Inqilab Logo

বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

২৯ মামলায় জামিনের পর মেয়র মান্নানের বিরুদ্ধে দুদুকের মামলা

| প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা : ২৯টি মামলায় জামিন ও কারা মুক্তির লাভের পর ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে রোববার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আবার নতুন মামলা দায়ের করেছে। দূর্নীতি প্রতিরোধ আইনে জয়দেবপুর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো: সামছুল আলম।
মামলার বাদি বলেন, এটি হলো দুদকের পক্ষ থেকে মেয়র মান্নানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা। প্রথম মামলাটির বাদিও ছিলেন সামছুল আলম। সম্প্রতি আদালতে ওই মামলার চার্জশীটও দাখিল করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের শর্ত লঙ্ঘন করে অন্য খাতে ৭ কোটি ১৮ লক্ষ ৩২ হাজার ৫৭৫টাকা ব্যয় ও অনুদান প্রদানের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে দ্বিতীয় মামলাটি। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রæয়ারী সময়ে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগের বিভিন্ন স্মারকে ৯ কোটি টাকা গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অনুক‚লে বরাদ্ধ দেয়া হয়। এ বরাদ্ধের শর্ত ছিল ‘বাজেটভ‚ক্ত নির্দিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্প ব্যতীত অন্য কোন খাতে এ অর্থ কোন অবস্থাতেই ব্যয় করা যাবে না। স্যানিটেশন সুবিধা শতভাগ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে বরাদ্ধকৃত অর্থের ২০ ভাগ অর্থ স্যানিটেশন কাজে ব্যয় করতে হবে এবং অগ্রগতির প্রতিবেদন যথাসময়ে অত্র বিভাগের প্রেরণ করতে হবে’। সিটি মেয়র মান্নান বরাদ্ধকৃত ৯ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব হিসাব নম্বরে জমা রাখেন। পরবর্তীতে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং ১/২০১২-১৩ মূলে বিজ্ঞপ্তি এবং বিভিন্ন বাস্তবায়িত প্রকল্প সমূহের মধ্যে বিল ও অনুদান বাবদ ৭ কোটি ১৮ লক্ষ ৩২ হাজার ৫৭৫ টাকা ব্যয় করেন। ওই ব্যয় সমূহ করা হয়েছে ২০১৪ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি মেয়াদে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বরাদ্ধকৃত অর্থ ব্যয়ের সুস্পষ্ট শর্ত লঙ্ঘন করে বাজেটভ‚ক্ত নির্দিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্প ব্যতীত অন্য খাতে ব্যয় এবং অনুদান বাবদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রনালয়ের কোন অনুমোদন গ্রহণ করা হয়নি। এতে প্রতিয়মান হয় মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান ব্যক্তিস্বার্থে নিজে ক্ষমতাবান হওয়ার জন্য এবং অন্যকে লাভবান করার জন্য মন্ত্রনালয়ের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এমএ মান্নানের আইনজীবী আবু হানিফ জানান, যাত্রীবাহীবাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যায় মেয়র এমএ মান্নানকে ঢাকার বারিধারার বাসভবন থেকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর একের পর এক তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হতে থাকে। পরে হাইকোর্ট থেকে পর পর ২২টি মামলায় জামিনের পর গত বছরের ২ মার্চ তিনি কারা মুক্ত হন এবং এপ্রিল মাসে তিনি মেয়র পদ ফিরে পান। এ অবস্থায় গত বছর ১৫ এপ্রিল এমএ মান্নানকে ফের নাশকতার তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই মাসে তাকে ফের বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে মোট ২৯টি মামলা দায়ের করা হলেও সব কটি মামলায় তিনি জামিন লাভ করে এ বছরের ৬ জানুয়ারি ফের কারা মুক্ত হন। দ্বিতীয় দফায় আদালত কর্তৃক বহিস্কাদেশ প্রত্যাহার হলেও মেয়র মান্নান চেয়ারে বসেননি। এমতাবস্থায় দুদক এ মামলাটি দায়ের করেছে। মেয়র মান্নান যাতে আর ক্ষমতায় ফিরে যেতে না পারে তার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, একের পর এক মামলা করা হচ্ছে। মেয়র মান্নানের অবর্তমানে ২০১৫ সালের ৮ মার্চ থেকে আওয়ামীলীগ নেতা ও প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ