Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগের পাশেই আছি

ঢাকায় বিজেপি’র সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব

প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪১ এএম, ৫ মার্চ, ২০১৬

কূটনৈতিক সংবাদদাতা
বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রশং    সা করে ভারতীয় জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন অক্ষুণœ রাখার বিষয়ে তারা আন্তরিক।
প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে এসে শুক্রবার এক আলোচনাসভায় তিনি একথা বলেন। রাম মাধব বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি তার দেশের সমর্থন অব্যাহত রাখতে তারা আন্তরিক। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মধ্যেই আমাদের সব সমস্যার সমাধান নিহিত আছে।
গতকাল (শুক্রবার) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে দু’দিনব্যাপী ৭ম বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপুর্ণ সংলাপের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাম মাধব যিনি বিজেপি সমর্থক থিংক ট্যাংক ভারত ফাউন্ডেশনেরও একজন পরিচালক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনকে (দিল্লী) সঙ্গে নিয়ে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে দুই দিনব্যাপী এই সংলাপের আয়োজন করেছে। সংলাপে দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন, সংযোগ (কানেক্টিভিটি) এবং নিরাপত্তা- এই তিন বিষয়ে বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত বছরের শুরুর দিকে বিএনপির রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে ইঙ্গিত করে ভারতীয় এই নেতা গণতন্ত্রের নামে ধর্মঘট ও সহিংসতার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সুরক্ষার জন্য তিনি (শেখ হাসিনা) কী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছেন তা বেশ অনুমেয়। যেভাবে তিনি ওই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে গণতন্ত্রের সুরক্ষা করেছেন তা প্রশংসার দাবিদার।
বাংলাদেশে প্রথম সফরে এসেই রাম মাধব বলেন, ভারত বিশেষ প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিগ ব্রাদার (দাদা) নয় এবং সে দৃষ্টিতে দেখেও না। আমরা সহযোগী। আমরা উন্নতি, শান্তি ও সমৃদ্ধির অংশীদার।
সংলাপের উদ্বোধনী বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, কুমিল্লা-আগরতলা বিদ্যুৎ সঞ্চালন আগামী মাসেই শুরু হবে। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন থেকে বাংলাদেশকে পূর্বনির্ধারিত ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে ভারত। এ লক্ষ্যে ভারতীয় অংশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ভারতীয় অংশের বিদ্যুৎ লাইনে ৬৫টি টাওয়ার রয়েছে। ১৫ কিলোমিটার লাইনে টাওয়ারের নির্মাণ ও ওয়ারিংয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। আগামী মাসে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। এরপর ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংযোগ দিবে দেশটি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ-ত্রিপুরা বিদ্যুৎ লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ৬৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতীয় অংশে অর্থাৎ ত্রিপুরায় পড়েছে ১৭ কিলোমিটার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত শুধু প্রতিবেশীই নয় ভালো বন্ধুও। তিনি বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ব দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের মাধ্যমে জনসাধারণের জীবন মানের পরিবর্তন আসবে। তিনি আরো বলেন, দুই দেশের আন্তরিকতার কারণে সীমান্তে এখন শান্তি বিরাজ করছে। বাণিজ্যে তারা শুধু প্রতিবেশী নয়, বন্ধুসুলভ সর্ম্পক স্থাপনে সক্ষম হয়েছেন।
সংলাপের প্রথম দিনে গতকাল আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাতারে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
আজ সংলাপের সমাপনী অনুষ্ঠান একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিজেপি সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল নিয়ে এ সংলাপে অংশ নিতে এসেছেন। যে প্রতিনিধিদলে রয়েছেন, সাবেক কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং ভারত-বাংলাদেশে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে তিনি বেশ সুরক্ষিত করেছেন যা বেশ প্রশংসিত।
মাধব গত বছর বাংলাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের গণতন্ত্রের নামে করা সাধারণ ধর্মঘট ও সহিংসতার সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গণতন্ত্রই হলো সব সমস্যার উত্তর।
গতবছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের আগে সর্বশেষ ভারত-বাংলাদেশ সংলাপের আয়োজন করা হয়েছিল। মোদির ওই সফর শেষে যৌথ ঘোষণায় এসেছিল দুই দেশের সম্পর্কে নতুন সূচনার প্রতিশ্রুতি। মাধব বলেন, সেই ঘোষণাকে এগিয়ে নিতেই তার ঢাকায় আসা।
উল্লেখ্য, দুইদিনব্যাপী ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংলাপের সপ্তম পর্বে দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন, আঞ্চলিক সংযোগ, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য পানি ও জ্বালানি নিরাপত্তা, আন্তঃসংযোগ এবং দ্বিপাক্ষিক বিষয়টি পর্যালোচিত হবে। এতে অংশ নেবেন দুই দেশের মন্ত্রী, অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী নেতা ও জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারা।
 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী লীগের পাশেই আছি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ