পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নরসিংদী থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নরসিংদীর মাটি আবারো মানুষের রক্তে রঞ্জিত হতে শুরু করেছে। মাত্র ৯ ঘণ্টার ব্যবধানে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ৪ জন আদমসন্তান। গত বুধবার সন্ধ্যায় শহরের ভাগদী মহল্লায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা আরিফ খন্দকার ও খোকন খন্দকার নামে দুই চাচাতো ভাইকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। এই হত্যাকা-ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ৯ ঘণ্টার মধ্যে ৩ ব্যক্তিকে গুলি করেছে। এদের মধ্যে জহিুরুল হক (২৫) ও রাকিব (২৪) নামে ২ জন মারা গেছে। সংকটাপন্ন অবস্থায় হোসেন আলী (২২) নামে গুলিবিদ্ধ আরেকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এতগুলো মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় নরসিংদী শহরের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় শহরের মানুষ সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন গুজরান করছে। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্য দিবালোকে শহর এলাকার পুরানপাড়া গ্রামে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা জায়েদুল নামে এক যুবককে বীভৎসভাবে কুপিয়ে ও শ্বাসনালী কেটে হত্যা করেছে। একইসময়ে কুপিয়ে আহত করেছে মিতু ও জয় নামে দুই যুবক যুবতীকে।
জানা গেছে নরসিংদী শহরের ভাগদী মহল্লার নিহত আরিফ খোকনের নিকটাত্মীয় রফিকুল ইসলাম খন্দকার একই মহল্লায় একটি বাড়ী নির্মাণের কাজে হাত দেয়। এর পর থেকেই এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজরা তার নিকট মোটা অংকের চাঁদা দাবী করতে থাকে। গত বুধবার সন্ধায় তারা রফিকুল ইসলামের নিকট থেকে চাঁদা নিতে আসলে রফিক, আরিফ ও খোকনকে খবর দেয়। তারা খবর পেয়ে দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে পিছু হটতে থাকে। এক পর্যায়ে আরিফ ও খোকন তাদের পিছু নিলে বাড়ীর অদূরে গিয়ে সন্ত্রাসীরা দুজনকে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার পর খোকনের ছোটভাই সেলিম খন্দকার বাদী হয়ে জহিরুল, রাকিব ও হোসেন আলী সহ ১৪ জনকে আসামী করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় দুটি হত্যা ও অস্ত্র আইনের মামলা দায়ের করে।
পুলিশ রাতেই আসামীদেরকে গ্রেফতার করার জন্য অভিযান শুরু করে। গোপন সূত্রে খবর পায় যে, হত্যাকারীরা ইউএমসি জুট মিল সংলগ্ন একটি বালুর মাঠে আড্ডা দিচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী তারা রাত ৩টার দিকে আসামীদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে সন্ত্রাসীরা অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষন করতে থাকে। এই অবস্থায় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দু’পক্ষের মধ্যে বন্দুক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পারস্পরিক গুলি বিণিময়ের এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী জহিরুল, রাকিব ও হোসেন আলী গুলিবিদ্ধ হয়ে গ্রেফতার হয়। পুলিশ গ্রেফতারকৃত ৩ জনের নিকট থেকে দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল ও দুইটি চাপাতি উদ্ধার করে। পরে গুলিবিদ্ধ আহত ৩ জনকে রাতেই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার জহিরুলকে মৃত ঘোষণা করে। পরে সংকটাপন্ন অবস্থায় রাকিব ও হোসেন আলীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে নিয়ে যাবার সময় পথিমধ্যে মারা যায় রাকিব। হোসেন আলীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে পুলিশের গুলিতে নিহত জহিরুলের বাড়ী নরসিংদী শহরের নাগরিয়া কান্দি এলাকায়। তার পিতার নাম ইউসুফ আলী। মাতা জায়েদা বেগম ইউএমসি জুট মিলের স্থায়ী শ্রমিক। রাকিবের বুকে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিহত রাকিব গাজীপুর জেলার টঙ্গীর সাইদুল ইসলামের পুত্র। তার বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হাসান আলী সুনামগঞ্জ জেলার আব্দুল জব্বারের পুত্র। তার ডান উরু ও হাটুর নীচে দুটি গুলি বিদ্ধ হয়। পুলিশের ভাষ্যমতে তারা পেশাদার চাঁদাবাজ ও অস্ত্রবাজ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তবে তাদের পিছনে প্রভাবশালী কারো মদদ থাকতে পারে বলে ধারনা করছে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।