পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো ঃ বাংলাদেশ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের কেন্দ্রীয় সভাপতি পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী বলেছেন, পবিত্র আল কোরআনই বিশ্ব মানবতার ইহ ও পরকালীন সার্বিক সমস্যা সমাধানের একমাত্র গাইডলাইন। মহানবী সা: পবিত্র কোরআনের যথার্থ অনুসরণের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ইসলামের উর্দি পরিহিত হয়ে একটি দুষ্টচক্র পবিত্র কোরআন-সুন্নাহকে খ-িতভাবে উপস্থাপন তথা অপব্যাখ্যার মাধ্যমে মুসলিম মিল্লাতের মধ্যে পারস্পরিক বিভাজন সৃষ্টি করে মুসলমানদের কলহ, বিবাদ, সংঘাত ও নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গতকাল (শনিবার) আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমিনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদ ময়দানে দুই দিনব্যাপী ১৩তম ঐতিহাসিক দরসুল কোরআন মাহফিলের সমাপনী দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উদ্বোধকের বক্তব্যে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ আল্লামা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, কোরআনী আমল থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণেই আজকে আমাদের দুর্দশা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরআনকে আঁকড়ে ধরে এবং ঘরে ঘরে কোরআনের বাণী পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে সমাজে শান্তি আসতে পারে। তিনি বলেন, আকাশ সংস্কৃতির কারণে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমাদের যুবসমাজকে ধ্বংসের হীনচক্রান্ত শুরু হয়েছে। তাদের কোরআন-সুন্নাহর দিকে ধাবিত করতে দরসুল কোরআন মাহফিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অধ্যক্ষ শাব্বীর আহমদ বলেন, একসময় ইরাক শান্তিপূর্ণ দেশ ছিল। ইরাকে আহলে সুন্নাতের আধিক্য ছিল, আন্তর্জাতিক চক্রান্তের মাধ্যমে সেখানে সুন্নিয়তকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তিনি বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের শক্ত ঘাঁটি উল্লেখ করে বলেন, ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকল দরবার, পীর-মাশায়েখ, আলেম-ওলামা ঐক্যবদ্ধ থাকলে সালাফিরা কিছু করতে পারবে না। শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, এদেশের পীর-মাশায়েখদের হাতে জন্ম জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের। দেশে ১৫ হাজার এবতেদায়ী মাদরাসা রয়েছে। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীনের নেতৃত্বে মোদার্রেছীন মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
মোফাচ্ছিরে কোরআন, চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল (এমএ) মাদরাসার অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর প্রধান মুফাচ্ছির হিসেবে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারার চতুর্দশ সূরা ‘ইবরাহীম’-এর দরস পেশ করতে গিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সা: প্রদর্শিত জীবনবিধান পবিত্র কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক সমাজ কায়েম করতে গিয়ে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম আ:কে কুখ্যাত নমরুদের বহুমুখী দ্বীনবিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। প্রাসঙ্গিক আলোচনায় তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে মহানবী সা:-এর সামগ্রিক জীবন পদ্ধতিই আল কোরআনের ব্যাখ্যা। যার অপর নাম সুন্নাহ্ এবং এতেই নিহিত রয়েছে মানব জাতির আধ্যাত্মিক ও জাগতিক সার্বিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান। পবিত্র আল কোরআন হচ্ছে সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানের আধার।
আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমীন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী জসিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে দরস পেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. আল্লামা শাহ আব্দুল্লাহ আল-মারুফ আল মাদানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আল্লামা ড. আতিউর রহমান মিয়াজী, শাইখুল হাদিস আল্লামা রফিক উদ্দীন ছিদ্দিকী, পীরে তরিকত আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, ড. আল্লামা এ এস এম বোরহান উদ্দিন, আল্লামা এনামুল হক সিকদার, অধ্যাপক এমদাদুল হক, অধ্যক্ষ কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, অধ্যক্ষ আল্লামা হাসান রেজা আল কাদেরী, অধ্যক্ষ আল্লামা সাখাওয়াত হোসেন, পীরে তরিকত সৈয়দ মাওলানা ইলিয়াছ রেজভী, ড. শেখ বখতিয়ার উদ্দিন, পীরে তরিকত মাওলানা সিদ্দিক রেজা, অ্যাডভোকেট এম আবু নাছের তালুকদার, অধ্যক্ষ আল্লামা ক্বারী আবু তৈয়ব, অধ্যাপক জসিম আলী চৌধুরী, অধ্যক্ষ আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দিন, এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর, এ এম মঈন উদ্দিন চৌধুরী হালিম প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।