পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়া সদরের মহাস্থান ধাওয়াকোলা গ্রামের হিন্দু অধ্যুসিত কর্মকার পল্লী থেকে এক যৌথ হিন্দু পরিবারের দু’জন গৃহবধূ দীপালী ও তপতী রানীকে অসহায়ভাবে ফেলে গোপনে ভারতে পালিয়ে যাওয়া রাজ্য চন্দ্র ও বাবলু চন্দ্র কর্মকার ভ্রাতৃদ্বয় শিলিগুঁড়ি জেলার ‘ফাঁসি দেয়া’ থানা পুলিশের হাতে তাদের বাবা-মা ও আরেক ভাইসহ আটক হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে তাদের ভারতে আটকের খবরে ধাওয়াকোলা গ্রামের মানুষ উল্লসিত হয়ে মিষ্টি বিতরণ করলেও একই খবরে দীপালী ও তপতী রানী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে দ্রুততম সময়ে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়ে বলেছে, ‘আমাদের স্বামীরা আমাদের সাথে বেঈমানী করলেও বাচ্চাদের নিয়ে আমরা এখনও ঘর-সংসার করতে রাজী আছি।’
উল্লেখ্য, বগুড়ার মহাস্থান এলাকার ধাওয়াকোলা গ্রামের কর্মকারপাড়া হিন্দু পল্লীর রাজ্য চন্দ্র কর্মকার তার স্ত্রী দীপালীকে (৩০) কিছু না জানিয়ে তার ২ কন্যা রিংকি (৮) ও টুসু (৪) ও তার ভাই বাবলু তার স্ত্রী তপতীকে (২৫) অন্ধকারে রেখে তার কন্যা পিংকি (৫) কে নিয়ে গোপনে ভারতে চলে যায়। যাওয়ার আগে তারা তাদের বাড়ি-ঘর ও দোকান বিক্রি কর দেয়। যাওয়ার সময় তারা তাদের বাবা কালিচরণ এবং মা কাঞ্চি রানীকেও সাথে নিয়ে যায়। ২৬ তারিখে তারা সীমান্ত পথে ভারতের শিলিগুঁড়িতে প্রবেশের আগে মোবাইল ফোনে দীপালী ও তপতীকে ফোনে জানিয়ে দেয়, তারা এখন থেকে ভারতেই বসবাস করবে। পাশাপাশি তারা জানিয়ে দেয় যে যেহেতু ভারতেই তাদের থাকতে হবে সেহেতু তারা নতুন করে বিয়ে শাদী করে ঘর-সংসার করবে, অতএব, দীপালী ও তপতীকে এটা মেনে নিয়ে নিজেদের পথ নিজেদেরই বেছে নিতে হবে। এই খবরে দীপালী ও তপতী দু’চোখে অন্ধকার দেখে আত্মীয়-স্বজনের দারস্থ হয়। আত্মীয়দের পরামর্শে তারা এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের স্বামীদের বেঈমানী ও বিশ্বাস ঘাতকতার বিষয়টি তুলে ধরে তাদের স্বামীদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানায়। সংবাদ সম্মেলনের সূত্রে এই সংবাদটি দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পাতায় ছাপা হয়। এরপর গতকাল ৩ মার্চ দৈনিক ইনকিলাবে এসংক্রান্ত আরেকটি ফলোআপ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যেখানে ধাওয়াকোলা পল্লীর হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সব মানুষই স্ত্রীদের অসহায়ভাবে ফেলে রেখে গোপনে রাজ্য ও বাবলু চন্দ্র ভাইদ্বয়ের অমানবিক কাজের নিন্দা জানায় এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনেরও ঘোষণা দেয়।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দীপালী রানীর আত্মীয়দের কাছে খবর আসে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে দুপুরেই শিলিগুঁড়ির ‘ফাঁসি দেয়া’ থানার পুলিশ রাজ্য ও বাবলু চন্দ্র কর্মকার ভ্রাতৃদ্বয়, তাদের বাবা কালিচরণ মা কাঞ্চি রানী ও তাদের আরেক ভাই ও ভাই বউসহ ৬ জনকে আটক করেছে। পাশাপাশি রাজ্য চন্দ্রের শিশু কন্যা রিংকি ও টুসু এবং বাবলু চন্দ্রের কন্যা পিংকিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। ইনকিলাবের পক্ষ খেকে শিলিগুঁড়িতে বসবাসকারী বেশ কয়েকজনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে এই আটকের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
খবরটি সন্ধ্যার পরপরই ধাওয়াকোলা গ্রামে জানাজানি হলে সেখানে উল্লসিত মানুষেরা মিষ্টি ও মহাস্থানের কটকটি বিতরণ করেছে পাশাপশি তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে নিজ নিজ স্বামীদের গ্রেফতারের সংবাদ শোনার পর থেকেই দীপালী ও তপতী রানী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে তাদের স্বামী ও সন্তানদের ফিরিয়ে আনতে বলছে, ‘আমাদের স্বামীরা যত অপরাধই করুক না কেন আমরা সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে তারে ক্ষমা করতে রাজী আছি। আমরা শুধু তাদের ফেরত চাই।’ এদিকে এসংক্রান্ত সংবাদ ও ফলোআপ সংবাদ দৈনিক ইনকিলাবে গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হওয়ায় শিলিগুঁড়ি পুলিশের টনক নড়েছে বলে জানিয়েছেন দীপালী রানীর পরিবার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।