Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পণ্যে পাটের মোড়ক নিশ্চিতে বিশেষ অভিযান শুরু আজ

| প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


অমান্য করলে ঋণ সুবিধা বাতিলের হুমকি পাট প্রতিমন্ত্রীর
স্টাফ রিপোর্টার : সতেরটি পণ্য সংরক্ষণ ও পরিবহনে পাটের মোড়ক (বস্তা বা ব্যাগ) ব্যবহার না করলে ঋণ সুবিধা বাতিল করা হবে। পাটের মোড়ক (বস্তা বা ব্যাগ) ব্যবহার নিশ্চিত করতে  আজ  সোমবার  থেকে সারাদেশে বিশেষ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। গতকাল সচিবাল মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ বাস্তবায়ন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মির্জা আজম বলেন, অভিযান সফল করতে পাট অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের সব দফতরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। পাট মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন অমান্যকারীদের শাস্তি দেওয়াই হচ্ছে এ সব অভিযানের মূল বিষয়। তবে হাইকোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে সরকার আপিলও করেছে। রবিবারের মধ্যেই আদালতের ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে । তা না হলে সাধারণ আইন অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিমন্ত্রী  বলেন, আজ সোমবার  থেকে সড়ক, মহাসড়কে ১৭টি পণ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও বিতরণ এলাকা এবং ঢাকাসহ সারাদেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০ এর অধীনে গঠিত পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বিধিমালা, ২০১৩ অনুযায়ী এতদিন ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি পরিবহনে পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ছিল। বিধিমালার তফসিলে আরও ১১টি পণ্য যুক্ত করে ২১ জানুয়ারি গেজেট জারি করে সরকার। সেই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুড়া।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইন সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হলে প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে। স্থানীয় বাজারে পাট ও পাটজাতপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, পাট চাষীদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে এবং সর্বোপরি পাটের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ পাটশিল্প রক্ষা পাবে। মির্জা আজম বলেন, পাটে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন অনুযায়ী পাটের মোড়ক ব্যবহার না করে কৃত্রিম মোড়ক দিয়ে পণ্য (আপাতত ১৭টি) মোড়কজাতকরণ, বিক্রয়, বিতরণ বা সরবরাহ করলে বা করার অনুমতি দিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডিত হতে হবেন। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ডে দন্ডিত করা হবে। হাইকোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। এ অবস্থায় কীভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যতটুকু তথ্য তাতে আজকের দিনের মধ্যে সেটা হয়তো স্থগিত হয়ে যাবে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক। আজকের মধ্যে যদি কিছু না নয়, আমাদের সাধারণ আইনে অধীনে যতটুকু সম্ভব অভিযান পরিচালনা করব। এই আইনে (বাধ্যতামূলক) যা আছে সেই অনুযায়ী আমরা আইনী পদক্ষেপ নেব। প্রশাসের নেতৃত্বে যারা আছেন, পাট অধিদফতরের কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা আছেন, জেলা প্রশাসন আছে তাদের মাধ্যমেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত পণ্যে আমদানি বা রফতানিকালে পাটের  মোড়ক না থাকলে আইআরসি (আমদানি নিবন্ধন সনদ) ও ইআরসি (রফতানি নিবন্ধন সনদ) বাতিল করার শর্ত দেয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী জানান, খাদ্য মন্ত্রণালয় চাতাল মিল মালিকদের পাটের ব্যাগে মোড়কীকরণ না করলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করবে বলে নির্দেশনা জারি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে, ব্যবসায়ীরা ১৭টি পণ্য মোড়কীকরণে পাটের বস্তা ব্যবহার না করলে ঋণ সুবিধা বাতিল করা হবে।
মির্জা আজম বলেন,অভিযান সফল করতে পাট অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের সব দফতরে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। পাট মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদিত পাটের ৯০ ভাগ রফতানি হয়, ১০ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহৃত হয়। কোন দেশের অবস্থা ভাল থাকলে পাট রফতানি হয়, সেখানে অর্থনৈতিক মন্দাভাব দেখা দিলে রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। পাট রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের কৃষকদের মুখে হাসি থাকে না। পাট শ্রমিকদের মুখে হাসি থাকে না। মালিকরা মিল বন্ধ করে দেন।  পাটের অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বাড়াতে পারলে পাটের এ রফতানি নির্ভরতা থাকবে না। ১৭টি পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশে উৎপাদন করা পাটের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পাট অভ্যন্তরীণভাবে ব্যবহার বৃদ্ধি করতে পারব। এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য, পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক মোছলেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ জুট মিল এসোসিয়েশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ