পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : এবারের রমজানে আসন্ন নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার প্রভাব পড়বে খুলনার তৃণমূলের রাজনীতিতে। ইফতার মাহফিলের সাথে সাথে ঘর গোছানোর কাজ করবে রাজনৈতিক দলগুলো। নগর ও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইতিমধ্যে শুরুও হয়েছে তোড়জোড়। গুরুত্ব বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের। আগাম প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর ঘর গোছানো ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে রমজানকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি শুরু করেছে ভোট প্রার্থনা। আগেভাগেই প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
এক বছর আগেই আলোচনায় সরগরম উঠেছে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আওয়ামী লীগের অন্তত চার/পাঁচজন রয়েছেন মেয়র প্রার্থী তালিকায়। নেতাকর্মীদের মুখে নাম শোনা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক মেয়র ইনচার্জ আজমল আহমেদ তপন, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম এবং মহানগর যুবলীগের আহŸায়ক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরদার আনিসুর রহমান পপলুর নাম। তবে এখনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান। অপরদিকে, কেসিসি’র মেয়র প্রার্থীর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিএনপি। দীর্ঘ মেয়াদুত্তীর্ণ কমিটির কারণে ওয়ার্ড, থানা ও মহানগর বিএনপিসহ প্রায় সব অঙ্গসংগঠনে রয়েছে বিরোধ। আর অগোছালো দল নিয়ে কেসিসি নির্বাচনে মোকাবেলা করলে বিপর্যয় নিশ্চিত বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতার মন্তব্য।
খুলনা ২০দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও নগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, গত নির্বাচনে ৬২ হাজার ভোটের ব্যবধানে মেয়র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। খুলনা মহানগর বিএনপি’র সকল প্রস্তুতি শুরু করেছি। বিএনপি’র ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি আছে; তবে অঙ্গ সংগঠনের কমিটি নেই। সেগুলোর কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে। বিজয়ের এধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হবে। আসন্ন রমজানকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে কাজ করবো। দলের ভিতরে-বাইরে সমানতালে কাজ করবে নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে, আসন্ন কেসিসি নির্বাচনে যোগদানকারী মুশফিকুর রহমানকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আবার, কেসিসি’র মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক কাসেমী। কেসিসি’র কয়েকটি ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর প্রার্থী দিয়েছে দলটি। প্রসঙ্গত্ব, ২০১৩ সালের ১৫জুন অনুষ্ঠিত কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নাগরিক ফোরামের প্রার্থী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি (আনারস) এক লাখ ৮১ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক পেয়েছিলেন এক লাখ ২০ হাজার ৫৮ ভোট। আগামী বছরের শুরুতে কেসিসি নির্বাচন হতে পারে।
দলীয় সূত্রমতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি এখন রামপাল-মংলা কেন্দ্রিক হওয়ায় খুলনার জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়ে ভাবনা নেই দলের মধ্যে।
খুলনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চাইছেন দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল। বর্তমান সংবাদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস বয়সের ভারে রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা-২ আসনে আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান ও খুলনা-৩ আসনে বেগম মন্নুজান সুফিয়ান অপ্রতিদ্ব›িদ্ব। আর খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী হতে পারেন বর্তমান সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল। বর্তমান মৎস্য প্রাণি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি’র খুলনা-৫ আসনে প্রচারণা শুরু করেছেন অর্থনীতিবীদ ড. মাহবুব উল ইসলাম। খুলনা-৬ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল হকের পাশাপাশি প্রচারণা চালাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু।
অপরদিকে, রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিতে খুলনা-১ আসনের প্রার্থী রয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, খুলনা-২ আসনে নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তবে এই আসনে সাবেক সংসদ সদস্য আলী আসগর লবীও প্রার্থীতা চাইতে পারেন বলে শোনা যায়। খুলনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে আগ্রহী সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, এসএম আরিফুর রহমান মিঠু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম ও মোঃ ফকরুল আলম। খুলনা-৪ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ। খুলনা-৫ ও খুলনা-৬ আসনে জোটগত জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী থাকলেও এবার প্রস্তুত হচ্ছে বিএনপি। এ দু’টি আসনে প্রার্থী থাকতে পারেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনে এককভাবে প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিয়ে খুলনার ছয়টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে পার্টির আলোচনায়। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে এ তালিকা থেকে ৬জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেয়া হবে। খুলনার ছয়টি আসনে প্রাথমিক তালিকার সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর-খানজাহানআলী) আসনে জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু ও মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক এমএ আল মামুন, খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনে জেলা সম্পাদক একেএম মোক্তার হোসেন, জেলার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল খান টিপু ও জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মলিক হাদিউজ্জামান, খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) নগর শাখার সাবেক সম্পাদক মোলা মুজিবুর রহমান ও জেলা শাখার সহ-সভাপতি জোহর আলী মোড়ল, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু ও কেন্দ্রীয় সদস্য মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, একক প্রার্থী চূড়ান্ত হলে ভালো ফলাফল আশা করা যায়। দলের মধ্যে নতুন করে চাঙ্গাভাব সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্র থেকেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে কোন আসনে কে প্রার্থী হবেন। গৌরবোজ্জল দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে ৩য় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২, খুলনা-৩, খুলনা-৫, খুলনা-৬ এবং ১৯৮৮ সালে ৪র্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-২, খুলনা-৪, খুলনা-৫ ও খুলনা-৬ আসনে জাপা প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।