Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রমজান ও ঈদে বিশেষ নিরাপত্তা

| প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


পুলিশের কারো বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা -আইজিপি
স্টাফ রিপোর্টার : মাহে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে সারা দেশে পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। রাজধানীসহ দেশের প্রতি নগরীর বিপনী বিতান, বাস টার্মিনাল,লঞ্চ ঘাট, ফেরী ঘাট, রেল স্টেশন,হাইওয়ে এবং নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় থাকবে র‌্যাব পুলিশের বিশেষ টহল টিম। চাঁদাবাজি বন্ধে এবং মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী রোধে পোষাকদারী পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি থাকবে সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরদারি। কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে।  পুলিশ সদর দপ্তরে সকল পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে এক বৈঠকে আইজিপি এ নির্দেশ দেন। তিনি মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট মুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশকে কঠোর নিদের্শ দিয়েছেন।  
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, কোন পুলিশেরে বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখা এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, থ্রি হুইলার, ইজিবাইক ইত্যাদি যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। সুষ্ঠুভাবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া পুলিশ কোনো যানবাহনে তল্লাশি করবে না।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, রমজান মাসে ঢাকাসহ সারা দেশে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সেই সাথে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানও অব্যাহত থাকবে। রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে পকেটমার ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। বিপণি বিতান ও শপিং মল যথাসম্ভব সিসিটিভির আওতায় এনে কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক ও অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি এবং মোবাইল ফোনে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য ও ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট অথবা গুজব ছড়ানোতে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের জন্য ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য রেলস্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে পুলিশ, মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন,মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধ ও যানজট নিরসনে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ বিশেষ তৎপর থাকবে, দায়িত্ব পালন কোন ধরনের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফরমালিন ও রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত ফল, ভেজাল ইফতারি ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যবিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
সভায় পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) মোখলেসুর রহমান, রেলওয়ের অতিরিক্ত আইজিপি আবুল কাশেম, শিল্প কারখানা পুলিশের মহাপরিচালক মো. নওশের আলী, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সব পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ও হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজি, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ এনএসআই, ডিজিএফআই, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ব্যস্ততম এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থাকবে কমিনিটি পুলিশ ও আনসার সদস্য। ফুটপাত দোকানপাট বসতে দেয়া হবে না। অবৈধ কার পার্কিং বন্ধে তাকবে ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ অভিযান। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, মলম পার্টির উপদ্রব রোধ, সিএনজি স্টেশনে আগত যানবাহনসমূহ যেন লম্বা লাইন না হয় সে জন্য এবার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ট্রাফিক কর্মকর্তাদের ছুটি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে থাকার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, সংযম এবং ইবাদতের মাস হলো পবিত্র রমজান।
প্রত্যেকের প্রত্যাশা থাকে নিরাপদে ঘরে ফিরে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ইফতার করা। তাই রাস্তার যানজট নিরসন এবং ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজির উপদ্রব রোধে পুলিশের বিশেষ টহল টিম থাকবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। প্রত্যেকে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাতে ইফতার করতে পারেন সে লক্ষ্যে পুলিশ, পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে যৌথভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।
পুলিশ কমিশনার বলেন, রমজান মাসে রাজধানীর নিরাপত্তা ও যানজট নিরসনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডিএমপির সদর দপ্তরে বৈঠকের আয়োজন করা হবে শিগগিরই। পুলিশ পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে আলোচনা হবে যানজট নিরসন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। এছাড়া সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা নেয়ার জন্য ডিএমপি সদর দফতরে ট্রাফিক কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এ সংক্রান্ত সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো হবে। রাস্তার ও ফুটপাতের ইফতারের দোকান বসতে না দেয়া, ফুটপাত হতে হকার উচ্ছেদ, বিভিন্ন শপিং মলের সামনে অবৈধ পার্কিং রোধ, যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা, মলম পার্টির উপদ্রব রোধ, সিএনজি স্টেশনে আগত যানবাহনসমূহ যেন লম্বা লাইন না হয় সে জন্য এবার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে এবার রমজানে ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় ব্যস্ততম সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় থাকবে কমিউনিটি পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রমজান

২৮ এপ্রিল, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ