Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে খালেদা জিয়া

দিনব্যাপী বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সেমিনার

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দলোনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দাবি করেন, দেশে এখন সুশাসন ও আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। আমরা জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে ‘গণতন্ত্র’ ফিরিয়ে আনবো। তবে, আমরা জানি এ লড়াই কঠিন লড়াই। সরকার প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সকলপ্রকার বিরোধী মত দমনে উন্মত্ত হয়ে উঠেছে। এ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে ‘বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ও আমাদের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল সকাল ১০টায় এই সেমিনার শুরু হয়। প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। ওই  সশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাপনী সেশনে সাবেক  প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও তার অনুপস্থিতির কারণে এতে সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া করেন, পরীক্ষায় পাসের হার বাড়িয়ে শিক্ষার মানের অবনতি ঘটাচ্ছে সরকার। বর্তমান সরকার শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্যকে পদদলিত করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে এমন শিক্ষানীতি বর্জন করা হবে। তিনি বলেন, আমি শিক্ষাবিদ নই কিন্তু বিভিন্ন মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে দেখেছি শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন পরিবর্তন প্রয়োজন যা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে প্রতিফলিত করবে। শিক্ষার সুফল সব মানুষের জীবনে পৌঁছাবে। শিক্ষা হবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে উন্নত জাতি হিসেবে আমাদের পরিচিতি ও মাধ্যম। শুধু সীমিত লোকের অর্থ ও বিত্ত দিয়ে আমরা এই পরিচিতি অর্জন করতে পারব না।
সেমিনারে নিজের ভাষণে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, শিক্ষা খাতের মত অন্যান্য খাতেও সরকার সুশাসন ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অবস্থার অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ক্ষমতাসীন সরকার সকল বিরোধীমতকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য উন্মুক্ত হয়ে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। প্রতিষ্ঠা করব মানুষের অধিকার।
তিনি বলেন, এই লড়াই কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। যে জাতি লড়াই করে স্বাধীন হয়েছে, তাদের কাছে এ লড়াই কোনো কঠিন লড়াই নয়।
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষাখাতে মানের অবনতি ঘটেছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, আত্মতুষ্টির জন্য পাসের হার বাড়ানোয় আমাদের শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঘটেছে। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামী দিনে আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যহত হবে। আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব।
বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থায় এগিয়ে যাওয়ার দাবিকে অসাঢ় বলেও দাবি করেন বিএনপি প্রধান। শিক্ষা মানুষকে গণতন্ত্রের প্রতি, ভিন্নমতের প্রতি, ভিন্নমত প্রকাশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার দাবি করলেও দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করেছে। বিরোধীমতের লোকজনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। মোদ্দাকথা শিক্ষার সকল উদ্দেশ্য আজ ভুলণ্ঠিত।
শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিএনপির নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা আছে বলেও জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, আমরা এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলব, যাতে শিক্ষা শুধু ডিগ্রি অর্জনের হাতিয়ার হবে না, হবে জীবনে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার হাতিয়ার।
বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের পরিচালনায় দিনভর এই সেমিনারে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিএনপিপন্থি শিক্ষক নেতারা। সেমিনারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের সহশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হেলেন  জেরিন খান।
পুরো সেমিনারে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পাঁচটি প্রবন্ধ পাঠ হয়। এই নিবন্ধগুলো উপস্থাপন করেন ড. মাহবুব উল্লাহ, ড. আ ফ ম ইউসূফ হায়দার, ড. সিরাজুল ইসলাম, ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ড. সাব্বির মোস্তফা।
সেমিনারে ৪টি অধিবেশনে (১) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা (২) শিক্ষার বিভিন্ন ধারা (৩) উচ্চ ও প্রাগ্রসর শিক্ষা (৪) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিষয়গুলোর ওপর দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
এ অনুষ্ঠানে সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের ৩০০ শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়।



 

Show all comments
  • জেসমিন ১৪ মে, ২০১৭, ১২:৫৭ পিএম says : 0
    আন্দোলন করার জন্য তো আপনাদেরকে মাঠে নামতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সুজন ১৪ মে, ২০১৭, ১২:৫৮ পিএম says : 0
    ঘরে বসে বা সাংবাদিক সম্মেলন করে কী আন্দোলন হয় ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ