পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। এর বাস্তবায়নে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরস-এর প্রথম সভায় এ তথ্য জানানো হয়। পিপিপি বোর্ড অব গভর্নরস-এর চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বিগত কয়েক বছরে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব বা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ও অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয় সভায়। কার্যক্ষমতা ভাগ ও সাংগঠনিক কাঠামো, অংশীদার নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাবনা আসে সভায়। এছাড়া কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
সভায় জানানো হয়, পিপিপি পাইপলাইনে বিভিন্ন খাতের ৪৩টি প্রকল্প রয়েছে। যার বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আসবে। বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়ন, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন এবং চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাব্য সময় ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য পরিমাণের কথা তুলে ধরে সভায় আরও জানানো হয়, ৬ প্রকল্পের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পিপিপি কারিগরি তহবিলের ৭৭ কোটি টাকা ব্যয় করে ১৮টি প্রকল্পের সম্ভব্যতা সমীক্ষা করা হয়েছে যেখানে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আসবে। ১১টি প্রকল্পে বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগ আসবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়াও ১০ টি প্রকল্প সম্ভাব্যতা সমীক্ষা যাচাই পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ হবে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বোর্ড অব গভর্নরস-এর এই সভায় কার্যক্ষমতা ভাগ করে পলিসি ইস্যুগুলো বোর্ড অব গভর্নরস-এর চেয়ারপার্সন হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে, কার্যক্রম গতিশীল ও প্রকল্প বাস্তবায়নের বাধাসমূহ নিরসনের দায়িত্ব পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং অপারেশনাল দায়িত্ব দেওয়া হয় পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে। সভায় বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য একটি যুগোপযোগী গাইডলাইন তৈরি, পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম গতিশীল এবং সমৃদ্ধ করতে প্রস্তাবিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন, পিপিপি তহবিল পরিচালনা পদ্ধতি নির্ধারণ ও ক্ষমতা অর্পণ এবং প্রস্তাবিত তহবিল পরিচালন পদ্ধতি অনুমোদনের প্রস্তাব করা হয়।
পিপিপিতে সরকারি সংস্থায় প্রস্তাবিত প্রকল্প ছাড়াও ‘আনসলিসাইটেড’ প্রস্তাবসমূহ চিহ্নিত করার সুবিধার্থে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত একটি ‘আনসলিসাইটেড’ প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ গাইডলাইন পর্যালোচনা করা হয় সভায়। গাইডলাইনটি অনুমোদিত হলে ‘আনসলিসাইটেড’ প্রকল্প চিহ্নিতকরণ ও প্রক্রিয়াকরণ সহজতর হবে এবং এ জাতীয় প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। পিপিপি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দ্রæত বাংলাদেশকে উন্নত করতে চাই। শুধু সরকার এটা করতে পারবে না। এজন্য আমাদের পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ দরকার। উদাহরণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কোরিয়ার উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অবদানের কথা তুলে ধরেন। পিপিপি’র ধারণাকে মাথায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন তিনি।
রাশিয়া বাংলাদেশের যে কোনো উন্নয়ন কর্মকান্ডে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত -বিদায়ী রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত
রাশিয়া বাংলাদেশের যে কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার এ নিকোলায়েভ বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারকরণে ‘আন্তঃরাষ্ট্রীয় কমিশন’ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাতে এ কথা বলেন। সাক্ষাতের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বাংলাদেশে বিগত চার বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে সহযোগিতার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই সময়ে বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাশিয়া সফরের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, সেই সফরের ফলে বাংলাদেশ রাশিয়ার সম্পর্কের ভিত আরো মজবুত হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দিনকে দিন আরো এগিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ায় বাংলাদেশ ফেস্টিভালের কথা স্মরণ করে নিকোলায়েভ দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যকার বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্যে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানে মোটামুটি সমতা বজায় রয়েছে।বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সাফল্যে নিকোলায়েভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দনও জানান।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সা¤প্রতিক প্রসার এবং আরো স¤প্রসারণে রাশিয়ার আগ্রহে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারণে অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুিক্তযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়ার ভূমিকা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের পর চট্টগ্রাম বন্দরকে মাইনমুক্ত করে চালুর উদ্যোগ গ্রহণে রাশিয়ার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতাকারীদের কথা আমরা সব সময়ে স্মরণ করি।
প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ সব সময়ই এই সম্পর্ককে মূল্য দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাশিয়ার কাছ থেকে সবসময়ই প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেয়ে আসছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করার মাধ্যমে এই সৌহার্দ্যরে বন্ধনকে আমরা এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে রাশিয়ার অব্যাহত সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী দূতকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকেও শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অভিনেতা ফরিদ আলীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান ঃ
চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা ফরিদ আলীর পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে ফরিদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। অনুদানের টাকা দিয়ে ফরিদ আলীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার কিনতে স্বজনদের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
ফরিদ আলী দীর্ঘদিন হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। স¤প্রতি পরিবার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে অসমর্থ বলে পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার ব্যয়ভার নেন এবং চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করান। তিনি আগের চেয়ে অনেকটাই সুস্থ আছেন।
একইসময় প্রধানমন্ত্রী হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম কাতুল শাহরিয়ার চৌধুরী ও লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম মোর্শেদ কামাল তালুকদারের পরিবারের সদস্যদেরও অনুদান দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।