Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চবির অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী ইউনূস দ্বন্দ্বের অবসান চান অর্থনীতিবিদরা

প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শাকিরুল হক, চবি সংবাদদাতা : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমৃদ্ধির জন্য ৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. রেহমান সোবহান। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে ’৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতি তথা ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সুদৃঢ় জাতীয়তাবাদ আর সামাজিক সমতা নিশ্চিত করতে হবে। যা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করবে। গড়ে তুলবে সুদৃঢ় সামাজিক সমৃদ্ধি। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার মান আরো বাড়াতে হবে। দেখা যায় বাংলাদেশের বেশির ভাগ ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রামে হয়ে থাকে। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন না চবি অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ইউনূস। তবে তার অবদান বারবারই স্মরণ করেন এই প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদসহ উপস্থিত অতিথিরা।
ইউনুসের মুক্তিযুদ্ধের অবদান স্মরণ করে রেহমান সোবহান বলেন, সে সময় ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ে কাজ করেন । মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু আজ তিনি নেই। এ যেন হেমলেট নাটকের নায়কের বাবা আছে কিন্তু ছেলে নেই।
এ সময় আরেক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ইউজিসি প্রফেসর ড. মাইনুল ইসলাম বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠান আরো সুন্দর হতো যদি আজকে ড. ইউনূস থাকত। যে অর্থনীতি বিভাগের জন্য এত কিছু করল আজকের এ অনুষ্ঠানে সে-ই নেই। বাংলাদেশের প্রথম নোবেল জয়ীকে এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর একটা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছি যে, আজকের এ সুবর্ণ জয়ন্তী থেকে তিনি নিজেই নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আপনারা অনেকে হয়তো জানেন না, প্রধানমন্ত্রী এক পর্যায়ে আমাকে একটু সমঝোতার ব্যবস্থা করতে বললেন। আমি অনেকখানি এগিয়ে গেলাম। কিন্তু আবার কি ঘটল জানি না, উল্টে গেছে। তখন আমি প্রধানমন্ত্রীকে খবর পাঠালাম যে, আপনি আমাকে দায়িত্ব দিলেন আর এদিকে এসে তাকে গালাগাল করছেন। আপনি ঠিক করেন ঝগড়া করবেন না সমঝোতা করবেন। তখন আমি নিজের এই ভূমিকাটা পরিত্যাগ করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দুঃখ জাতি হিসেবে এই প্রচ- রকমের মেধাবী ব্যক্তি যাকে দিয়ে সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে চিনে তাকে আমরা আসলে অসম্মান করছি। আমি এ অসম্মানের পর্বের শেষ চাই। যাতে সারা বিশ্বের সামনে নিজেদের অপমান না করি।
ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. সেকান্দার খানও কেঁদেছেন অধ্যাপক ইউনূসকে স্মরণ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর একটা বক্তৃতায় বলেছেন যে, নাথিং রং ওয়াজ ফাউন্ড ইন গ্রামীণ ব্যাংক একাউন্টস। নরওয়ে সরকারের যারা এসেছিলেন তারাও বলেছেন নথিং রং ওয়াজ ডান ইন ট্রান্সফারিং মানি ফ্রম ওয়ান একাউন্ট টু এনাদার। আমি সার্টিফাই করতে পারব যে ড. ইউনূস দেশের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র করে নাই।
চবি অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থীরা আজকে এখানে বক্তব্য শুনছেন তাদের বলছি স্বপ্ন দেখুন। স্বপ্ন জীবনের চেয়ে বড়, কখনো কখনো তা সফল মানুষের চেয়েও বড়।
চবি সমাজবিজ্ঞান অনুষদেও ডিন প্রফেসর ড. আবুল হোসাইন এর সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, চবি ভিসি প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী, প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর চেয়ারম্যার ফজলে কবীর, কুবি’র ভিসি আলী আশরাফ, ইস্ট ডেল্টার ভিসি মো. সিকান্দার খান প্রমুখ। এর আগে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি র‌্যালি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা প্রদক্ষিণ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চবির অর্থনীতি বিভাগের সুবর্ণ জয়ন্তী ইউনূস দ্বন্দ্বের অবসান চান অর্থনীতিবিদরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ