Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুবি’র ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের টাকা বন্টনে অসংগতির অভিযোগে

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


শিক্ষকদের ক্ষোভ
কুবি সংবাদদাতা : গত ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের টাকা বন্টনে নানা অসংগতির  অভিযোগ উঠেছে। টাকা বন্টনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে ‘বি’ ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিক অনুষদ এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কয়েকজন শিক্ষক ভর্তি পরীক্ষার টাকা বন্টন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ‘বি’ ইউনিটের আটটি বিভাগের সভাপতির সাথে অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্য বন্টনকৃত টাকার ব্যবধান প্রায় ৩৫ হাজার করে। ‘এ’ ইউনিটে বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফরম বেশি বিক্রি হলেও যেখানে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগসমূহের সভাপতির সাথে অন্যান্য শিক্ষকদের বন্টনকৃত টাকার ব্যবধান ১৪ থেকে ১৫ হাজার বলে নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধান ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আবু তাহের। অনুরূপভাবে ‘সি’ ইউনিটে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের বিভাগসমূহের সভাপতির সাথে অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে বন্টনকৃত টাকার ব্যবধান ‘এ’ ইউনিটের সমান বলে জানান ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ড. আহসান উল্যাহ।
‘বি’ ইউনিটের টাকা বন্টনের টেবুলেশন সীটে দেখা যায়, একটি বিভাগের সভাপতি পেয়েছেন প্রায় ৭৯ হাজার টাকা এবং একই বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরা পেয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার টাকা করে। এছাড়াও প্রশ্নপত্র স্ট্যাপলিং এবং প্যাকেটিং নামের খাতে কোন টাকা উল্লেখ নেই। ফলে শিক্ষকরা ধারণা করছেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের টাকার পরিমান বেড়ে যাবে বলে এ খাতের টাকা টেবুলেশন সীটে উল্লেখ করা হয়নি। এক সূত্রে জানা যায়, প্রশ্নপত্র স্ট্যাপলিং ও প্যাকেটিং এর জন্য ‘বি’ ইউনিটের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা প্রায় ১৪ হাজার করে টাকা পেলেও সীটে হিসাব দেখানো হয়নি। যেখানে অন্যান্য ইউনিট স্টাপলিং খাতের কাজের জন্য প্রত্যেককে প্রায় ৬ হাজার টাকা দিয়েছে। এছাড়াও অর্থ কমিটি থাকার পরও সম্মানী বিতরণ কমিটি নামে আরেকটি খাত তৈরি করে পছন্দের ব্যক্তিদের বেশি টাকা করে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী শিক্ষকরা। এদিকে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং পরীক্ষার কেন্দ্রে পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা স্বত্বেও নিজের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক মঞ্জুর মোরশেদ। কয়েকবার ‘বি’ অনুষদের আহবায়ক এম এম শরীফুল করীম এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করলেও তাকে টাকা দেওয়া হয়নি বলে জানান মঞ্জুর মোরশেদ।
এদিকে কর্মচারীদের মধ্যে টাকা বন্টন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার পর মঙ্গলবার তাদের টাকা বৃদ্ধি করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভর্তি পরীক্ষার টাকা বন্টনে অসমতা থাকায় কর্মকর্তারা ভাগের টাকা নেননি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ভর্তির টাকা  শিক্ষক, কর্মকর্তাদের মাঝে এভাবে অসমবন্টন করে ক্ষোভের জায়গা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট অনুষদসমূহের কর্তাব্যক্তিরা। ভর্তি পরীক্ষার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে ব্যয় না করে শিক্ষকদের মাঝে বন্টনের ক্ষেত্রে অন্যান্য ইউনিটের তুলনায় ‘বি’ ইউনিটে এমন অসমতা কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্ন তোলেন শিক্ষকরা।
‘বি’ ইউনিটের অর্থ কমিটির আহŸায়ক ড. মো: জাকির ছায়াদউল্লাহ খান বলেন, ‘অর্থ কমিটি থাকার পরও সম্মানী বিতরণ কমিটি নামে খাত তৈরি করা হয়েছে তা ঠিক হয়নি। টাকা বন্টনে নির্দিষ্ট কোন নীতিমালা না থাকায় এমন সমস্যা হয়েছে ।’
ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের আহŸায়ক এম এম শরীফুল করীম বলেন, ‘সম্মানী বিতরণ কমিটি নামে যে খাতটা তৈরি করা হয়েছে সেখানে সামান্য কিছু টাকা দেয়া হয়। আর মঞ্জুর মোরশেদ পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন না। আর যদি থেকেও থাকেন তিনি আমাকে জানাননি। আর সকল বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে দ্রæত আলোচনা করা হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ