পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৩ শতাংশের বেশি নারী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবে বলে দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষিত আসন নয়, নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ দেখতে চায় বিএনপি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ‘রাজনৈতিক সংলাপ ও সংস্কার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রæতি দেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতারা। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডি.আই.) ‘গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও সংস্কার’ (ডিপিআর) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দকে অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতি প্রদান করেছে। একই সাথে পাঁচ বছর মেয়াদী নতুন আরেকটি প্রকল্প ‘স্ট্রেনথদেনিং পলিটিকাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’(এসপিএল) এর উদ্বোধন ও এর ক্ষেত্র ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। ডিপিআর ও এসপিএল উভয় কার্যক্রমই ইউএসএআইডি ও ইউকেএইডের যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত। এ অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক অঙ্গনের সফল যুব ও নারী নেতৃবৃন্দকে তাদের রাজনৈতিক অর্জনের জন্য “চ্যাম্পিয়নস অফ ডেমোক্রেসি” সম্মাননা দেয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর জেলা পর্যায়ের নির্বাচিত নেতৃবৃন্দকেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং নারী ও যুব নেতাদের ক্ষমতায়িত করার জন্য এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এইচ টি ইমাম বলেন, আগামী নির্বাচনে কেবল ৩৩ শতাংশ কেন, আমি আশা করছি আরো বেশি নারী নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারীরা বেশি পরিমাণে ভর্তি হচ্ছে। ছেলেদের চেয়ে তারা ভালো করছে। তারা যদি উপযুক্ত হয়, ভালো কাজ করে, দক্ষতা দেখায়, দেশপ্রেম থাকে, তাহলে তাকে কেন মূল্যায়ন করা হবে না? যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন নারী এমপির উদাহরণ টেনে এইচ টি ইমাম বলেন, আমাদের এখানে নারীরা সংখ্যায় কম হলেও, ওজনে কিন্তু অনেক ভারী। বর্তমান সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন করেছে। তিনি বলেন, আমরা তো তাদের খোঁজ নিই। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, তারা ছেলেদের চেয়ে অনেক ভালো করছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আরো বলেন, ডিআই থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুব ও নারী নেতৃবৃন্দ দলের জন্য আগের থেকে অনেক বেশি অবদান রাখতে পারছে এবং তাদের অনেকেই দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে চলে এসেছে। বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য সংরক্ষিত আসন নয়, নারীদের সরাসরি নির্বাচনে আসতে হবে। ডিআই-এর চিফ অব পার্টি কেটি ক্রোক বলেন, জনসম্পৃক্ত ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর অভাবনীয় অগ্রগতি সাধনে আমি খুবই গর্বিত। আমাদের নতুন প্রকল্প এসপিএল এই অগ্রগতি চলমান রাখবে বলে আমি রোমাঞ্চিত। ২০০৯ সালের আরপিও’র ৯০-এর খ (২) অনুচ্ছেদে, কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ সদস্যপদ নারী সদস্যদের জন্যে সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং এই লক্ষ্যমাত্রা পর্যায়ক্রমে আগামী ২০২০ সাল নাগাদ অর্জন করার কথা বলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি,বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গেøাবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট, ড. বদিউল আলম মজুমদার।
অনুষ্ঠানে ডিআই-এর নতুন প্রকল্প ‘স্ট্রেনথদেনিং পলিটিকাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’ (এসপিএল) এর উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এই প্রকল্প পূর্ববর্তী ডিপিআর প্রকল্পের ভিত্তিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমÐলে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণমূলক সংস্কৃতির বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিগত ছয় বছরে ডিপিআর কার্যক্রমের মাধ্যমে ডি.আই. বাংলাদেশের ৬২ টি জেলায় ২,৫০,০০০ এরও বেশি তৃণমূল রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও সংস্কার কর্মকাÐে যুক্ত করেছে। ডি.আই-এর ‘নারীর জয়ে সবার জয়’ নেটওয়ার্ক এ সারা দেশের ৩০ হাজারেরও বেশি নারী নেতৃবৃন্দ যুক্ত ও তাদের মধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি নারী রাজনৈতিক দলসমূহের মূল কমিটিগুলোতে ইতিমধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশ থেকে ২০৭ জন যুব নেতা ডিআই -এর “ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম থেকে চার মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ডিআই ফেলোরা ১৫ হাজারেরও বেশি তৃণমূলের যুব রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং তাদের সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে সংযুক্ত করেছে। ইউএসএআইডি সম্পর্কে বলা হয়েছে. ১৯৭১ সাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত ইউএসএআইডি-এর মাধ্যমে মার্কিন সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য ৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা প্রদান করেছে। ২০১৬ সালে ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা প্রদান করেছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও এর চর্চা, পরিবেশের সুরক্ষা, এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাজ্য বিভিন্ন দেশে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান এবং গণতন্ত্র সহায়ক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখার মাধ্যমে সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছে। তারা বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনের (ইইউ, এইউ, ওএসসিই, দি কাউন্সিল অভ ইউরোপ এন্ড দি কমনওয়েল্থ) গণতন্ত্র বিষয়ক কাজকে বেগবান করতে ভূমিকা রাখছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।