Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাগাতার চিকিৎসক ধর্মঘটে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত খুলনাবাসী

৫ দিনে গ্রেফতার হয়নি লাঞ্ছনাকারী ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : চিকিৎসক লাঞ্ছনাকারী তেরখাদার ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অহিদুজ্জামানসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার দাবিতে খুলনায় লাগাতার চিকিৎসক ধর্মঘট চলছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে খুলনা জেলায় সরকারি-বেসরকারি সর্বস্তরের চিকিৎসা সেবা (শুধুমাত্র জরুরী চিকিৎসা ছাড়া) বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে খুলনাবাসী। তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন কর্তব্যরত অবস্থায় বেধড়ক পিটিয়ে জখম করার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ইতোমধ্যে ৫ দিন অতিবাহিত হলেও গ্রেফতার হয়নি হামলাকারীরা। গতকাল শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দোষী ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অহিদুজ্জামানসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন দলের জেলা পর্যায়ের নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে কর্তব্যরত অবস্থায় স্থানীয় চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামান তার ভাইসহ কতিপয় বহিরাগত সন্ত্রাসী বেধড়ক মারপিট করে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে। হামলায় তার দু’টি দাঁত ভেঙে যাওয়াসহ গুরুতর জখম হন তিনি। বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ডা. মামুন। এ ঘটনায় তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অহিদুজ্জামানকে মূল আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন লাঞ্ছিত ও আহত চিকিৎসক। মামলার ৫ দিনেও এজাহারনামীয় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহাজাহান খান বলেন, ঘটনার সাথে সাথে হামলাকারীদের একজন রানা শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আর শুক্রবার রাতে শফিকুল ফকিরকে গ্রেফতার করেছি। মামলার ১ নম্বর আসামী ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। সে তো এলাকাতে নেই। মোবাইল ট্র্যাকিং করেও কোথাও শনাক্ত করতে পারছি না। বিভিন্ন কৌশলে অভিযান চলছে।
খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলার আসামী ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে স্থানীয় থানাকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। আমি নিজেই বিষয়টি তদারকি করছি।
অপরদিকে, গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকের উপর হামলাকারী ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামান, তার ভাই জাহিদুজ্জামান ও তাদের সহযোগীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান কালু। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিও জানান তিনি।
এদিকে, ডাঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন কর্তব্যরত অবস্থায় লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ এবং দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খুলনা জেলায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট আজও (রোববার) ধর্মঘটের কর্মসূচি দিয়েছে বিএমএ। বিএমএ খুলনা শাখার ঘোষিত এই কর্মসূচি চলাকালে গত তিনদিন খুলনা জেলার ৯টি উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি সর্বস্তরের চিকিৎসা (শুধুমাত্র জরুরী চিকিৎসা ছাড়া) সেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে। বিএমএ, বিপিএমপিএ ও বিপিসিডিওএ একযোগে ধর্মঘটে যাওয়ায় পুরোপুরি স্বাস্থ্যসেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভাগীয় সদর খুলনা।
খুলনা বিএমএ’র সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম বলেন, কর্তব্যরত অবস্থায় ডাঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে লাঞ্ছিতকারীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। মামলার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এটা রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাস্কর। খুলনায় চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ওই জেলা আওয়ামী লীগ ও চিকিৎসক নেতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাগাতার চিকিৎসক ধর্মঘটে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত খুলনাবাসী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ