পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সিটিজেন চার্টার বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সরকারী সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বিধান যুক্ত করে সরকারী কর্মচারী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রস্তাবিত বিধিমালাটি আগামী ১১ মে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন করা হতে পারে। সচিব কমিটির অনুমোদনের পর আইনের খসড়াটি আবারও মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে বিষয়টি এভাবেই বিভিন্ন কমিটিতে ঘুরপাক খাচ্ছে।তুবও চুরান্ত হচ্ছে না বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্মসচিব ইনকিলাবকে বলেন, মন্ত্রিসভার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সরকারী কর্মচারী আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিধিমালাটি আগামী ১১ মে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপন হচ্ছে। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য যে কোন সময় তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।
২০০৬ সাল থেকে এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর দু’দফায় সরকার বদলের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। আইনের খসড়া নিয়ে দফায় দফায় ধারা-উপধারা সংশোধন করা হয়। কমিটি গঠন,সুপারিশ প্রণয়নসহ নানা পর্যায়ে কাজ হয়। পরে সে গুলো মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়। এসব করতে করতে কয়েক বছর পার হয়েছে। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুমোদন পর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি। তারও প্রায় এক বছর পর ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই প্রস্তাবিত খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এ সময় আইনের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়। তা পূরণ করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গত বছর ২৪ নবেম্বর মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হলে তা ফেরত পাঠানো হয়। মন্ত্রিসভা বলেছে, এটা (সরকারী কর্মচারী আইন) ছিল ১৬ ধারার ছোট আইন। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর এটা ৭১টি ধারার অনেক বড় আইন হয়ে গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে,মন্ত্রিসভার পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল-বিদ্যমান খসড়াটিতে এমন কিছু বিষয় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে, যা সচিব কমিটি ও মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের সময় ছিল না। এতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। কাজেই এটি ফের সচিব কমিটির অনুমোদনের পর মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করতে হবে। এরপর থেকেই আইনের খসড়ায় দফায় দফায় নতুন ধারা-উপধারা সংশোধন করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ কমিটি এ লক্ষ্যে কাজ করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ইতোমধ্যে খসড়াটি চূড়ান্ত হয়েছে। প্রস্তবিত আইনের খসড়ায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সিটিজেন চার্টার বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সরকারী সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ নামে নতুন অধ্যায় যোগ হয়েছে। এতে ৭১টি ধারা বদলে ৬৬টি করা হয়েছে। এ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য খসড়াটি ফের প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে দেয়া পর্যবেক্ষণ পূরণ করতে গত বছরের এপ্রিলে খসড়াটি নিয়ে যৌথভাবে কাজ শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(বিধি) আবদুল হাকিমকে প্রধান করে আবারও একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দ্য সার্ভিস (রিঅর্গানাইজেশন এ্যান্ড কনডিশন) এ্যাক্ট-১৯৭৫, দ্য পাবলিক সার্ভেন্টস (ডিসমিজল অন কনভিকশন) অরডিন্যান্স-১৯৮৫সহ বিদ্যমান ৪৬টি আইন, বিধিমালা, অনুশাসন ও আদেশাবলীর প্রয়োজনীয় ধারা প্রস্তাবিত আইনে অন্তর্ভুক্ত করে। বর্তমান প্রস্তাবিত খসড়াটি কাটছাঁটের মাধ্যমে ছোট করা হয়েছে। সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতার করতে পারবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আইনটিতে দুদককে এমন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এর আগে সরকারী কর্মচারী আইনের যে খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে তাতে দুদক আইনটি কিছুটা খর্ব করা হয়। খসড়ায় বলা হয়েছিল, সরকারী দায়িত্ব পালন-সংক্রান্ত কোন মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা হওয়ার আগে কাউকে গ্রেফতার করতে চাইলে সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দফতরের অনুমতি নিতে হবে। এ নিয়ে অনেক বিতর্কের পর আইন মন্ত্রণালয় খসড়া আইনটি পরিবর্তনের পক্ষে মত দেয়। সে অনুযায়ী খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের নিয়োগ, কর্মসম্পাদন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে একটি আইন প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও ৪৫ বছর ধরে এ ধরনের কোন পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণীত হয়নি। এতদিন আইন ছাড়াই বিধি ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে গণকর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ, নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতি হচ্ছিল। বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও নানা জটিলতার কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, ২০০৬ সালে ‘সিভিল সার্ভিস আইন’ নামে গণকর্মচারীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় বিএনপি সরকার। কিন্তু এ সংক্রান্ত কয়েকটি বৈঠক করা হলেও কোন খসড়া করে যেতে পারেনি তারা। ওয়ান-ইলেভেনের পর এ উদ্যোগ জোরালো হয়ে ওঠে। ড. ফখরুদ্দীন-মঈন উদ্দিন আহমদের তত্ত¡াবধায়ক সরকার আইনটির একটি খসড়া তৈরি করলেও নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে তা পাস করার জন্য রেখে যায়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসে। পরে ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় সিভিল সার্ভিস আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত করে। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের করা খসড়াকে যুগোপযোগী ও গ্রহণযোগ্য করতে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে জনপ্রশাসন) তৎকালীন যুগ্ম সচিব (বিধি) মোঃ ফিরোজ মিয়ার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি উপকমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে খসড়া চূড়ান্ত করে ২০১১ সালের মার্চে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে মতামত দিতেও সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।