পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর বনানীতে জন্মদিনের পার্টিতে ‘গণধর্ষণে’র ঘটনা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামীরা বিত্তশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় নেপথ্যে ভিন্ন কোনো কারণ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার ৪০ দিন পর ‘গণধর্ষণের’ অভিযোগ এনে কেনো মামলা দায়ের করা হলো, এর পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ আছে কিনা তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে ভিকটিমদের জিজ্ঞাসা করা হবে। অভিযুক্তদের সাথে ভিকটিমদের সম্পর্কের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি শেখ নাজমুল আলম গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, বনানীতে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত আসামীরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অন্যদিকে, এতদিন পর ধর্ষণের অভিযোগ মানতে নারাজ অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেছেন, বিশেষ উদ্দেশ্যে ‘ধর্ষণ’ মামলাটি করা হয়েছে। অভিযোগকারী তরুণীরা স্বেচ্ছায় গভীর রাতে সেই হোটেলে গেছে। সেখানে অনৈতিক কিছু হয়ে থাকলে তা ছেলেমেয়ে উভয়ের সম্মতিতেই হয়েছে। এ কারণে ধর্ষণের অভিযোগ তারা মোটেও আমলে নিতে চান না। ধর্ষণ মামলার এক নম্বর আসামির বাবা জুয়েলারি ব্যবসায়ী দিলদার আহমেদ সেলিম দাবি করেছেন, তার ছেলে নিরপরাধ। ছেলেকে বø্যাকমেইল করতেই এই মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ধর্ষণ হলে নিশ্চয়ই তারা মামলা করার জন্য ৪০ দিন অপেক্ষা করতো না। রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় যাদেরকে আসামী করা হয়েছে তাদের মধ্যে তিনজনই প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। ঘটনার ৪০দিন পর তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার শিকার দুই তরুণী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা সেদিন রাতে স্বেচ্ছায় জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দেয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এক শিক্ষার্থীর মা স্বীকার করেছেন, তার মেয়ে জন্মদিনের পার্টিতে যোগ দিতে যাওয়ার সময় বলেই গেছে সে রাতে আর ফিরবে না। অনেকেরই প্রশ্ন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এটা কি কোনো অভিভাবক মেনে নিবেন? একজন তরুণী কোথায় রাত কাটাবে, কাদের সাথে জন্মদিন করবে তা না জেনে মা কীভাবে তাকে একা ছাড়লেন? এ প্রসঙ্গে তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, পুরো ঘটনাই রহস্যজনক। আমাদের সমাজে এমনটা তো সম্ভব নয়। ঘটনার পরদিন একজন ভিকটিম বাসায় ফিরেছে স্বাভাবিকভাবে। তার মাকে কিছুই জানায়নি। আসামীরা সবাই ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান-এজন্যই কি এতোদিন পরে মামলা? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটাও ভাববার বিষয়। এতবড় একটা ঘটনা তারপরেও মামলার জন্য কেনো ৪০ দিন সময় লাগলো তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধর্ষণের মতো স্পর্শকাতর ঘটনার আলামত এতোদিন থাকে না উল্লেখ করে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের একজন ডাক্তার বলেন, আমরা এখনও নিশ্চিত নই, এতোদিন পর কোনো আলামত স্পষ্ট হবে কি না। আলামত যদি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে মামলার মোটিভ নির্ভর করবে পুলিশি তদন্তের উপর।
ধর্ষণের মামলার ৫ আসামি হলো, সাফাত আহমেদ (২৬), নাঈম আশরাফ (৩০), সাদমান সাকিফ (২৪), গাড়ি চালক বিল্লাল (২৬) ও সাফাতের দেহরক্ষী। এদের মধ্যে নাঈম আশরাফ ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান ইমেকার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং অন্য আসামি সাফাতের বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম আপন জুয়েলার্সের মালিক। আসামী সাদমান সাকিফ গুলশানের তেজগাঁও লিংক রোডে রহমান রেগুনাম সেন্টারে পিকাসো রেস্টুরেন্টের মালিকের ছেলে। সাফাতের বাবা দিলদার আহমেদ অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনার নেপথ্যে সাফাতের প্রথম স্ত্রী পিয়াসার হাত আছে। তার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য পিয়াসাই তার পূর্ব পরিচিত দুই তরুণীকে দিয়ে এই মামলা করিয়েছে। এ কারণে মামলা করার সময় পিয়াসাও বনানী থানায় উপস্থিত ছিল। জানা গেছে, ২ বছর আগে সাফাত প্রেম করে গোপনে বিয়ে করে মডেল পিয়াসাকে। সাফাতের পরিবার সেই বিয়ে মেনে না নেয়ায় দুই মাস আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সেই থেকে পিয়াসা সাফাতকে নানাভাবে বø্যাকমেইলিং করার চেষ্টা করছে বলে সাফাতের বাবার অভিযোগ। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বনানী থানার ওসি (তদন্ত) বলেন, এখনও কিছুই বলা যাচ্ছে না, তদন্ত চলছে, সময় হলে সবই জানতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।