পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, পবিত্র মাহে রমজান মাসে খাদ্যে ভেজাল কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। পয়লা রমজান থেকেই ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান শুরু হবে। এবার জরিমানার পাশাপাশি কারাদন্ডও দেয়া হবে। এজন্য এখন থেকেই তিনি সবাইকে সতর্ক হয়ে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর নগরভবন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ অডিটরিয়ামে আসন্ন রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন মিয়া, ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাউদ্দিন, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার রুহুল আমীন, বাংলাদেশ ফল ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব ফারুক সিদ্দিকী, ইমাম প্রতিনিধি হিসেবে হাফেজ মাওলানা আবু আইয়ুব, ক্লাব প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুর রব, বার প্রতিনিধি জিয়াউল হক প্রমুখ।
সাঈদ খোকন বলেন, রমজানের পুরো মাস ডিএসসিসি ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করবে। খাদ্যে ভেজাল দিলে বা দ্রব্যমূল্য নিয়ে কারসাজি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, চলমান ফল মৌসুমে ফলে ভেজালকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। প্রায়ই খবর পাওয়া যায়, ফল খেয়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। নিয়ম মেনে ফল ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবেন। সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলবেন না। ডিএসসিসি এটা বরদাশত করবে না।
মেয়র বলেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের অবদান অপরিসীম। দেশের পাশাপাশি জনগণের কথাও চিন্তা করতে হবে। রমজানে কম লাভ করে নিত্যপণ্যের মূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখুন। তিনি বলেন, পবিত্র রমজানে কোনো বার বা ক্লাবে মদ ও জুয়ার অবৈধ আসর বসলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বার ও ক্লাবের মালিকরা যতো প্রভাবশালী হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
মতবিনিময়ে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাহউদ্দিন বলেন, সারা বছর হোটেল রেস্তোরাঁগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা বাইর থেকে দেখা চিত্রের চেয়ে ভিন্ন। কিছু কিছু রেস্টুরেন্টের বাইরে অনেক চাকচিক্য। রেস্টেুরেন্টের ব্যবস্থাপক অনেক চৌকস। লাইটিং, ডেকোরেশন দেখে ভেতরের নোংরা পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু তাদের অনেকের রান্নাঘরের পরিস্থিতি অত্যন্ত নোংরা থাকে। সেই পরিস্থিতি দেখে যে কারোর খাবার গ্রহণের ইচ্ছে দূর হয়ে যাবে।
বিভিন্ন অভিযানে গিয়ে দেখা পরিস্থিতির বর্ণনা করে এই চিকিৎসক বলেন, রান্নাঘরে বহুদিন ধরে টাইলস ভাঙা অবস্থায় থাকে, একই স্থানে বছরের পর বছর ধরে নোংরা পানি জমে থাকে। সেখানে কি পরিমাণে ব্যাক্টেরিয়া ও জীবাণু জন্মে সেটা হিসাব করা কষ্টসাধ্য। রেস্টুরেন্টকর্মীদের পরিষ্কার পরিচ্ছিন্নতার অবস্থা অত্যন্ত বাজে, রান্নাঘর আর পাশের টয়লেটে পরিস্থিতি একাকার থাকে। হোটেল ব্যবস্থাপকরা জেনে-বুঝেই বেশি লাভের আশায় খাবারে ভেজাল মেশায় বলেও দাবি করেন তিনি।
কিছু কিছু হোটেল ব্যবসায়ী ও মালিক রোজার মাসে অধিক মুনাফার আশায় খাদ্যে ভেজাল মেশান, আবার খাবারের দামও বাড়িয়ে দেন। পুরোনো পোড়া তেল ব্যবহারসহ অনেক অসদুপায় অবলম্বন করেন। এটা রোজার চেতনাবিরোধী। সভায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া শরবত, পানীয়, ফলের জুস অবশ্যই নিরাপদ পানি দিয়ে তৈরির কথা বলেন।
রমজানের ডিএসসিসির নির্দেশনা
বাবুর্চিসহ সব রেস্তোরাঁকর্মীকে গøাভস ও মাথায় চুল ঢাকার মতো বিশেষ টুপি পরিধান করতে হবে।
রান্নার সঙ্গে যুক্তদেরকে কাজ শুরুর আগে হাত পরিষ্কার করে নিতে হবে। রান্নঘর প্রতিদিন ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। থালা-বাসন ও খাবার রাখার অন্যান্য পাত্র ধোয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যবহার করতে হবে খাবার উপযোগী পানি। ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত কর্মীদের ছুটি দিতে হবে। সুস্থ হয়ে তারা কাজে যোগ দেবে। খাবারের কাছে হাঁচি-কাশি দেওয়া যাবে না। রেস্তোরাঁর ডাস্টবিন অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে, যাতে আবর্জনায় মাছি বসার সুযোগ না পায়। বেনামী কোনো কোম্পানির খাবার উপাদান কিংবা মেয়াদোত্তীর্ণ (প্যাকেটজাত) খাবার পরিবেশন করা যাবে না।
অনুমোদনহীন খাবার রঙ ব্যবহার করা যাবে না। নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করতে প্রথম রোজা থেকে ঢাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করবে সিটি কর্পোরেশন। অভিযানে এসব নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা দেখা হবে বলে সভায় জানানো হয়। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।