পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের স্বার্থ ও কল্যাণে হাওরকে আগামী ছয় মাসের জন্য দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওর অঞ্চল পরিদর্শন গতানুগতিক তৎপরতা দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করে দলমত নির্বিশেষে সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বিএনপি প্রধান। গতকাল রোববার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, বিলম্বে হলেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের খবরে সকলে কিছুটা আশান্বিত হয়েছিলেন। যেভাবেই হয়ে থাকুন না কেন, তিনি এখন ক্ষমতার চেয়ারে আসীন। সেই হিসেবে দুর্যোগ মোকাবিলার প্রধান দায়িত্ব মূলত তারই। তাছাড়া একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের মানুষের চরম দুর্দশা তার অন্তর স্পর্শ করবে, এই ধারণা থেকে আমাদেরও আশা ছিল, হাওর এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি হয়তো ঐ এলাকাকে ‘দুর্গত অঞ্চল’ ঘোষণা করবেন।
খালেদা জিয়া বলেন, দুঃখের বিষয়, সে আশা পূরণ হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তার গতানুগতিক তৎপরতা দেখে ও বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে, তিনি পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করেননি, বা স্বীকার করতে চাননি।
হাওর অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আগাম বন্যায় ব্যাপক শস্যহানিসহ গবাদিপশু, মাছ, জলজ প্রাণী এবং অন্যান্য সম্পদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে সহায়-সম্বল হারিয়ে সেখানে এক অকল্পনীয় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। রোগে-শোকে, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে মানুষ এক অবর্ণনীয় দুর্দশায় জীবন কাটাচ্ছে। তাদের কষ্ট বর্ণনার অতীত।
বিএনপি দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহস যুগিয়েছে উল্লেখ করে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি প্রতিনিধিদল হাওর অঞ্চলে বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতির যে ভয়াবহ চিত্র দেখেছেন, তার আলোকেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণার আহ্বান জানাই। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, মানবিক বিবেচনা থেকেই এ আহ্বান জানানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় ক্ষমতাসীনরা এ দাবি প্রত্যাখান করেন। আরো দুঃখের বিষয় হচ্ছে, তাদেরকে তুষ্ট করার জন্য একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে বলেন যে, কোনো এলাকার অন্ত:তপক্ষে অর্ধেকসংখ্যক লোকের দুর্যোগে মৃত্যু না হলে সে এলাকাকে ‘দুর্গত অঞ্চল’ ঘোষণার নিয়ম নেই।”
তিনি আরো বলেন, দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী খনি থেকে ইউরেনিয়াম মিশ্রিত পানির দূষণে জলজপ্রাণীর মৃত্যুর ব্যাপারে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরকে খন্ডন করাই একসময় ক্ষমতাসীনদের কাছে ত্রাণ তৎপরতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
হাওর অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য প্রাকৃতিক বিরূপতার পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের অপকর্ম, দুর্নীতি ও ব্যর্থতাও দায়ী বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।
পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে কেন আগে থেকে সতর্ক করা হলো না- সেই প্রশ্ন তুলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ সম্পর্ক স্থাপনের কথা প্রচার করা হয়। তা সত্তে¡ও পাহাড়ি ঢলের তথ্য যথাসময়ে কেন পাওয়া গেল না?
হাওরের বিপর্যয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের বিদেশ সফর করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা সরকারের কাছে জানতে চান বিএনপি প্রধান।
তিনি বলেন, সবার আশা ছিল ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার বদলে শেখ হাসিনার বক্তব্যে প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়ার গতানুগতিক আশ্বাস মানুষকে হতাশ করেছে।
সরকারের ত্রাণ তৎপরতায় ‘দুর্নীতি, অনিয়ম, ও দলীয়করণের যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রতিকার করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে নতুন ফসল না আসা পর্যন্ত হাওরের ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসহায়তা দেয়ার দাবি জানান তিনি।
বিএনপি নেত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি কৃষি ঋণের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ এবং সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত করাসহ ক্ষতিপূরণ ও বিনাসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
হাওরের শস্য, মৎস্যসম্পদ, গবাদিপশু ও অন্যান্য জলজপ্রাণীর যে বিপুল হানির ঘটনাতে জাতীয় বিপর্যয় অভিহিত করে জাতীয়পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। দলমত নির্বিশেষে সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শুভেচ্ছা
মহান মে দিবসে শ্রমজীবী মানুষদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল টুইট বার্তায় তিনি বলেন, দেশে এক নিবর্তনমূলক পরিবেশে এসেছে মহান মে দিবস। সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে আসুন আবারও জাতীয় মুক্তির শপথ নেই।
দিবসটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে দেয়া বাণীতে তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের ঘামেই বিশ্ব সভ্যতার বিকাশ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। শ্রমিকের অবদানে বিশ্ব অর্থনীতি চাঙ্গা হলেও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তারা নিপীড়িত হয়ে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৮৮৬ সালের মে মাসে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হে মার্কেটে জীবনদানকারী এবং এই আন্দোলনের জন্য ফাঁসিকাষ্ঠে প্রাণদানকারী প্রতিবাদী শ্রমিকদের স্মৃতির প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানার বিএনপি প্রধান।
শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিএনপি আপোষহীন সংগ্রাম করছে বলেও জানান দলটির চেয়ারপার্সন।
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায় এবং তা রক্ষায় আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে কখনোই পিছপা হইনি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ব ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি ভাবতেন। শ্রমজীবী ও পরিশ্রমী মানুষের কল্যাণে তিনি যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
শ্রমিকের কল্যাণে অতীতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সার্বিক কল্যাণের লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা আগামীতেও অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। মহান মে দিবসের সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
অপর এক বাণীতে মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ও বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তাদের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।