পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সতর্ক সঙ্কেত সত্তে¡ও চলছে লঞ্চ-ট্রলার
আবু হেনা মুক্তি : খুলনাঞ্চলের নৌ-যাত্রীরা রয়েছেন ঝুঁকির মুখে। কারণ, বৈশাখের শুরুতেই প্রতিদিনই ঝড়ঝাপটা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ গত দু’দিন ঝড়-বৃষ্টি খুলনাঞ্চলে আছড়ে পড়ে।
লন্ডভন্ড করে দেয় উপক‚লের ছাপড়া ঘরবাড়ি আবাসস্থল ও রবি ফসলাদি। বিশেষ করে ইরি ধানের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। ক্ষণে ক্ষণে প্রচন্ড খরার পর এবার মৌসুমে বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের সংখ্যা বেশি হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর আভাস দিয়েছে। নদ-নদী ক্রমেই উত্তাল হচ্ছে। নদীবন্দরে যে কোনো মুহূর্তে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে। আগামী এক-দুই মাস প্রায়ই এরকম ঘটনা ঘটবে। আশঙ্কা সত্তে¡ও খুলনাঞ্চলের লঞ্চযাত্রীদের অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে নদীপথে চলাচল করতে হচ্ছে। এই নৌ-রুটে চলাচলকারী অধিকাংশ লঞ্চের নেই কোনো ফিটনেস সার্টিফিকেট। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্তি যাত্রী, অনভিজ্ঞ মাস্টার ও প্রচলিত নিয়ম-কানুনের কোনো বালাই নেই এসব লঞ্চে। ফলে যে কোনো সময় লঞ্চ দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতি বছর লঞ্চডুবির ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবুও নিয়ম-নীতি মানছে না কেউ। কখনো রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়, আবার কখনো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে অনিয়মগুলো নিয়মের মতোই চলছে। স¤প্রতি কয়েকটি নৌ-ট্র্যাজিডির পরও কর্তৃপক্ষের যেন কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। নেই দুর্ঘটনা রোধে কোনো পদক্ষেপ।
সূত্র মতে, এ অঞ্চলে চলাচলকারী লঞ্চগুলোর মধ্যে অধিকাংশ লঞ্চের ফিটনেস নেই। নেই রুট পারমিটও। অধিকাংশ লঞ্চই অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রী বহন করে। অনেক সময় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করে। তা ছাড়া এসব লঞ্চে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপক সামগ্রী, লাইফবয়া, ইকোসাইন্ডার, বসার বেঞ্চ নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে এসব লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিচ্ছে। ফলে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
সূত্র জানায়, খুলনা থেকে মুন্সিগঞ্জে, মংলা, মদিনাবাদ ভায়া কালাবগী, ঘড়িলাল, নীলা ডুমুর, আংটিহারা, জোড়শিং, কপোতাক্ষ, আশাশুনি প্রভৃতি রুটে প্রায় অর্ধ শতাধিক লঞ্চ চলাচল করে। এ লঞ্চগুলোর অধিকাংশই ফিটনেস সার্টিফিকেট বা রুট পারমিট নেই। দুই-তিনটি লঞ্চ ছাড়া সবগুলোরই ডিজাইন ও ইঞ্জিন ত্রæটিপূর্ণ।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, খুলনাঞ্চলে চলাচলকারী অর্ধ শতাধিক লঞ্চের মধ্যে মাত্র ২০টি লঞ্চের ফিটনেস সার্টিফিকেট বা রুট পারমিট আছে। বাকিগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে মোটা অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে চলাচল করে। এসব লঞ্চ মালিকদের কাছে যাত্রীদের নিরাপত্তা বা দুর্যোগ মোকাবেলার বিষয়টি দারুণভাবে উপেক্ষিত। এ সকল বিষয়গুলো তারা আমলে আনে না বললেই চলে।
নিয়মানুযায়ী প্রতি আটজন যাত্রীর জন্য একটি করে লাইফবয়া থাকার কথা থাকলেও কোনো লঞ্চেই তা নেই। লঞ্চে যে বয়াগুলো আছে, তার অর্ধেকের বেশি ব্যবহারের অনুপযোগী। কেবলমাত্র লোক দেখানোর জন্য এই বয়াগুলো রাখা হয়েছে। লঞ্চগুলোতে পানি মাপার যন্ত্র ইকোসাউন্ডার নেই। ফলে নদীপথের চর, ডুবোচর এলাকা অতিক্রমকালে শত শত যাত্রীকে মাস্টারের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরশীল হতে হয়। ইকোসাউন্ডার না থাকায় যাত্রীবোঝাই লঞ্চ মাঝে মাঝে চরে আটকে যায় এবং দুর্ঘটনা কবলিত হয়।
জরুরি অবস্থায় যোগাযোগের জন্য লঞ্চলগুলোতে কোনো রাডার বা ওয়াকিটকি নেই। সে কারণে দুর্ঘটনা কবলিত হলেও লঞ্চ থেকে সাহায্য চেয়ে কোনো বার্তা পাঠানো যায় না। তবে যে সকল স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্ক রয়েছে, সেখানে এই সমস্যা নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একেবারে উদাসীন। অধিকাংশ লঞ্চই ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল ও যাত্রী বহন করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। সব লঞ্চেই ব্যবহার করা হয় ম্যানুয়াল হুইল, ঝড়-বৃষ্টির সময়ে এই হুইল সামলাতে একাধিক লোক দরকার হয়। লঞ্চে হাইড্রোলিক হুইল ব্যবহারের নিময় থাকলেও ব্যয়বহুল বলে তা ব্যবহার করা হয় না। তা ছাড়া লঞ্চের ছাদে যাত্রী নেয়া দÐনীয় অপরাধ। কিন্তু অধিকাংশ লঞ্চের ছাদে যাত্রী থাকে। লঞ্চে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাবারের ব্যবস্থা নেই। আবহাওয়ার (বিপদজনক) সঙ্কেত থাকলেও লঞ্চ চালক সেদিকে দ্রæক্ষেপ না করে ইচ্ছামতো লঞ্চ ছাড়ে। ফলে দুর্ঘটনারকবলিত হয়ে অনেক যাত্রী প্রাণ হারান। কিন্তু এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব ভ‚মিকা পালন করছে।
সূত্র মতে, খুলনার অদূরে মংলা বন্দরকে ঝড়-বৃষ্টির সময় প্রায়ই ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়। এমনকি গত দু’দিন ধরেই চলছে এই সঙ্কেত। কিন্তু এই সঙ্কেতের মধ্য দিয়েও সংশ্লিষ্ট রুটে লঞ্চ ও যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচল করে। ফলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।