পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৫ গ্রামের কম হলেও খাওয়া হচ্ছে ৭ দশমিক ৮ গ্রাম অধিকাংশ ব্রেডেই বেশি লবণ দেয়া হচ্ছে
হাসান সোহেল : মানুষের প্রতিদিনকার খাবারের অন্যতম নাম লবণ। খাবারকে সু-স্বাদু রূপ দেয় এই লবণ। অথচ অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে দেশের মানুষের মধ্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি। দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই লবণ খাওয়ার প্রবণতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। আর তাই দেশে প্রতিদিনই উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদরোগের ঝুঁিক বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্রারিক্ত লবণ খাওয়ার কারনে দেশে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ অসংক্রামক রোগের ঝুঁিক বাড়ছে। এক্ষেত্রে সচেতনতায় গুরুত্বারোপ করেছেন তাঁরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের মানুষ প্রতিদিন ৭ দশমিক ৮ গ্রাম লবণ খাচ্ছে। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, এই পরিমাণ কোনভাবেই ৫ গ্রামের বেশি হবে না। এক্ষেত্রে নারীদের মধ্যে লবণ খাওয়ার প্রবণতা পুরুষের চেয়ে বেশি বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে- নারীদের শরীরে পটাশিয়ামের চেয়ে ক্ষতিকর সোডিয়ামের পরিমাণ অনেক বেশি। সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের অনুপাত হলো- ৫ ও ২। অপরদিকে পুরুষের ৪ ও ৬। এছাড়া গবেষণায় উঠে এসেছে- মানুষের মধ্যে দোকান থেকে বিভিন্ন ব্রান্ডের ব্রেড ক্রয়ের চাহিদা বেড়েছে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া ১০টি ব্রান্ডের ব্রেড ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে- ৭টিতেই অতিরিক্ত লবণ দেয়া হচ্ছে। যা বুঝে হোক, না বুঝে হোক প্রতিনিয়ত দেশের মানুষ খাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, মানুষের শরীরে সোডিয়ামের পরিমান বেশি হলে উচ্চ রক্তচাপের সৃষ্টি হয়। দেশে নারীদের মধ্যে লবণ খাওয়ার প্রবণতা বেশি। যে কারণে তারা উচ্চ রক্তচাপে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি জানান, একজন মানুষ প্রতিদিন কি পরিমাণ লবণ খাচ্ছেন, যা পরিমাণে সঠিক কিনা তা পরিমাপের সুযোগ নেই। একই সঙ্গে মানুষ এ বিষয়ে সচেতনও নয়। অথচ অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি।
সূত্র মতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী সম্প্রতি দেশের মানুষের মধ্যে লবণ খাওয়ার প্রবণতা নিয়ে একটি গবেষণা করে। এতে গ্রাম পর্যায়ের ১০০জন নারী (৬০) ও পুরুষের (৪০) ইউরিনারী সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করা হয়। যার মাধ্যমে একজন মানুষ ২৪ ঘন্টায় কতটুকু লবণ খেয়েছে তা পরীক্ষা করা হয়। যাতে দেখা যায়, বিশ্ব সংস্থার পরিমাপ অনুযায়ী ৫ গ্রামের নিচে হলেও দেশের মানুষ ৭দশমিক ৮গ্রাম লবণ খাচ্ছে। যে কারনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ অসংক্রামক রোগের ঝুঁিক বেশি বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ‘ডাইয়েটারি সল্ট ইনটেক ইন আরবান পপুলেশন লিভিং ইন এ ¯øাম অফ ঢাকা, বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক এই গবেষণা করেছেন বিএসএমএমইউ’র শিক্ষার্থী ডা. ফাহমিদা আফরোজ খান।
এছাড়া বিভিন্ন দোকান থেকে জনপ্রিয় এমন ১০টি ব্রেড নিয়ে ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে- যার ৭টিতেই অতিরিক্ত লবণ দেয়া হচ্ছে। ‘সোডিয়াম কনটেন্ট অফ ব্রান্ডেড ব্রেডস এ্যাভাইলাবল ইন দি মার্কেট অফ ঢাকা সিটি, বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই গবেষণাটি করেছেন বিএসএমএমইউ’র শিক্ষার্থী ডা. মোহাম্মদ রাশিদুল আলম।
এদিকে আগামীকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত ‘লবণ খাওয়ার স্বাস্থ্যগত ঝুঁিক বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের ঝুঁিক’ নিয়ে গবেষণা ফলাফল প্রকাশ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কামরুল হাসান খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে ‘কারেন্ট এভিডেন্স অন সল্ট ইনটেক এ্যাস রিচ ফ্যাক্টর ফর এনসিডি (নন কমিউনিকেবল ডিজিজেস)’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।