পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া অরফানেস ও চ্যারিটেবল মামলায় নতুন বিচারক নির্ধারণ হয়রানি করতে এসব মিথ্যা মামলা-খালেদা জিয়ার আইনজীবী
মালেক মল্লিক : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ১১ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। গত দুই মাসে এসব মামলার বিচার কার্যক্রম ওপর স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে এসব মামলা আমলে নেয়ার আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেছেন, মামলাগুলোর আইনি কোন ভিত্তি নেই। ম্যাডামের বিরুদ্ধে সব মামলাই রাজনৈতিক। খালেদা জিয়াকে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। আমরা আইনের পথেই তার মামলাগুলো মোকাবিলা করব।
এদিকে সেনা সমর্থিত সরকারের সময় দুদকের করা জিয়া চ্যারিটেবল ও অরফানেস ট্রাস্ট মামলার বিচার কার্যক্রমে বিচারক পরিবর্তন করে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে শুনানির জন্য ঠিক করে দেন হাইকোর্ট। বিচারক পরির্বতনের আবেদন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বকশীবাজারে স্থাপিত ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে ও ঢাকার সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে দুটি মামলার বিচার চলছিল।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নামে ৩২টি মামলা বিচার কার্যক্রম চলছে। জিয়া অরফানেজ, চ্যারিটেবল বিচার কার্যক্রম শেষে দিকে রয়েছে। অন্য মামলা বিভিন্ন আদালতে বিচার চলছে। ইতোমধ্যে ২১টিতে চার্জশিট দেয়া হয়েছে। কোনটি আবার শুনানি ও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। দুর্নীতির পাঁচ মামলাই সেনাসমর্থিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে দুদক দায়ের করেছিল। হত্যা ও নাশকতার মামলা চলছে ১৪ টি। রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মামলা ১১ টি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও খালেদার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন ইনকিলাবকে বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় বেগম খালেদা জিয়ার বাসার ভিতরেই ছিলেন, অথচ নাশকতার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে মামলা হলো। এসব মামলাগুলোর আইনি ভিত্তি নেই। উচ্চ আদালতে আমাদের বক্তব্য শুনে মামলার গুলো কার্যক্রম স্থগিত করে। একই সঙ্গে মামলা বাতিলে রুল জারি করে আদালত। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক। খালেদা জিয়াকে হয়রানি করতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আমরা আইনের পথেই তার মামলাগুলো মোকাবিলা করব। দুইটি মামলায় রায় নিয়ে দলের চিন্তিত কিনা জানতে চাইলে আইনজীবী ওই নেতা বলেন, আমাদের নয় বরং সরকার এ নিয়ে চিন্তিত। তাকে জেলে রাখার ঝুঁকি সরকার নেবে বলে মনে হয় না।
নাশকতার তিন মামলা স্থগিত: রাজধানীর দারুস সালাম ও যাত্রাবাড়ী থানায় নাশকতার অভিযোগে খালেদার বিরুদ্ধে করা আরো তিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার বিচারপতি মোহাম্মদ মিফতাহ উদ্দীন চৌধুরীর ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর সমন্বয়ে বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেন। এসব মামলা আমলে নেয়ার আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
দুই মামলা স্থগিত: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানার নাশকতার দুটি মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। গত ৯ এপ্রিল স্থগিতাদেশসহ রুল জারি করা হয়। সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় দারুস সালাম থানা দুটি পরিবহনে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১০ ও ২০ ফেব্রæয়ারি দুটি দায়ের করা হয়। ঢাকার হাকিম আদালত গতবছর ১০ অগাস্ট দুই মামলায় অভিযোগপত্র আমলে নেয়।
চার মামলা স্থগিত : গত ১৩ এপ্রিল নাশকতার চারটি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। তিনটি মামলা দারুসসালাম থানার; আর একটি মামলা যাত্রাবাড়ীর। রুলের নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত খালেদা এসব মামলায় জামিনে থাকবেন। দারুসসালাম ও যাত্রাবাড়ী থানায় খালেদা জিয়াকে ‘ইন্ধনদাতা’ হিসেবে দেখিয়ে পুলিশ এসব মামলায় অভিযোগ দাখিল করলে ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নেয়।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা স্থগিত: একটি বক্তব্যের জের ধরে খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। গত বছরের ২১ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করে আওয়ামী লগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মমতাজ উদ্দিন মেহেদি। এছাড়া ৩টি মামলায় বিচারিক আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট।
জিয়া অরফানেস ও চ্যারিটেবল মামলা নতুন বিচারক: জিয়া অরফানেস ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত ড. মো. আক্তারুজ্জামানের আদালত শুনানি করার আদেশ দেন হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চ। গতকাল বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে মঙ্গলবার হাইকোর্টের অপর একটি জিয়া অরফানেস ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত পরিবর্তনের আদেশ দেন হাইকোর্ট। ফলে এই বিচারকের অধীনে দুটি মামলার কার্যক্রম চলবে।
গ্যাটকো মামলা ১৮ জুন শুনানি: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনে ১৮ জুন শুনানি। ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার। ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ হওয়ায় খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ‘বাই-এজেন্ট’ হাজিরা দেন।
খনি মামলায় অভিযোগ গঠন ১০ জুলাই: বড়পুকুরিয়া খনি দুর্নীতি মামলার আসামি খালেদা জিয়া বড় পুকুরিয়া খনি দুর্নীতি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য আগামী ১০ জুলাই ধার্য করেছে আদালত। বুধবার তার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেন তার আইনজীবী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।