পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দু’সপ্তাহেও গ্রেফতার হয়নি ধর্ষকরা
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোড ব্যাংক গলির সেলিম গাজীর বাড়ীতে দাওয়াত দিয়ে এনে নবমুসলিম গৃহবধু (২৫) কে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত ১ মে রাতের এ ঘটনার পরদিন খুলনা সদর থানায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মামলা করলেও গত দুই সপ্তাহে গ্রেফতার হয়নি ধর্ষকরা। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে ভুক্তভোগীর সাথে ঘটনাটির দফারফা করতে চেষ্টা করছে তারা।
আপোষে ব্যর্থ হওয়ায় গত শনিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি থেকে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলে ধর্ষিত গৃহবধুকে মামলা তুলে নেবার হুমকি ধর্ষকরা।
মামলায় মূল অভিযুক্ত নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোড ব্যাংক গলির মো: সেলিম গাজী (২৫), অন্যান্য আসামীরা হল নতুন বাজার মসজিদ গলির মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আবুল বাশার বাদশা ওরফে রাঙ্গা বাদশা (৫০), টুটপাড়া দিলখোলা রোডের নুরুল্লার ছেলে মো: বাবু ওরফে কালা বাবু (৩১), নতুন বাজার লঞ্চঘাটের মোঃ সোহরাব মোল্লার ছেলে মোঃ দুলু (২৩) সহ অজ্ঞাত আরো ২/৩জন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নগরীর নতুন বাজার স্ট্যান্ড রোডের ব্যাংক গলির ভাড়াটিয়া মো: সেলিম গাজীর (২৫) বাসায় দাওয়াত পেয়ে বেড়াতে এসেছিলেন স্বামীর সাথে ওই নবমুসলিম গৃহবধু। কয়রা উপজেলার জায়গীরমহল এলাকার মোঃ আব্দুল মালেক গাজীর ছেলে সেলিম গাজী ধর্ষিতার স্বামীর খালাতো ভগ্নিপতি। গত ১ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেড়াতে আসলে সেলিম গাজী অন্য আসামীদের সহযোগিতায় কৌশলে স্বামী ও গৃহবধুকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তারা। সেলিম গাজী অন্যদের সহায়তায় জোরপূর্বক স্বামী-স্ত্রীকে নেশাজাতীয় ওষুধ সেবন করিয়ে দেয়। কিছু সময়ের মধ্যে স্বামী ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর সেলিম গাজী গৃহবধুকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। নেশাজাতীয় ওষুধ সেবনের ফলে শারিরিকভাবে ভারসাম্যহীন থাকায় তাদের কার্যকলাপের কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি গৃহবধু। ধর্ষনের পর স্বামী-স্ত্রীকে ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে চলে যায় তারা। পরদিন ২ মে বিকেল ৫টার দিকে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে স্থানীয় পূর্বপরিচিত একজনকে মোবাইলে ডাকেন; তার সাথে স্থানীয়রা এসে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী ফার্মেসীতে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার ব্যাপক অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাদের। ওইদিন কিছুটা চেতনা ফিরে পেলে খুলনা সদর থানায় মামলা করেন (যার নং-০৬, ০২-৫-১৭ইং) ধর্ষিতা। এদিকে প্রচুর রক্তক্ষরণ চলতে থাকায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি হন তিনি। গত শনিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন; তবে বন্ধ হয়নি রক্তক্ষরণ!
গতকাল রবিবার বিকালে এ প্রতিবেদককে ভুক্তভোগী বলেন, “আমার শরীরটা এখনো খুব খারাপ। রক্তক্ষরণ হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে নরপিচাশদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারলো না! ওরা আমার কাছে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমি তাদের বলে দিয়েছি-আমার তো আর হারাবার কিছুই নেই, টাকা দিয়ে কি করবো। পুলিশ যেনো টাকা খেয়ে মামলাটি ধামাচাপা না দেয়; সে জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
মামলা সম্পর্কে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মিজানুর রহমান বলেন, “ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে। কয়েকবার অভিযান চালিয়েও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নই উঠে না।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, এজাহার হাতে পেয়েই অভিযানে গিয়েছিলাম, সেই থেকে অভিযান অব্যাহত আছে। এখনো তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ধরনের মামলা অর্থের বিনিময়ে মীমাংসার সুযোগ নেই। পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অবান্তর। তবে গত শনিবার শুনেছিলাম ওরা দুই পক্ষ এক জায়গায় বসে মীমাংসার চেষ্টা করছে। এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে কাউকে পায়নি। আসামীদের গ্রেফতারে দেশের অন্যান্য থানাতে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে এ ধরণের ঘটনার খবর জানে না খুলনার মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, এধরণের কোন খবর তো জানতে পারিনি। দেখি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আছে নাকি এমন খবর?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।