিলেন।
তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব, রাষ্ট্রপক্ষের মামলা সঠিকভাবে পরিচালনা করা। তিনিও (অ্যাটর্নি জেনারেল) একই সুরে কথা বলছেন।
উল্লেখ্য, জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি, তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।’
এরপর প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘এত হাফ হার্টেড হয়ে আপনারা মামলা চালান কেন?’
সেদিন প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থার পেছনে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা এসব কী মামলা পরিচালনা করছে? ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা শুধু ব্যস্ত টিভিতে চেহারা দেখানো নিয়ে। তারা দামিদামি গাড়ি চড়েন আর পুলিশের হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ান।
মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, মীর কাসেম আলীর দেহ কারাগারে থাকলেও অর্থ-বিত্ত বাইরে সক্রিয়। যার ফলে এ রায় নিয়ে এত কথা হচ্ছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে চাই না। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে এই মামলার শুনানি হওয়া উচিত। রাষ্ট্রের প্রধান কৌঁসুলিকেও (অ্যাটর্নি জেনারেল) এই মামলা পরিচালনা থেকে বিরত রাখা উচিত। নইলে আমরা বিচার পাব না।
তিনি বলেন, ‘এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি যে, এই মামলায় আর মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
কামরুল আরও বলেন, ‘এরপরও যদি মীর কাসেমের মামলার রায়ে মৃত্যুদ- দেয়া হয় তাহলে সবাই ভাববে, সরকার চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।’
প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ৪৫ বছরে অনেক প্রধান বিচারপতি এসেছেন। তার মতো অতিকথন কারও দেখিনি। তার অতিকথনে সরকার বিব্রত হচ্ছে। তার অতিকথনে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা নষ্ট হচ্ছে। সুধী সমাজ বিব্রত হচ্ছে। এসব বন্ধ করা উচিত। বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করছেন প্রধান বিচারপতি।
একই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব, আপনি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিন। নইলে এ পদে থাকার কতটুকু সুযোগ আছে, তার ওপরই সেটা রাখতে চাই।’ বিচারপতিরা আইনের ঊর্ধ্বে নন এবং আইনের বাইরে কারও হাত বড় নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
গোলটেবিলে বক্তব্য রাখেন জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতা শাহরিয়ার কবির, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বিচারপতি শামসুল হুদা, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।